বিয়েবাড়ির দুটি নৌকা ডুবে গেছে রাজশাহীর পদ্মা নদীতে । এ দুর্ঘটনায় নববধূসহ অন্তত ২০ জন নিখোঁজ রয়েছেন। এদের মধ্যে সাত-আটজন শিশুও আছে। শুক্রবার সন্ধ্যার পরে নগরীর শ্রীরামপুর এলাকার বিপরীতে মধ্যপদ্মায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। নৌকাডুবিতে এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
এদিকে সাতজনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বিয়ের ফিরনি অনুষ্ঠান শেষে বরের বাড়ি থেকে ফেরার পথে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
বরের নাম রুমন আলী (২৬)। তার বাড়ি পদ্মার ওপারে পবা উপজেলার চরখিদিরপুর গ্রামে। আর কনের নাম সুইটি খাতুন (২০)। তার বাড়ি রাজশাহী শহর সংলগ্ন পবা উপজেলার ডাঙেরহাট গ্রামে। গত বৃহস্পতিবার রুমন-সুইটির বিয়ে হয়। শুক্রবার দুপুরে সুইটির আত্মীয়-স্বজনরা নবদম্পতিকে আনতে গিয়েছিলেন। ফেরার পথে মাঝপদ্মায় নৌকা দুটি ডুবে যায়।
ঘটনার পর বর জীবিত অবস্থায় উদ্ধার হয়েছেন। এছাড়া দুই পরিবারের পাঁচজনসহ আরও ছয়জন উদ্ধার হয়েছেন। তারা হলেন- খাদিমুল ইসলাম (২৩), রতন আলী (২৮) ও তার স্ত্রী বৃষ্টি খাতুন (২২), সুমন আলী (২৮) ও তার স্ত্রী নাসরিন বেগম (২২) এবং মেয়ে সুমনা আক্তার (৬)।
খাদিমুল নৌকার মাঝি ছিলেন। রতন ও তার স্ত্রী বৃষ্টি খাতুন জীবিত উদ্ধার হলেও তাদের মেয়ে মরিয়ম খাতুন (৬) মারা গেছে। হাসপাতালে নেয়ার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। বাবা-মায়ের সঙ্গে তাকে উদ্ধার করা হয়। আর মেয়েকে নিয়ে সাঁতরে উঠেছিলেন সুমন-নাসরিন দম্পতি।
নৌকাডুবির পর আশপাশের অসংখ্য মানুষ এবং স্বজনরা শ্রীরামপুর এলাকায় নদীপাড়ে ভিড় করেছেন। রয়েছেন প্রশাসনের কর্মকর্তারাও। ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি দল নদীতে তল্লাশি শুরু করেছে। বিজিবি সদস্যরাও স্পিডবোট নিয়ে নদীতে ভাসমান মানুষ খুঁজছে। প্রস্তুত রয়েছে অ্যাম্বুলেন্স।
শ্রীরামপুর এলাকার এক নারী জানান, দুপুরে তিনি অন্তত ৩৫ জনকে চরে যাওয়ার জন্য নদীর দিকে যেতে দেখেছেন। তাদের সঙ্গে ৭-৮ জন শিশুও ছিল। তারা দুটি নৌকায় চড়ে চরে গিয়েছিলেন।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের রাজশাহী সদর স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন অফিসার আব্দুর রউফ জানান, দুটি নৌকায় ৩৫ জনের মতো যাত্রী ছিল। এর মধ্যে ১৭ জন নারী ও ছয়জন শিশু। সন্ধ্যায় দুই নৌকা ধাক্কা খেয়ে ডুবে যায়। কতজন নিখোঁজ রয়েছে- তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।