ভোক্তা অধিকার সংস্থা ‘কনসাস কনজুমার্স সোসাইটি’ (সিসিএস) করোনাভাইরাস বা কোভিড-১৯ এর পরিপ্রেক্ষিতে দেশে উদ্ভুত সংকটকালে নিত্যপণ্যের দাম বাড়ানোর বিরুদ্ধে ভোক্তা অধিকার আইনে যথাযথ ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছে । এই সংকটকালে দ্রব্যমূল বাড়িয়ে দেয়া অমানবিক এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে মনে করে সংস্থাটি।
শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সিসিএসের নির্বাহী পরিচালক পলাশ মাহমুদ বলেন, ‘বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাসের এই মহাদুর্যোগে অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও লাখ লাখ মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছে। ঘরবন্দী নিত্য আয়ের মানুষ চরম বিপদে রয়েছেন। বহু পরিবারের খাদ্য সহায়তা প্রয়োজন। এমতাবস্থায় সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোগে ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান ত্রাণ সহায়তা দিচ্ছে। যা আমাদের জাতিগত মানবিকতার উদাহরণ। সিসিএস-ও তার ‘করোনায় স্বেচ্ছাসেবী’ প্লাটফর্মের মাধ্যমে দেশের প্রায় সব জেলা ও থানায় সেবামূলক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। স্বেচ্ছাসেবকরা ইতিমধ্যে প্রায় পাঁচ হাজার পরিবারে খাদ্য সহায়তা দিয়েছে।’
সিসিএস বলছে, কয়েকদিন ধরে গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হচ্ছে, অসহায় ও অভুক্ত মানুষকে খাদ্য সহায়তা দিতে বহু মানুষ নিত্যপণ্য কেনার এই সুযোগে কিছু ব্যবসায়ী পণ্যের দাম বাড়িয়েছেন। বিষয়টি চরম অমানবিক এবং মানুষের মৌলিক অধিকার পূরণে বাধা দেয়ার শামিল। এমন অপতৎপরতা রাষ্ট্রকে জিম্মি করার সমতুল্য। কতিপয় সুযোগ সন্ধানী ব্যবসায়ী দীর্ঘ দিন ধরে অজুহাত পেলেই রাষ্ট্র ও মানুষকে জিম্মি করার এ অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছেন।
নিত্যপণ্যের বাজার নিয়ন্ত্রণকারীরা আইনের ঊর্ধ্বে নয় উল্লেখ করে পলাশ মাহমুদ বলেন, মূল্য নিয়ন্ত্রণ ও ভোক্তা অধিকার সুরক্ষায় সরকারের একাধিক আইন রয়েছে। সিন্ডিকেটের কারসাজিকারীরাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক পদক্ষেপ দেখা যায় না। ফলে তারা রাষ্ট্রের আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে অনৈতিক মুনাফা অর্জন অব্যহত রাখে। করোনার মতো দুর্যোগের সময়ে যারা অনৈতিকভাবে পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি করেছে তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনি পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন।
আসছে রমজানে বাজার নিয়ন্ত্রণে এখনি সতর্ক হওয়ার তাগিদ দিয়ে সিসিএস এর নির্বাহী পরিচালক বলেন, করোনা পরিস্থিতির মধ্যে আসন্ন রমজান মাসে দ্রব্যমূল্য যেন লাগামছাড়া না হয়ে যায় সে জন্য এখনই ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন। ইতিমধ্যে যারা মূল্য বাড়িয়েছে তাদের বিরুদ্ধে কার্যকর ও দৃশ্যমান ব্যবস্থা না নিলে অন্যরাও এ অনৈতিকতায় উৎসাহিত হতে পারে এবং রমজানের বাজার নিয়ন্ত্রণহীন হয়ে পড়ার শঙ্কা রয়েছে।
তিনি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতি এবং রমজানকে সামনে রেখে ব্যবসায়ী সংগঠন, ভোক্তা সংগঠন ও সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্তৃপক্ষগুলোকে নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে দ্রব্য মূল্য স্থিতিশীল রাখতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় ও কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে হবে। বিগত সময়ের মতো এবার বাজার লাগামছাড়া হলে রমজানে দ্রব্যমূল্য মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যাওয়ার শঙ্কা রয়েছে। তাই কালক্ষেপণ না করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান জানাই।