লঞ্চ চলাচল বন্ধ মহামারি করোনা ভাইরাসের কারণে ব্যস্ততম বুড়িগঙ্গা নৌরুটে। তবে পণ্যবাহী ও জরুরি কাজে পারাপারের জন্য চালু রাখা হয়েছে নৌকা। করোনা আতঙ্কের আগে তেলঘাটে মাঝি ছিল ১শ’ ৮০ থেকে ২শ জনের মতো। বর্তমানে এখানে মাঝি আছেন প্রায় ৫০ জন। কোনো সাহায্য সহযোগিতাও দেয়নি তাদের। কিন্তু নৌকার মালিকদের দেয়ার কথা রয়েছে বলে জানা গেছে। মাঝি বাচ্চু মিয়া বলেন, ২০বছর ধরে নৌকা চালাই কখনো এমন অবস্থা দেখি নাই। জানি না কোনো বিপদ আইসে নাম শুনছি করোনা। কিন্তু কি করুম ঘরের মধ্য আরো ৭জন আছে আমি খাওন না নিলে ওরা খাইবো কি?
মাঝি রুবেল হাওলাদার বলেন, দিনে কামাই ২শ থেকে আড়াইশ টাকা এর মধ্যে মাস্ক একটা ৩৫টাকা দিয়া কিনছি।
জীবাণুনাশকের দাম আবার কত? মাঝি রহিম সরদার বলেন, দেশে পরিবার আছে ওগো টাকা পাঠানো লাগে, ঘর ভাড়াও দিতে হইব। নৌকা না চালাইলে টাকা পামু কই? তাদের সাথে কথা বলে আরো জানা যায়, ১০ দিনের সরকারি ছুটি ঘোষণার পর অধিকাংশ মাঝি গ্রামে চলে গেছে । প্রায় অর্ধশত মাঝি রয়ে গেছেন কারণ তারা গ্রামে গিয়ে কি করবে? তাদের নেই কোনো সঞ্চিত অর্থ যা দিয়ে তারা চলবেন। আর খেয়া পারাপার করছেন কারণ শ্যামবাজার নদী দিয়ে পার হলে কাছে হয় এবং খরচও কম হওয়ায় কেরানীগঞ্জ এর সবজি বিক্রেতারা কাঁচামাল কিনে খেয়া দিয়েই পারাপার হয়। কিন্তু প্রতিদিন শত শত সাধারণযাত্রী ঠাসাঠাসি করে নদী পার হচ্ছে। এ বিষয় জানতে চাইলে তারা বলেন, আমরা এই বিপদের সময়েও ভাড়া বাড়তি নেই না। বড় নৌকায় ৬ জন ৫টাকা করে আর রিজার্ভ গেলে ৩০টাকা আর ছোট নৌকায় ৩জন গেলে ৩০টাকা আর আর রিজার্ভ গেলে ২০টাকা। চলার পথে কারো দ্বারা সংক্রমণ হতে পারেন বললে তিনি জানান, আমরা দিনমজুর মানুষ পড়ালেখাও অত জানি না। এখন কাজ করতে না পারলে চলব কিভাবে?আর জীবাণুনাশক কি তাই তো চিনি না নৌকায় স্প্রে করব কীভাবে। এ সময় খেয়া পার হয়ে আসা আবুল কামাল জানান, সরকার দশদিন ছুটি দিয়েছে, তাই নিরাপদ স্থান হিসেবে সারাদিন বাড়িতে থাকছি কিন্তু বিকেল হলে একটু হাঁটাহাঁটি করতে বের হই। মুক্ত বাতাস আর জনশূন্য সিটিতে হাঁটতে ভালোই লাগে। সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলার বিষয়ে এক নৌকায় ৬জন মিলে খেয়া পার হয়ে আসা দিনার ইসলামকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, ভাড়া কম তো তাই ৬জন মিলে এক নৌকায় পার হলাম। এ ব্যাপারে সচেতন নাগরিকরা বলছেন, মানুষের জরুরি প্রয়োজনে বাসার বাহিরে যেতে হতে পারে। কিন্তু যেখানে গণপরিবহন বন্ধ সেখানে নৌকায়ও একজন কিংবা দুইজন যাত্রী নিয়ে পার হওয়া উচিৎ। আর নৌ মাঝিদের জীবাণুনাশক স্প্রে ধারা সব সময় নৌকা পরিষ্কার রাখারও পরামর্শ দেন।