ঢাকা : আজ আবার এসেছে ঈদ বাঁকা চাঁদের পিঠে চড়ে । চারদিকে বেজে উঠেছে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সেই আনন্দগীতি- ‘রমজানের ঐ রোজার শেষে এল খুশীর ঈদ’। এক মাস সিয়াম-সাধনা শেষে পবিত্র ঈদুল ফিতরের আনন্দ অনুরণিত হচ্ছে সবার মনে।
ঘরে ঘরে চলছে ফিরনি-পায়েসের আয়োজন। মেহেদিতে হাত রাঙিয়েছে কিশোরী-তরুণীরা। সকালে নতুন জামা-জুতো-টুপি পরে সদলে ছুটবে সবাই ঈদগাহ কিংবা মসজিদের দিকে। ইতিমধ্যে ঈদের জামাতের জন্য সব আয়োজন সম্পন্ন হয়েছে ঈদগাহ ও মসজিদগুলোতে।
আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে রাজধানীতে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় ঈদগাহে সকাল সাড়ে আটটায়। এখানে নামাজ আদায় করবেন রাষ্ট্রপতি, বিচারপতিরা, মন্ত্রিপরিষদের সদস্যরা, মুসলিম বিশ্বের কূটনীতিকরাসহ সর্বস্তরের মানুষ। জাতীয় ঈদগাহে নারীদের জন্যও আলাদা নামাজের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
তবে আবহাওয়া অনুকূলে না থাকলে ঈদের প্রধান জামাত সকাল নয়টায় অনুষ্ঠিত হবে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে।
প্রতিবছরের মতো এবারও কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়ায় দেশের সর্ববৃহৎ ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। ইতিমধ্যে সেখানে ঈদ জামাতের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, বিরোধীদলীয় নেতা রওশন এরশাদ ও বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বাণী দিয়েছেন।
এদিন রাষ্ট্রপতি বঙ্গভবনে, প্রধানমন্ত্রী গণভবনে এবং বিএনপির চেয়ারপারসন বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বিদেশি কূটনীতিকসহ সর্বস্তরের মানুষের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন।
ঈদের দীর্ঘ ছুটি পেয়ে গত শুক্রবার থেকেই মানুষ নাড়ির টানে বাড়ির দিকে ছুটেছে। এখন রাজধানী ঢাকা অনেকটা ফাঁকা। এ এক অন্য ঢাকা। কোলাহলহীন, যানজটমুক্ত।
বনানীর ঢাকাগেট থেকে বঙ্গভবন পর্যন্ত প্রধান সড়ক ও সড়কদ্বীপগুলো জাতীয় পতাকা এবং বাংলা ও আরবিতে ঈদ মোবারক লেখা ব্যানার ও ফেস্টুন দিয়ে শোভিত করা হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ সরকারি-বেসরকারি ভবন সাজানো হয়েছে নানা আলোকমালায়।
ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বাংলাদেশ বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বেসরকারি টিভি চ্যানেলগুলো, বেতার ও বেসরকারি এফএম রেডিও স্টেশনগুলো বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার করবে। বেসরকারি স্যাটেলাইট টিভি চ্যানেলগুলো ঈদ উপলক্ষে টানা সাত দিন বিশেষ অনুষ্ঠানমালা সম্প্রচারের ঘোষণা দিয়েছে।
ঈদের দিন দেশের বিভিন্ন হাসপাতাল, কারাগার, সরকারি শিশুসদন, ছোটমণি নিবাস, সামাজিক প্রতিবন্ধী কেন্দ্র, আশ্রয়কেন্দ্র, ভবঘুরে কল্যাণ কেন্দ্র ও দুস্থ কল্যাণ কেন্দ্রে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হবে।
এ ছাড়া ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন স্থানে রাষ্ট্রীয় নীতির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ চলচ্চিত্র প্রদর্শন করা হবে। সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের বিনা টিকেটে উত্তর ও দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের আওতাধীন সব শিশুপার্কে প্রবেশের সুযোগ এবং নগরী জুড়ে বিনোদন ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এ ছাড়া রাজধানীসহ সারা দেশের বিনোদনকেন্দ্রগুলো সেজেছে নতুন সাজে। দর্শনার্থীদের জন্য সব প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে তারা।
পুলিশ প্রশাসন ঈদ উপলক্ষে মুসল্লিদের নিরাপত্তা এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে রাজধানীসহ সারা দেশে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে ।