ঢাকা : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জঙ্গি দমনে বন্ধুপ্রতিম দেশগুলোর সহযোগিতা চেয়েছেন । একই সঙ্গে তিনি বলেছেন, জঙ্গি প্রতিরোধে দেশে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
মঙ্গলবার সচিবালয়ের নিজ দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। গুলশানের স্প্যানিশ রেস্তোরাঁ হলি আর্টিজান বেকারিতে সন্ত্রাসী হামলার বিষয়ে সরকারের নেয়া পদক্ষেপ ও অবস্থান সম্পর্কে জানাতে সংবাদ সম্মেলনটি আয়োজিত হয়।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় হামলাকারীরা দেশের বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের সদস্য। দেশকে অস্থিতিশীল করতে অতীতের জঙ্গি হামলার ধারাবাহিকতায় গুলশানে এ হামলা হয়েছে। সংবাদ ব্রিফিংয়ে দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিও তুলে ধরেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, গত শুক্রবার সন্ধ্যার পর অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীরা এলোপাতাড়ি গুলি করতে করতে গুলশান-২ নম্বর সেক্টরে হলি আর্টিজান বেকারিতে প্রবেশ করে। প্রথমে টহল পুলিশ তাদের চ্যালেঞ্জ করে। পরে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ বিপুল সংখ্যক নিরাপত্তাকর্মী সেখানে হাজির হয়। সন্ত্রাসীরা তখন গ্রেনেড নিক্ষেপ ও গুলি করে। দেশের ভেতরে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি এ হামলার উদ্দেশ্য ছিল বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘জঙ্গি সংগঠনগুলো দেশের শিক্ষিত তরুণদের বিপথগামী করছে। তাই দেশের সর্বস্তরের জনগণকে সম্পৃক্ত করে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।’
তিনি জানান, রাজধানীর হলি আর্টিজান বেকারিতে কমান্ডো অভিযানে নিহত সন্ত্রাসীরা সবাই বাংলাদেশি। সংবাদ সম্মেলনে হামলার ঘটনার বিস্তারিত তুলে ধরে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তড়িৎ সিদ্ধান্তে পরিস্থিতি দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।
এ সময় মন্ত্রী জানান, হলি আর্টিজানে সন্ত্রাসীদের হাতে নিহতদের মধ্যে ৯ জন ইতালীয়, ৭ জন জাপানি, একজন ভারতীয়, দুই জন বাংলাদেশি এবং একজন বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত আমেরিকান। কমান্ডো অভিযানের মাধ্যমে ১৩ জনকে জিম্মি অবস্থা থেকে মুক্ত করা হয় বলে জানান তিনি।
আসাদুজ্জামান বলেন, যৌথ কমান্ডো অভিযানে ৬ সন্ত্রাসী নিহত হয়েছেন বলে প্রাথমিকভাবে মনে করা হয়। এদের মধ্যে ৫ জনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া গেছে। পরিবার তাদের শনাক্ত করেছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর লিখিত বক্তব্যের পর পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। তিনি বলেন, এ ঘটনায় বিদেশি রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক আরও সুদৃঢ হবে।
সংবাদ সম্মেলনে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ছাড়াও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম, ড. মো. মোজাম্মেল হক খান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব, এ কে এম শহীদুল হক আইজিপি, বেনজীর আহমেদ র্যাবের ডিজি, আছাদুজ্জামান মিয়া ডিএমপি কমিশনার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।