jj

jjk

ঢাকা : প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগের জন্য ভারতের চেন্নাইয়ের বাসিন্দা ও পাখিপ্রেমী দম্পতি আম্বিকা এবং চন্দ্র শেখর। সম্প্রতি তারা বেড়াতে গিয়েছিলেন প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি খ্যাত ভুটানে। সেখানে ছিলেন তারা আট দিন। ঘুরে বেড়িয়েছেন ভুটানের দর্শনীয় স্থানগুলোতে। ভারতীয় গণমাধ্যম ডেকান ক্রনিক্যাল ছেপেছে এই দম্পতির ভুটান ভ্রমণের কাহিনি।

আমি এবং আমার স্বামী প্রচণ্ড উৎসাহী পাখি পর্যবেক্ষক। তাই কিছুদিন অচিরপ্রবাসে থাকার সুযোগ হারাতে চাইনি। ভুটান সাধারণত সন্যাসীদের মঠের জন্য পরিচিত। তাছাড়া শত শত প্রজাতির পাখিদের আবাসস্থলও দেশটি।

মাদ্রাজ ন্যাচারালিস্ট সোসাইটির আমরা ১৮ জন বাইনোকুলার এবং ক্যামেরায় সজ্জিত হয়ে ভুটান প্রাকৃতিক দৃশ্য উপভোগের জন্য ঘর ছাড়ি।

আমরা প্রথমে পারোতে পৌঁছাই। এরপর থিম্পুর দিকে রওয়ানা হই। চলতি পথে পুনাখা, ওয়াংডু, ট্রংসা ভ্রমণ করি। আট দিনের ভ্রমণে জমা হয়ে নানা স্মৃতি।

যাত্রাপথে ভুটানের কিছু উঁচু উঁচু জায়গায় আমাদের থেমেছি। চেলেলা, ডচুলা এবং পেলেলা পাসেস ছিল তাদের মধ্যে অন্যতম। এই সময় রাস্তার দুই পাশে বাহারি রঙের রডেনড্রোন(এক জাতীয় চিরহরিৎ গুল্ম) ফুলের প্রাচুর্য দেখা গেছে। যা দেখতে খুবই চমৎকার।

আমি যেহেতু ইকাবেনা(জাপানি ফুল সাজানোর শিল্প) চর্চাকারী, তাই যেকোনো ফুলের প্রতি আলাদা একটা টান রয়েছে। একই কারণে ভুটানের ল্যামপেরিল রয়েল বোটানিক্যাল গার্ডেন আমার সেরা পছন্দের জায়গাগুলোর মধ্যে একটি।

দেশটির চমৎকার প্রাকৃতিক দৃশ্য, পাহাড়ের বুক চিড়ে চলা নদী, চারিদিকে সবুজ শ্যামলিমা এবং মেঘের ভেলা আমাদের চরমভাবে মুগ্ধ করেছে। আসলে এসব নৈসর্গিক দৃশ্যের কথা লিখে প্রকাশ করা সম্ভব নয়। ভুটানের পারু উপত্যকায় খাঁজে রয়েছে টাইগার নেস্ট মঠ। এটি হিমালয় বৌদ্ধদের একটি পবিত্র স্থান। এখানে চারটি মন্দির ও থাকার জায়গা রয়েছে। সাদা রঙের ভবনগুলো ইট ও বাদামি রঙের কাঠ দিয়ে তৈরি। টাইগার নেস্টের ছাদটি সোনালি রঙ খচিত।

থিম্পু থেকে পুনাখা যাওয়ার পথে দেখা মিলে ডচুলা লা পাস। ১০৮টি বৌদ্ধস্তুম্ভের সমন্বয়ে এটি গঠিত। দেখতেও অনেক চমৎকার এটি। এই স্মৃতিসৌধটি নির্মাণ করা হয়েছে ভুটানের সৈনিকদের স্মরণে। আসামের বিদ্রোহীদের সঙ্গে সংঘর্ষে তারা মারা যায়।

আরেকটি চমৎকার জায়গা হচ্ছে জিগমি ডর্জি ন্যাশনাল পার্ক। এটি আমাদের কাছে স্বর্গের মতো ছিল। এই অভয়ারণ্যে ৩০০ বিজোড় প্রজাতির পাখি ছিল। আমরা স্থানীয়দের কাছ থেকে শুনেছি, বিপন্ন প্রজাতির ধূসর রঙের ডোরা কাটা চিতাবাঘের অস্তিত্ব রয়েছে এখানে। তবে দুর্ভাগ্য, আমরা একটিও দেখার সুযোগ পায়নি। তাছাড়া, লাল পান্ডা, হিমালয়ের কালো ভাল্লুকসহ অন্যান্য অনেক প্রাণি দেখা মিলে এখানে।

অনেক ঘোরাঘুরি পর আমাদের প্রচণ্ড ক্ষুধা পায়। সঙ্গে নেয়া স্যান্ডউইচ অনেক আগেই শেষ হয়ে গিয়েছিল। তাই আমরা স্থানীয় খাবারের সন্ধানে লেগে পড়লাম। আমরা উপভোগ করেছিলাম আলু, পনির এবং মরিচ দিয়ে বানানো ভুটানের ঐতিহ্যবাহী বিশ্ব বিখ্যাত খাবার ‘ইমা ডাটসি’। এই খাবারটিকে ভুটানের জাতীয় খাবার বলা হয়। আসলেই খাবারটি অনেক সুস্বাদু। ভুটানের মনোমুগ্ধকর বহু স্মৃতি নিয়ে আমরা চেন্নাই ফেরত আসি।

Share Now
December 2024
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031