ঢাকা : হাত দিয়ে খাওয়া বাঙালিদের রীতি হলেও ইদানীংকালে তার অনেক পরিবর্তন হয়েছে। কেউ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে চামচ দিয়ে খাওয়াই বেশি পছন্দ করেন। কিন্তু জানেন কি হাত দিয়ে খাওয়ার অনেক সুফল রয়েছে। জেনে নিন কী সেগুলো:
হজম: ত্বক আমাদের পঞ্চ ইন্দ্রিয়ের একটা। আঙুলের ডগায় অনেক বেশি স্নায়ু থাকায় স্পর্শের মাধ্যমে খুব সহজে কোনও বস্তুকে বুঝতে পারি আমরা। হাতে করে খাবার খেলে স্পর্শের সঙ্গে সঙ্গেই মস্তিষ্ক পাকস্থলীতে সিগন্যাল পাঠায়। পাকস্থলী যেহেতু আগে থেকেই খাবারের ধর্ম অনেকটাই আঁচ করতে পারে তাই হজমেও সুবিধা হয়
মন: বেশির ভাগ সময়ই দেখা যায় যাঁরা চামচ দিয়ে খান, তাঁরা খাবারের দিকে না তাকিয়েই তা মুখে পুরে দেন। হাত দিয়ে খেলে কিন্তু তা হয় না। খাবার হাতে নেওয়ার সময় প্রতি বার খাবারের দিকে তাকাতে হয়। এর ফলে অনেক বেশি মনযোগ সহকারে খাওয়া যায়। বিশেষজ্ঞদের মতে, মন দিয়ে খেলে হজম ভাল হয়।
জিভকে রক্ষা: দেখে কি বোঝা যায় খাবার গরম না ঠান্ডা! চামচে করে যেই না মুখে পুড়েছেন অমনি জিভটাই পুড়ে গেল। তারপর কয়েক দিন বিচ্ছিরি জ্বালা নিয়ে কাটাতে হবে। মন আর পেট ভরে খেতে পারবেন না। হাত দিয়ে খেলে এই দুর্ঘটনা থেকে তো রেহাই পাওয়াই যায়, আঙুলের ত্বক অনেক পুরু হওয়ায় ক্ষতির পরিমাণ কম হয়।
ডায়াবেটিস প্রতিরোধে: ক্লিনিক্যাল নিউট্রিশন নামে জার্নালে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্তেরা খুব দ্রুত খান। আবার সমীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, যাঁরা চামচ ব্যবহার করেন তাঁরাও তূলনামূলক ভাবে দ্রুত খেয়ে থাকেন। দ্রুত খেলে হজমের সঙ্গে রক্তে শর্করার মাত্রারও হেরফের ঘটে। তাই এই ধরনের রোগীদের উচিত হাত দিয়ে খাওয়া।
উপকারী ব্যাকটিরিয়া: আমাদের হাতে বেশ কিছু উপকারী ব্যাকটিরিয়াও রয়েছে। পরিবেশের বেশ কিছু ক্ষতিকারক অনুজীবীদের থেকে আমাদের রক্ষা করে। হাতে করে খাবার সময় এই ধরনের উপকারী ব্যাকটিরিয়াও খাদ্যনালীতে প্রবেশ করে হজমে সাহায্য করে।
খাওয়া নিয়ন্ত্রণ করে: বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, খুব দ্রুত যাঁরা খান, তাঁদের খাবার পরিমাণটাও অনেক বেশি। কারণ, পেট যে ভর্তি হয়ে গিয়েছে সেই সিগন্যাল পাওয়ার আগেই আরও কিছুটা খেয়ে ফেলেন তাঁরা।
এখানেই লুকিয়ে আছে হাত দিয়ে খাবার আর একটা সুফল। হাত দিয়ে খেলে তা প্রয়োজনের তুলনায় বেশি খেয়ে আর কষ্ট পেতে হবে না।