বদলে গেছে সিলেটের হযরত শাহজালাল (র.) দরগাহের চিত্র। চিরচেনা দরগাহ শরীফ এখন অচেনা। নেই মানুষের কোলাহল। ভিড় নেই কোথাও। সুনশান নিরবতা। এমন নিরব কখনো হয়নি দরগাহ শরীফ। তবে- জিয়ারতের জন্য খোলা মাজার শরীফ। একজন, দু’জন করে ভক্তরা যাচ্ছেন।

নিরবে মাজার জিয়ারত করে চলে আসছেন। বাইরে পুলিশের কড়া নজরদারি। কেউ দাড়িয়ে থাকলেই তাকে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
রোববার বেলা দুই টা। দরগারের গলির মুখে ঢুকতেই ভিন্ন পরিবেশ। যে গলি ২৪ ঘন্টাই থাকে লোকারণ্য। সেই গলিতেই নেই মানুষ জন। কয়েকজন রিকশাওলা দাড়িয়ে আছেন। পাশেই কয়েকজন ফকির। তারা সাহায্যের জন্য সব সময়ই দাড়ান। আজো তারা দাড়িয়ে আছেন। কিন্তু মানুষ নেই। কেউ আসছে না। মরিয়ম বেগম নামের এক ফকির জানালেন- ‘আজ কেউ সাহায্য নিয়ে আসেনি। গত তিন দিন ধরে দরগাহে কেউ আসছে না। এরপর সাহায্যর আশায় বসে আছি।’
একটি দোকানও খোলা নেই দরগাহের প্রবেশ পথে। সুনশান নিরবতা। মাঝে মধ্যে দু’একজন মুসল্লি চলে যাচ্ছেন। তাও নিরবে। কেউ কারো সঙ্গে কথা বলছেন না। রিকশাওয়ালা তমিজ মিয়া জানান- কেউ আসে না দরগাহে। নামাজের সময় এলাকার কিছু মানুষ আসে। আর কাউকে দেখা যায় না। দরগাহের ফটকে জনমানব শূণ্য স্থানে দু’জন পুলিশ বসে আছেন। দুরে দুরে বসে তারা পাহাড়ায় ব্যস্ত।
ভেতরের দৃশ্যও একই রকম। করোনাভাইরাসের কারনে বন্ধ মাদ্রাসা। নেই কোলাহল। কোরআন তেলাওয়াতের আওয়াজও নেই। অথচ দরগাহে ঢুকলেই পাশে মাদ্রাসা থেকে ভেসে আসতো কোরআর তেলাওয়াতের আওয়াজ। করোনা ভাইরাসের কারনে সরকারের নির্দেশ মেনে মাদ্রাসা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। ছাত্ররা যে যান বাড়িতে চলে গেছে। পায়রা চত্বরে নেই কোলাহল। কয়েকটি পায়রা উড়ে উড়ে এসে বসছে এখানে। ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ধান কুঁটে খাচ্ছে। একটু সামনেই শিরনির ঘর। ২৪ ঘন্টাই খোলা থাকে সেই ঘর। এখন তালাবদ্ধ। পাশেই শাহজালালের বড় বড় ডেক। যে ডেগে টাকা দিয়ে আশা পুরনের মানত করেন ভক্তরা। সেখানেও কাউকে দেখা গেলো না।
দরগাহের পিছনে পুকুর। ওখানও নিরব। পুকুর পাড়ে নেই মুসল্লিাদের হুড়োহুড়ি। গজার মাছকে খাদ্য দেওয়ার মতো মানুষ নেই। দু’একজন হেটে চলে যাচ্ছেন পাশ দিয়ে। কেউ তুলে দিচ্ছেন না খাবার। পুলিশ খুব সতর্ক। কাউকেই দাড়াতে দিচ্ছে না। ফলে কেউ এসে এখানেও ভিড় করছেন। মহিলা এবাদত খানায়ও নেই ভিড়। মাজারের উপরের অংশে খাদিমপক্ষের দু’জন লোক বসা। তারাও নিজেরা গল্পে ব্যস্ত। ভক্তদের ভিড় নেই। এ কারনে তাদেরও নেই তাড়া। মাজার শরীফে যাচ্ছেন কেউ কেউ। নিরবে জিয়ারত করে চলে আসছেন।
৩৬০ আউলিয়া ভক্ত পরিষদের সাধারন সম্পাদক আলহাজ¦ মকন মিয়া জানালেন- মাজারের সব কার্যক্রম ইতিমধ্যে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সাপ্তাহিক মিলাদ, শিরনির আয়োজন সব বন্ধ। শুধু মাত্র মুসল্লিদের জন্য সকাল ৮ টা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মাজার শরীফ খোলা। করোনা ভাইরাসের কারনে এ সতর্কতা গ্রহন করা হয়েছে।

Share Now
December 2024
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031