জামিন পেয়েছেন মাহবুবুল হক চিশতি ওরফে বাবুল চিশতির শ্যালক মো. মোস্তফা কামাল । আর এ নিয়ে ব্যাংক খাতে অস্বস্তির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। চিশতির সহযোগীখ্যাত কামালের জামিনে হতাশা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
জানা গেছে, বাবুল চিশতি জেল থেকে বেরিয়ে আসতে বড় ধরনের পরিকল্পনা করেছেন। আর এ ক্ষেত্রে তার শক্তি বিশাল অবৈধ সম্পদ। তিনি শত কোটি টাকা খরচ করেও জেল থেকে পুরো পরিবার নিয়ে বেরিয়ে আসতে চান। তার এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সহায়তায় এগিয়ে এসেছে সরকারের এক প্রভাবশালী ব্যক্তি। আর তারই নির্দেশে জামিন পেয়েছেন শ্যালক মো. মোস্তফা কামাল। আর এই মোস্তফা কামালের মাধ্যমেই বাবুল চিশতির মিশন বাস্তবায়ন করা হবে।
একটি সূত্র জানিয়েছে, বাবুল চিশতি যেকোনো শর্তে আবারও ফারমার্স ব্যাংকে ফিরে আসতে চান। আর এ জন্য তিনি তার অবৈধ সম্পদকে কাজে লাগাতে চান। তবে ব্যাংক খাত সংশ্লিষ্টরা এ নিয়ে উদ্বিগ্ন। তারা মনে করেন, বাবুল চিশতির শ্যালক জামিন পেয়েছেন। অতএব বাবুল চিশতিও জামিন পাবেন। আর এটি হলে ব্যাংক খাতে চরম বিশৃঙ্খলা শুরু হবে। এ খাতের ওপর মানুষের আস্থা উঠে যাবে।
দুদক সূত্রে জানা যায়, মো. মোস্তফা কামালের পক্ষে তার আইনজীবী গত ২৬ জানুয়ারি আদালতে জামিনের আবেদন করেন এবং একই দিন আদালত জামিন মঞ্জুর করে। এরপর দুদকের তদন্তকারী কর্মকর্তা পরের দিন ২৭ জানুয়ারি বিজ্ঞ আদালত কর্তৃক মোস্তফা কামালের জামিন আদেশের বাতিলপূর্বক ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুরের জন্য আবেদন করেন।
আদালত ওই দিন ৪নং আদেশবলে পূর্বের জামিন আদেশ বাতিল করে এবং বেইলবন্ড কারাগার থেকে রি-কলে আদেশ দেয়। একই দিনে অর্থাৎ ২৭ জানুয়ারি ৫নং আদেশবলে মো. মোস্তফা কামালের স্থাবর এবং অস্থাবর সম্পদ মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ (সংশোধিত-২০১৫)-এর ১৪ ধারা/দুর্নীতি দমন কমিশন বিধিমালা ২০০৭ (সংশোধিত-২০১৯)-এর ১৮ বিধি অনুযায়ী ক্রোক/অবরুদ্ধ করা হয়।
মো. মোস্তফা কামালের পক্ষে তার আইনজীবী পুনরায় গত মঙ্গলবার (১০ মার্চ) উপরোক্ত আদালতে জামিনের প্রার্থনা করেন এবং আদালত জামিনের আবেদন মঞ্জুর করে।
উল্লেখ্য, বাবুল চিশতি ভুয়া প্রতিষ্ঠানকে ঋণ দিয়ে প্রায় ১৮০০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। ২০১৫ সালে পাঁচটি ঋণে বড় জালিয়াতির তথ্য ফাঁসের পর তাকে ফারমার্স ব্যাংকের সব পদ ছাড়তে হয়েছে। এরপর কয়েক বছরে প্রায় এক ডজন মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন। বাবুল চিশতির অনিয়মের সবচেয়ে সুবিধাভোগী হলো মোস্তফা কামাল।