লকডাউন হচ্ছে দেশের বিভিন্ন শহরসহ ব্যাংক। প্রতিদিন বাড়ছে করোনা ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা। এ অবস্থায়ও ব্যাংকে চলছে নিয়মিত লেনদেন। দীর্ঘ লাইন। ব্যাহত হচ্ছে সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার নির্দেশনা।
করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে দুই দফায় সাধারণ ছুটির মেয়াদ বাড়িয়েছে সরকার। গত ২৬শে মার্চ থেকে ১৪ই এপ্রিল পর্যন্ত ২০ দিনের সাধারণ ছুটি চলছে সারা দেশে। সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করার জন্য মাঠে নেমেছে বেসামরিক প্রশাসনের পাশাপাশি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সেনাবাহিনী। তবে জরুরি সেবার আওতায় সীমিত পরিসরে ব্যাংকিং সেবা চালু রাখা হয়েছে। সাধারণ ছুটির মধ্যেও ব্যাংকে গ্রাহকের ব্যাপক ভীড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
এ বিষয়ে অগ্রণী ব্যাংকের এক শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, করোনার কমিউনিটি ট্রান্সমিশনের বড় ঝুঁকিতে রয়েছে ব্যাংকগুলো। সাধারণ ছুটি চলাকালীন সময়ে ব্যাংক চালু রাখার সিদ্ধান্ত সরকারের সামাজিক দূরত্ব তৈরির পদক্ষেপের বড় অন্তরায় হয়ে দাড়াবে। ব্যাংক কর্মকর্তা ও গ্রাহকের সুরক্ষা বিবেচনায় ব্যাংকগুলোকেও সাধারণ ছুটির আওতায় নিয়ে আসার অনুরোধ জানান এই কর্মকর্তা।
সরজমিন দেখা গেছে, দেশে করোনা ভাইরাসের প্রকোপ বাড়লেও টাকা তুলতে ব্যাংকে ভীড় করছে সাধারণ মানুষ। মাসের শুরুর দিক হওয়ায় রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ব্যাংকের শাখায় উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এ ছাড়া লকডাউনের আশঙ্কা ও আতঙ্ক থেকেও ব্যাংক থেকে টাকা তোলার চাপ বেড়েছে ব্যাপকহারে। ফলে সাধারণ ছুটির মধ্যেও সীমিত আকারের ব্যাংকিং লেনদেনে গ্রাহকদের চাপ সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছেন ব্যাংকের কর্মকর্তারা।
এদিকে গত রোববার থেকে ব্যাংকগুলোতে লেনদেনের সময়সীমা বাড়িয়ে তিন ঘণ্টা করা হয়েছে। এই সময়ে বেশির ভাগ গ্রাহকই টাকা তুলতে আসছেন। বিশেষ করে মাসের প্রথম দিক হওয়ায় বেতন, সঞ্চয়পত্রের নগদায়ন ও মুনাফা উত্তোলন এবং সামাজিক নিরাপত্তার আওতায় বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধী ভাতা তোলার চাপ অনেক বেড়ে গেছে। বিশেষ করে সরকারি ব্যাংকগুলোর শাখাগুলোতে গ্রাহকদের চাপ বেশি দেখা যাচ্ছে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা তো দূরের কথা, উল্টো গা ঘেঁষাঘেঁষি করে দাঁড়াতে দেখা যাচ্ছে গ্রাহকদের। তবে সব শাখাতে এ দৃশ্য এক রকম নয়। তারপরেও দূরুত্ব না মানার কারণে সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
সোনালী ব্যাংকের এক কর্মকর্তা বলেন, সাধারণ ছুটির মধ্যেও আমাদের শাখাতে গ্রাহকদের ব্যাপক চাপ। বেশির ভাগই নগদ টাকা তুলছেন। রেমিট্যান্স তুলতে আসেন অনেকেই। কেউ কেউ এসেছেন ডিপিএসের টাকা জমা দিতে। গ্রাহকের এতটাই চাপ ছিল যে লাইনে এক ইঞ্চি ফাঁকাও ছিল না। আমরা তাদের সামাল দিতে রীতিমতো হিমশিম খেয়েছি।
ব্যাংক খোলা রাখা নিয়ে গত কয়েক দিন ধরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাংক কর্মকর্তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে আসছেন।
গ্রাহকদের ব্যাংকে উপস্থিতির কিছু স্থিরচিত্র আপলোড করে জনতা ব্যাংকের একজন কর্মকর্তা লিখেছেন, সীমিত ব্যাংকিংয়ের নমুনা।