লুণ্ঠিত বিপুল পরিমাণ ইয়াবা থেকে দুই লাখ পিস জব্দ করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ কক্সবাজারে । এ ঘটনায় জেলা ছাত্রলীগ নেতা ফয়সাল আবদুল্লাহসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে ইয়াবাসহ তাদের আটক করা হয় বলে জানিয়েছেন কক্সবাজার ডিবি পুলিশের ইনপেক্টর মানস বড়ুয়া। এ ঘটনায় আটজনের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন, কক্সবাজার পৌরসভার টেকপাড়া মসজিদ রোড় এলাকার মৃত আবদুল করিমের ছেলে মো. ফয়সাল আবদুল্লাহ (৩০), সদরের খুরুশকুল কুলিয়াপাড়ার মৃত ফজল মিয়ার ছেলে মো. ফিরোজ (৩২), মৃত সোলতানের ছেলে মো. মোস্তাক আহম্মেদ লালু (৩৬)। এদের মাঝে ফয়সাল আবদুল্লাহ জেলা ছাত্রলীগের সদস্য। পলাতকরা হলেন, কক্সবাজার শহরের উত্তর রুমালিয়ারছড়ার মো. মালেকের ছেলে বিলাই হোসেন (৩২), মাঝিরঘাট সৈয়দ কোম্পানির বরফ মিলের পাশের মৃত ফরিদের ছেলে ইফতেখার খান বাবু (২৪), টেকপাড়ার মুবিন বহদ্দারের ছেলে নাসির (৩০), মাঝিরঘাটের আবু ছৈয়দ কোম্পানির ছেলে মুজিব (২২), হাঙ্গরপাড়ার মো. বাশি প্রকাশ বাঁশি বহদ্দারের ছেলে বুলু মিস্ত্রি (৩৩), পেশকার পাড়া বেড়িবাধ এলাকার খোরশেদ আলমের ছেলে তানভীর (২১), পশ্চিম টেকপাড়ার গোলাম মাওলা বাবুল প্রকাশ জজ বাবুলের ছেলে কায়সার (২৮) ও মো. মিজান (৩২ )। ডিবির ওসি মানস বড়ুয়া জানান, গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ ও স্থানীয় গুপ্তচরের মাধ্যমে জানতে পারি গত ৮ই ফেব্রুয়ারি কক্সবাজার শহরের মাঝিরঘাট এলাকায় ইয়াবার একটি বড় চালান প্রবেশ করে। খবর পেয়ে পুলিশ সুপারের নির্দেশনায় ইয়াবা চালান উদ্ধার ও জড়িতদের গ্রেপ্তারের তৎপর হই। বিশ্বস্ত গুপ্তচর নিয়োগ এবং তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারে ২৪শে ফেব্রুয়ারি দিনগত মধ্য রাতে খবর পায় উক্ত ইয়াবা চালানের একটি অংশ কক্সবাজার সদরের খুরুশকুল ইউপির কুলিয়াপাড়াস্থ মোস্তাক আহম্মেদ লালুর বসত বাড়িতে মজুদ করে ভাগ-বাটোয়ারা করছে।
তখনই সঙ্গীয় অফিসার-ফোর্সসহ মোস্তাকের বাড়ীতে হাজির হলে পুলিশের উপস্থিতি টের পাইয়া ইয়াবা ব্যাবসায়ীরা পালানোর চেষ্টা করে। তখন ফিরোজ ও মোস্তাককে আটক করা হয়।
তাদের কয়েকজন সহযোগি পালিয়ে যায়। উপস্থিত সাক্ষীদের
সামনে ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে তারা স্বীকার করে তাদের কাছে একলাখ পিস ইয়াবা
ট্যাবলেট রয়েছে। মোস্তাকের রুমের খাটের নিচ হতে একটি চটের বস্তার ভিতর
রক্ষিত ১০ বান্ডিলে রাখা দুই লাখ ইয়াবা জব্দ করা হয়। ধৃতদের স্বীকারোক্তিতে
তাদের সহযোগী হিসেবে ফয়সাল আবদুল্লাহকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতরা
জানায় ফয়সালের সহযোগীতায় লুণ্ঠিত ইয়াবাগুলো বিকিকিনির চেষ্টা করা হচ্ছিল
এবং অপর পলাতক আসামী মিজানের যোগসাজসে মিয়ানমার হতে অবৈধ পথে ইয়াবাগুলো
কক্সবাজারে আনে।
ওসি মানস আরো জানান, উদ্ধার ইয়াবা ছাড়াও চালানের বড়
একটি অংশ মিজানের কাছে এবং আরেকটি বড় অংশ পশ্চিম লারপাড়া গ্যাস পাম্পের
পিছনে মোক্তার প্র: মোক্তার মেম্বারের ছেলে মো. শহিদ (৩৮) ও মো. বোরহানের
(২৭) কাছে রয়েছে।
অপর এক সূত্র জানায়, ৮ ফেব্রুয়ারি ইয়াবা লুটের পর
প্রথমে মোস্তাকের নৌকা করে ইয়াবার একটি অংশ নিয়ে যাওয়া হয়। পরে লুটকৃত
ইয়াবার ওই অংশটি রাখা হয় তার ভাই রমজানের বাসায়। ইয়াবা লুটের প্রধান হোতা
মিজান বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছেন। বিষয়টিও ইমিগ্রেশনের মাধ্যমে নিশ্চিত
হয়েছেন কক্সবাজার জেলা পুলিশ। এদিকে জেলা সেচ্ছাসেবক লীগ নেতা কাজী রাসেল
নারীসহ পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার একদিনের ব্যবধানে জেলা ছাত্রলীগের
সদস্য ফয়সাল আবদুল্লাহ আটক হবার খবরে জেলা শহরে আলোচনা সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো. ইকবাল হোসাইন বলেন,
ইয়াবা লুটকারীদের ধরতে পুলিশ ইতিপূর্বে ঘটনাস্থলসহ সম্ভাব্য স্থানে কয়েক
দফা অভিযান চালিয়েছে। এই ইয়াবার চালানের সঙ্গে জড়িত এবং লুটকারীদের শনাক্ত
করা হয়েছে। পাশাপাশি একটি সফল অভিযানও হয়েছে। বাকিদের ধরতে অভিযান চলমান
রয়েছে।