ঢাকা : এই রহমতের রমজান মাস প্রদান করেছেন, মহান আল্লাহ রাব্বুল ইজ্জত আশরাফুল মখলুকাত বা সৃষ্টির সেরাজীব মানুষকে যোগ্য হিসেবে গড়ে তুলতে অনুগ্রহ করে।এই মাসকে তিনি খুবই পছন্দ করেন বলেই হাদিসে কুদসীতে আল্লাহ পাক ইরশাদ করেছেন, ‘সকল কল্যাণকর কাজ মানুষের জন্যই কিন্তু রোজা আমার জন্য’। অন্য সকল ইবাদত যেমন নামাজ, যাকাত, হজ ইত্যাদি লোক দেখানোর একটা সম্ভবনা থাকে । কিন্তু রোজা লোক দেখানোর কোন সম্ভবনা নেই। প্রকৃত পক্ষে কেউ যদি রোজা পালন করে তা শুধুই আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্যই।
হাদিসে পাকে বর্ণিত আছে, ক্বেয়ামতের দিন আল্লাহ পাক অনেক হাজী, নামাজী, দানবীরদের দোজখে যাওয়ার হুকুম প্রদান করবেন। তারা আল্লাহর নিকট জানতে চাইবে আমরা কেন দোজখে যাব? উত্তরে আল্লাহ পাক বলবেন, লোকে তোমাদেরকে পৃথিবীতে হাজী, নামাজী, দানবীর বলার জন্যই তা করেছো, তা তোমরা পৃথিবীতে পেয়ে গেছো। তোমাদের উদ্দেশ্যে পূরণ হয়েগেছে। তোমরা আমার নৈকট্য অর্জনের জন্য তা করনি বলেই আজ তোমরা দোজখের অধিবাসী হও। ‘রিয়া’(লোক দেখানো)’ র কারণে যখন সব ইবাদতের পুণ্য নষ্ট হয়ে যাবে তখনই রোজার পুণ্যের কারণে মানুষ দোজখের আজাব হতে মুক্তি পাবে। কারণ রোজার মধ্যে ‘রিয়া’ নেই বলেই রোজা আল্লাহর কাছে গ্রহণীয়।
বিখ্যাত সাহাবী হযরত আবু উমামা (রা.) মহানবী হযরত মুহম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট হাজির হয়ে জিজ্ঞেস করলেন, কোন কাজ করলে আল্লাহ গ্রহণ করবেন? উত্তরে তিনি বললেন, ‘তুমি রোজা রাখো’।
অন্যত্র এক হাদিসে প্রিয় নবী মাহবুবে খোদা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বর্ণনা করেছেন, আল্লাহ পাক ইরশাদ করেছেন, আদম সন্তানের প্রত্যেক কাজ নিজের জন্য এবং যে নিজের জন্য পুণ্য কাজ করলো সে দশ থেকে সাত শত গুণ পর্যন্ত পুণ্য পাবে। কিন্তু রোজা আমার জন্য এবং এর প্রতিদান আমি স্বয়ং নিজেই দিব । কেননা ক্ষুধা, পানাহার , কামনা বাসনা ত্যাগ সে আমার জন্যই করেছে। তাই আমিই এর প্রতিদান দিব। অর্থাৎ রোজা হলো ইবাদত এক তার প্রতিদান অশেষ। (মুসলিম শরীফ)
রমজানের রোজার মাধ্যামে মানুষ ধনী গরিবের দুঃখ কষ্ট অনুধাবন করা যায়। দুঃস্থ মানব সমাজের মৌলিক অধিকার সম্পর্কে অনুধাবন করার মাধ্যামে মানব মনে গরীবের ভালোবাসা, সহমর্মিতা ও দায়িত্ববোধের জন্ম দেয়। রোজা অন্যের দোষ ত্রুটি ক্ষমা করার শিক্ষা প্রদান করে। প্রিয় নবী হযরত মুহম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বর্ণনা করেছেন, ‘তোমরা যদি পৃথিবীতে অপরের প্রতি দয়াবান হও তাহলে বেহেস্তের অনুগ্রহ প্রাপ্ত হবে। অর্থাৎ কেউ অন্যের প্রতি অনুগ্রহশীল হলে আল্লাহ তাঁর প্রতি অনুগ্রহশীল হবেন’।