বাংলাদেশির বসবাস স্পেনে প্র্রায় ৩০ হাজার । এদের অধিকাংশই ছোট ছোট ব্যবসা, দিনমজুরের সঙ্গে জড়িত । কিন্তু সম্প্রতি ‘লকডাউন’ হয়ে যাওয়ায় দেশটিতে অবস্থানরত বাংলাদেশিরা বিপাকে পড়েছেন। এই অবস্থায় তাদেরকে মানবিক সাহায্যের আবেদন জানিয়েছে মাদ্রিদের বাংলাদেশি দূতাবাস। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের মহাপরিচালকের কাছে দেয়া দূতাবাসের প্রথম সচিব (শ্রম) মুহাম্মদ মুহতাসিমুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে জরুরি ভিত্তিতে ১০ লাখ টাকা বরাদ্দ চাওয়া হয়।
গত ২৩শে মার্চের ওই চিঠিতে বলা হয়, দেশটিতে কোভিড-১৯ এর ফলে অসুস্থ এবং মৃতের হার প্রতিদিনই বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ পর্যন্ত ৩২ জন প্রবাসী বাংলাদেশি কোভিড-১৯ এ আক্রান্ত হয়েছে, যার মধ্যে দু’জন সুস্থ্য হয়েছেন। স্পেন সরকার বিগত ১৪ই মার্চ থেকে পুরো স্পেন লকডাউন ঘোষণা করেছে এবং এটি ১১ই এপ্রিল পর্যন্ত বর্ধিত করেছে।
ফলে শুধু খাবার কেনা এবং চিকিৎসা ব্যতীত সকল ক্ষেত্রেই বাড়িঘর থেকে বের হওয়া ফৌজদারি অপরাধ বলে পরিগণিত হচ্ছে। রাস্তায় পুলিশ প্রহরা চলমান এবং কিছু ক্ষেত্রে সামরিক বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, স্পেনে প্রায় ৩০ হাজার বাংলাদেশির বসবাস। এদের অধিকাংশই পর্যটন নির্ভর ছোট ব্যবসা, দিনমজুরি ইত্যাদি করে জীবিকা নির্বাহ করে। সাম্প্রতিক সময়ে লকডাউনের ফলে এদের অধিকাংশই আয়-রোজগার বঞ্চিত হয়ে সপরিবারে দুর্বিষহ দিন যাপন করছে। স্থানীয় বাংলাদেশি এসোসিয়েশন এবং সামাজিক ও রাজনৈতিক সংস্থা প্রায় ২ হাজার অসহায় ব্যক্তিকে চিহ্নিত করে চাল, ডাল, তেলসহ অতি প্রয়োজনীয় খাবার সরবরাহের কার্যক্রম শুরু করেছে। তারা এ অবস্থায় রাষ্ট্রদূতের মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকারের সহায়তা কামনা করেছে। প্রবাসী কর্মীদের অসহায় অবস্থায় সহযোগিতা একান্তভাবে কাম্য।
চিঠিতে বলা হয়, দূতাবাসের ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ তহবিলে ৫৯ হাজার ৩৬৯ দশমিক ৫০ ইউরো জমা আছে। এ তহবিলের ২০১৯-২০২০ অর্থ বছরের বাজেটের ৫৯১১ খাতে (পঙ্গু, অসুস্থ, বিপদগ্রস্ত কর্মীদের আর্থিক সাহায্য) ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ রয়েছে। কোভিড-১৯ সংক্রান্ত পরিস্থিতির কারণে বাজেটের এই খাতে আরও ১০ লাখ টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হলে প্রাথমিকভাবে প্রবাসী কর্মীদের আর্থিক সাহায্য প্রদান করা সহজতর হবে।
এ ব্যাপারে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের উপ পরিচালক জাহিদ আনোয়ার বলেন, ইতিপূর্বে হংকং থেকে মাস্ক কেনার জন্য আমাদের কাছে ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা চাওয়া হয়েছিলো। আমরা সেটা দিয়ে বরাদ্দ দিয়েছি। পরবর্তীতে স্পেন থেকে ১০ লাখ টাকার একটা চাহিদা পাওয়া গেছে। আমরা সেটাও অনুমোদন দিয়েছি। দেশটিতে ২ হাজার বাংলাদেশি বিপদগ্রস্ত বলে তিনি জানান। জাহিদ আনোয়ার আরও বলেন, এই আপদকালীন সময়ে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড কর্মীদের আমরা সব ধরণের সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।