গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) রাজধানীর মাতুয়াইল ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালে চিকিৎসক মোবারক করিমের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে । গ্রেপ্তার জামাল হোসেন ওই হাসপাতালের পরিচালক।

শনিবার দিবাগত রাতে রাজধানীর মিরপুর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। মোবারকের মরদেহ উদ্ধারের পর থেকে তিনি পলাতক ছিলেন।

গ্রেপ্তারের বিষয়টি রবিবার রাতে ঢাকাটাইমসকে নিশ্চিত করেছেন ডিবির পূর্ব বিভাগের অতিরিক্ত কমিশনার রফিকুল ইসলাম।

নিহত মোবারক বারডেম হাসপাতালের অ্যানেসথেসিয়া বিভাগের চিকিৎসক ছিলেন। পাশাপাশি মাতুয়াইল ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালে রোগী দেখতেন। গত ১৩ ফেব্রুয়ারি দুপুরে তিনি (মোবারক) নিখোঁজ হন। পরের দিন বেলা সাড়ে ১১টার দিকে হাসপাতালের পরিচালকের কক্ষে জানালার গ্রিলে ঝুলন্ত অবস্থায় মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। কিন্তু যেভাবে মরদেহটি ঝুঁলে ছিল, তাতে কেউ গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করতে পারে না। তার পা মাটিতে লাগানো ছিল। আর আত্মহত্যা করতে মোবারক হাসপাতালেই যাবে কেন? এমনটি দাবি নিহতের পরিবারের। নিহতের শ্বশুর শামসুদ্দিন মিয়ার দাবি, তার মেয়ের জামাইকে হত্যা করে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল।

এই ঘটনায় পরিচালককে অভিযুক্ত করে থানায় মামলা করে ভুক্তভোগীর পরিবারটি। সেসময় পুলিশ জানিয়েছিল, এটি হত্যা না আত্মহত্যা তা জানতে হলে ময়নাতদন্ত রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।

নিহতের পরিবার জানায়, মাতুয়াইল ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালের পরিচালক জামাল হোসেন চিকিৎসক মোবারককে মোবাইলে ঘটনার একদিন আগে (১৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ডেকে নিয়ে যান। পরিবারের সদস্যরা সারাদিন ফোন দিলেও তিনি (মোবারক) ফোন ধরেননি। রাতে একবার ফোন ধরে বলেন ‘ঝামেলায় আছি’ এরপর তার আর সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিল না। পরদিন (১৪ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে হাসপাতালে পরিচালকের কক্ষ থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় মরদেহ উদ্ধার হয়। পরিবারে দাবি, নিহত মোবারক করিম আত্মহত্যার করার মতো ব্যক্তি ছিলেন না। তাকে হত্যা করে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে।

হাসপাতালের পরিচালক জামালের সঙ্গে মোবারকের টাকা নিয়ে ঝামেলা ছিল। এজন্য রাতভর নির্যাতন করে মেরে ফেলা হয়েছে। কারণ নিহতের শরীরে বেশ কয়েকটি আঘাতের চিহ্ন ছিল। পরিবারটি তখন হাসপাতাল থেকে সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়। এমনকি স্থানীয় থানা পুলিশের বিরুদ্ধেও অসহযোগিতার অভিযোগ আনে।

মরদেহ উদ্ধারের সাত মাস আগে বিয়ে করেছিলেন মোবারক। তিনি দক্ষিণ দনিয়ার একে উচ্চ বিদ্যালয়ের পাশের একটি বাসায় ভাড়া থাকতেন। তার দেশের বাড়ি ভোলার লালমোহনে।

ডিবি পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা গতরাতে মিরপুরে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করি। আজ আদালতে পাঠিয়ে রিমান্ড আবেদন করেছিলাম। আদালত দুই দিনের রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেছে। এখন তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। তারপরই জানা যাবে মূল ঘটনা।’

Share Now
January 2025
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031