নানা পদক্ষেপের অংশ হিসেবে দেশটি আজানেও কিছুটা পরিবর্তন এনে একটি বাক্য সংযোজন করেছে, যেখানে করোনা প্রাদুর্ভাবের মধ্যে মুসল্লিদের ঘরে বসে প্রার্থনার কথা বলা হয়েছে। চীন থেকে মৃদুলয়ে ধীরে ধীরে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে মহামারির আকার নেওয়া নভেল করোনাভাইরাসে আর সব দেশের মতো কুয়েতও প্রাণ সংহারক ভাইরাসটি প্রতিরোধে নানা ব্যবস্থা নিয়েছে।

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যপ্রাচ্যের যেকটি দেশেও ভাইরাসটি সংক্রমিত রোগী শনাক্ত হয়েছে কুয়েত তার একটি। তবে দেশটির সব মসজিদে আজানে এমন ‘বাক্য সংযোজন’ করাকে ইসলামের ইতিহাসে নজিরবিহীন ঘটনা বলে অভিহিত করা হচ্ছে। ইসলামের প্রায় ১৫শ বছরের কালযাত্রায় এর আগে আজানে কোনো সংযোজন-বিয়োজনের ইতিহাস নেই।

গালফ নিউজের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায়ের জন্য আজানের মধ্য দিয়ে মুসল্লিদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। তবে কুয়েতের মুযাজ্জিনরা আজানের যে অংশে ‘হাই’আ আলাস সালাহ্’ (প্রার্থনার জন্য আসো) বলা হয় তার পরিবর্তে ‘আল সালাতু ফি বায়তিকুম’ অর্থাৎ ঘরে প্রার্থনা করার কথা বলছেন। আজানে কোনো বাক্য সংযোজন করার এমন ঘটনা নজিরবিহীন বলে অভিহিত করেছে মধ্যপ্রাচ্যের প্রভাবশালী এই দৈনিক।

আজানের কোনো বাক্য পরিবর্তন করা যায় কি না ঢাকা টাইমসের পক্ষ থেকে জানতে চাইলে ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শফিক আহমদ বলেন, ‘ইসলামের ইতিহাসে আজান সংশোধনের ঘটনা নজিরবিহীন। তবে ইসলামিক আইন তা সমর্থন করে। কারণ ইসলামিক আইনে সর্বাগ্রে জনকল্যাণমূলক ও ন্যায্যতার প্রশ্নে সরকার যেকোনো যৌক্তিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারে।’

এদিকে শনিবার পর্যন্ত কুয়েতে ১০৪ জনের বেশি করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন বলে খবর মিলেছে। তবে এখনও পর্যন্ত দেশটিতে ভাইরাসটির সংক্রমণজনিত কোনো মৃত্যুর ঘটনা ঘটেনি। করোনা ছোঁয়াচে ধাঁচের হওয়ায় বড় জমায়েত এড়িয়ে চলার নির্দেশ দিয়েছে কুয়েতি সরকার।

এছাড়া মসজিদগুলিও সাময়িক মসজিদ বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। দেশটির ইতিহাসে প্রথমবারের মতো গত শুক্রবার কুয়েতের আওকাফ এবং ইসলামিক মন্ত্রণালয় মসজিদে দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত জামাতে নামাজ আদায় করাও বাতিল করা হয়েছে। তবে মসজিদে মুয়াজ্জিনরা নিয়মিত আজান দিচ্ছেন। এছাড়া রেস্টুরেন্ট, ক্যাফে এবং বাণিজ্যিক কেন্দ্রগুলোতে ভিড় না করার নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে।
করোনার প্রাদুর্ভাবে কুয়েত আগামী ২৬ মার্চ পর্যন্ত সরকারি ছুটি ঘোষণা করেছে। আগামী ২৯ তারিখ সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে দেশটির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।

Share Now
January 2025
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031