খালাতো বোনের স্বামীর কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় এক পোশাক কারখানার শ্রমিককে পুড়িয়ে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা এলাকায় । নিহতের নাম মাহিনুর বেগম।
শুক্রবার দুপুরে ঢাকা মেডিকেল শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তবে প্রধান অভিযুক্তকে এখনও আটক করতে পারেনি পুলিশ।
নিহত মাহিনুর বেগমের ফুফাতো ভাই মোহাম্মদ শামীম হোসেন ঢাকাটাইমসকে বলেন, গত ২২ মার্চ সন্ধ্যায় অফিস থেকে বাসায় আসছিল মাহিনুর। এ সময়ে গলির মধ্যে খালাতো বোনের স্বামী নুর ইসলাম, আল আমিন পাপন এবং রফিকসহ অজ্ঞাত সাতজন মিলে মাহিনুরের শরীরে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। ওইদিন রাতেই তাকে নারায়ণগঞ্জের একটি বেসরকারি হাসপাতালের ভর্তি করা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য পরের দিন দুপুরে তাকে ঢাকা মেডিকেলের শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটের নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (আইসিইউ) ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ দুপুরে তার মৃত্যু হয়।
ঢাকা মেডিকেলের শেখ হাসিনা বার্ন ইউনিটের নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের (আইসিইউ) কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, আগুনে মাহিনুরের শরীরের ৫৫ শতাংশ পুড়ে যায়।
মাহিনুর বেগমের ফুফাতো ভাই মোহাম্মদ শামীম হোসেন ঢাকাটাইমসকে বলেন, প্রায় ১২ বছর আগে মাহিনুরের স্বামী মারা যায়। আখিনুর নামের একটি মেয়েকে নিয়ে সে ফতুল্লার ইদ্রাকপুরের আলী আহমেদের টিনসেট বাসায় ভাড়া থাকত। তার মেয়ে আখিনুর স্থানীয় একটি কলেজে উচ্চ মাধ্যমিকে পড়ত। তবে লেখা পড়ার খরচ চালাতে না পারার কারণে প্রায় তিন মাস আগে আখিনুরের স্থানীয় এক মুদি দোকানের মালিকের সাথে বিয়ে হয়।
মাহিনুর বেগমের ফুফাতো ভাই মোহাম্মদ শামীম হোসেন বলেন, প্রায় দেড় বছর ধরে খালাতো বোন হাসিনা বেগমের স্বামী নুর ইসলাম মাহিনুরকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। এই প্রস্তাব প্রত্যখান করলে নুর ইসলাম তাকে শারীরিক সম্পর্কের প্রস্তাব দিতে থাকেন। এই প্রস্তাবেও রাজি না হওয়ায় ঘটনার কয়েকদিন আগে খালাতো বোন হাসিনা বেগম এসে তার স্বামীকে বিয়ে করার জন্য মাহিনুরকে বোঝাতে থাকেন। এই প্রস্তাবেও রাজি না হওয়ায় তারা পরিকল্পিতভাবেই মাহিনুরকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করে। এ ঘটনায় সাতজনের নাম উল্লেখ করে আখিনুর ফতুল্লা থানায় একটি মামলা করা হয়েছে।
নিহত মাহিনুর বেগম বরগুনার জেলার আমতলী থানার চালাভাঙ্গা গ্রামের মৃত আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী।
এ ব্যাপারে ফতুল্লা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আসলাম হোসেন বলেন, এ ঘটনায় আমরা চারজনকে আটক করেছি। তবে প্রধান অভিযুক্ত নুর ইসলামকে এখনও আটক করতে পারিনি। তবে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যেই তাকে আটক করা হবে।