করোনাভাইরাস মোকাবিলায় পরিবহন বন্ধ রাখায় কর্মহীন ৯০ লাখ সড়ক ও নৌ শ্রমিকের পাশে দাঁড়াতে মালিক-শ্রমিক নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি।
মঙ্গলবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে সংগঠনের মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী এ আহ্বান জানান।
বিবৃতিতে বলা হয়, আমাদের দেশের সড়ক ও নৌ যোগাযোগ সেক্টরে সঠিক বেতন কাঠামো কার্যকর না থাকায় প্রায় ৯৮ শতাংশ পরিবহন শ্রমিক দৈনিক মজুরি বা ট্রিপ ভিত্তিক চাকরি করে থাকে। তাই তারা দৈনিক শ্রমিকের মতো দিনে আনে দিনে খায় ভিত্তিতে এই সেক্টরে কাজ করে থাকে। গত ২৬ মার্চ দেশে পরিবহন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ৭০ লাখ সড়ক পরিবহনের চালক-শ্রমিক ও ২০ লাখ নৌ পরিবহন শ্রমিক স্ত্রী-সন্তান নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে।
এমতাবস্থায় মানবিক সাহায্য নিয়ে এসব শ্রমিকদের পাশে দাঁড়াতে স্ব-স্ব পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সংগঠনসমূহের নেতাদের কাছে জোর দাবি জানান তিনি।
তিনি জানান, দেশে সড়ক ও নৌ যোগাযোগ সেক্টরে দৈনিক গড়ে প্রায় ৩ কোটি টাকার বেশী বৈধ-অবৈধ চাঁদা আদায় হয়। এ চাঁদা যেসব খাতে আদায় করা হয় তার মধ্যে আপদকালীন তহবিলে জমার নামেও শ্রমিকদের কাছ থেকে কিছু চাঁদার টাকা নেওয়া হয়। দীর্ঘদিন যাবত আদায়কৃত এসব চাঁদার টাকা দেশের সবচেয়ে বড় বৈশ্বিক মহামারি করোনায় লকডাউনে কর্মহীন শ্রমিকদের পরিবারের সাহায্যে এগিয়ে আসতে দেখা যাচ্ছে না। অথচ এই দুটি সেক্টরে মালিক ও শ্রমিক নেতাদের অনেকে অঢেল সম্পদের মালিক হওয়ার পাশাপাশি অনেকেই রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার অংশীদার হয়েছে। অনেকেই একটি বাস বা লঞ্চ থেকে আজ শত শত বাস-লঞ্চের মালিক। অনেক শ্রমিক নেতারা অসংখ্য পরিবহনের মালিক হলেও শ্রমিকদের এই ভয়াবহ দুর্দিনে কাউকে অসহায় পরিবহন শ্রমিকদের পাশে দাঁড়াতে দেখা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ তার।
বিবৃতিতে মোজাম্মেল হক চৌধুরী আরও দাবি করেন, দেশের অর্থনীতির লাইফ লাইন সচল রাখতে এসব পরিবহন শ্রমিকদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় এই দুর্যোগে শ্রমিকদের পাশে না দাঁড়ালে তারা কর্মহীন বা পেশা পরিবর্তনের সম্ভবনা রয়েছে। যা এই সেক্টর আগামী দিনে সচল করতে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করবে।