সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) করোনা ভাইরাসের কারণে দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) নেতিবাচক প্রভাবের আশঙ্কা করছে । একই সঙ্গে পোশাক, রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয়েও বড় ধরনের নেতিবাচক ধারা হতে পারে বলে মনে করে সংস্থাটি।
শনিবার ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে সিপিডি এই আশঙ্কা প্রকাশ করে। করোনার প্রভাবের কারণে অতীতের মতো গণমাধ্যমকর্মীদের ডেকে সংবাদ সম্মেলন না করে সিপিডি ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলন করে।
এতে ‘করোনা ভাইরাসের স্বাস্থ্য ও অর্থনৈতিক ঝুঁকি এবং করণীয়’ শীর্ষক বর্তমান পরিস্থিতিতে বিভিন্ন ধরনের ঝুঁকির পর্যালোচনা এবং সম্ভাব্য করণীয় সম্পর্কে তুলে ধরা হয়। সিপিডি’র ফেসবুক পেজে এবং সিপিডি ওয়েবসাইট থেকে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সিপিডি’র বিশেষ ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান ও অন্যরা।
সিপিডি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, যে সমস্ত দেশ থেকে আমদানি-রপ্তানি করা হয় সব দেশই করোনায় আক্রান্ত। ফলে সামন্ত্রকভাবে বহির্খাতে যে পারফরম্যান্স সেটা সামনের দিকে নেতিবাচক প্রভাব দেখতে পাচ্ছি।
বিশ্বব্যাপী মাহামারী রূপ নিয়েছে করোনা ভাইরাস। আক্রান্ত হয়ে ইতিমধ্যে দেশে একজনের মৃত্যু হয়েছে। দিন দিন বাড়ছে রোগীর সংখ্যা, যা দেশের জন্য একটি উদ্বেগজনক স্বাস্থ্য ও অর্থনৈতিক ঝুঁকি তৈরি করেছে।
এমন পরিস্থিতিতে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ২০১৯-২০ অর্থবছরের প্রথম আট মাসের প্রতিবেদন তুলে ধরেন ফাহমিদা খাতুন।
তিনি বলেন, বিশেষ করে তৈরি পোশাক শিল্পে এখনই নেতিবাচক প্রভাব দেখছি। এটা সামনে আরও নেতিবাচক হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। নিটওয়ারে পাঁচ দশমিক সাত শতাংশ ঋণাত্মক। ওভেনওয়ারের ক্ষেত্রে পাঁচ দশমিক নয় শতাংশ ঋণাত্মক। হোম টেক্সটাইলে সাত দশমিক পাঁচ শতাংশ ঋণাত্মক। এ থেকে সহজেই বুঝতে পারছি আগামী কয়েক মাসে এটা আরও ঋণাত্মক হতে পারে।
ফাহমিদা খাতুন বলেন, রেমিটেন্স ২০১৯ সালে ভালো ছিল। কিন্তু আগামীতে রেমিটেন্সেও নেতিবাচক প্রভাবের সম্ভাবনা রয়েছে।
সিপিডি’র নির্বাহী পরিচালক বলেন, সরবরাহের সমস্যা দেখা দিয়েছে। সরবরাহের যে শৃঙ্খলা সাপ্লাই চেইনে সেখানে একটা নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। সেটা আমরা দেখি বিভিন্ন ধরনের পণ্যের দামের ক্ষেত্রে মোটামুটিভাবে কিছুটা উর্ধ্বমুখী প্রভাব দেখছি। বিশেষ করে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যে। ডাল, মাছ, মুরগি, তেল, রসুন ইত্যাদির ক্ষেত্রে উর্ধ্বমুখী প্রবণতা টিসিবি ডাটা থেকে আমরা দেখছি। উৎপাদন ক্ষেত্রেও সরবরাহজনিত সমস্যা এবং আমদানিতেও সরবরাহ জনিত সমস্যা দেখতে পারছি।
ড. ফাহমিদা বলেন, আন্তর্জাতিক মূদ্রা তহবিল (আইএমএফ) বারবার নিম্নমুখী রিভার্স করছে বিশ্ব অর্থনীতির। এখন তারা বলছে ২০১৯ সালে যে প্রবৃদ্ধি হয়েছিল তার চেয়ে শূন্য দশমিক এক পয়েন্ট কম হবে ২০২০ সালে। ২০২১ সালে শূন্য দশমিক দুই শতাংশ কম হবে। আর যে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে সেটা জিডিপিতে যে প্রভাব পড়বে সেটা আইএমএফ বলছে এক দশমিক ছয় শতাংশ। এটা বাণিজ্য ক্ষতি, বিনিয়োগ হারানো মধ্যে এই ক্ষতি আসছে।
সিপিডি’র নির্বাহী পরিচালক বলেন, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যেক্তারা বেশি সমস্যায় পড়েছে। তাদের প্রতি সরকারের বিশেষ নজর দিতে হবে।