কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক দেশে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে এখন মধু উৎপাদন হচ্ছে বলে জানিয়েছেন । তিনি বলেছেন, চলতি বছরে জাপানে চারশ মেট্রিক টন মধু রপ্তানির অর্ডার পাওয়া গেছে, যা অত্যন্ত খুশির খবর।
সোমবার রাজধানীর ফার্মগেটে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি) চত্বরে তিন দিনব্যাপী জাতীয় মৌ মেলা-২০২০ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আয়োজিত এক সেমিনারে কথা বলছিলেন কৃষিমন্ত্রী।
মেলা উপলক্ষে ‘পুষ্টি নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির জন্য মৌচাষ’ বিষয়ক সেমিনারটির আয়োজন করা হয়।
কৃষির আধুনিকায়ন ও বাণিজ্যিকীকরণে মধু একটি নতুন সংযোজন উল্লেখ করে আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘মধু আমাদের রপ্তানি বহুমুখীকরণে সহযোগিতা করবে। আগে সীমিত আকারে উৎপাদন হলেও এখন বাণিজ্যিক ভিত্তিতে মধু উৎপাদন শুরু হয়েছে।’
‘আর এই মধু বিদেশে রপ্তানি করার সুযোগ রয়েছে। আমরা যদি নিশ্চয়তা দিতে পারি, আমাদের মধু স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর নয় আর আধুনিক উপায়ে উৎপাদিত- তাহলে বিদেশে রপ্তানি করা যাবে।’
এসময় মন্ত্রী জানান, মৌ চাষে জড়িতদের অনেকেই এখন নতুন প্রযুক্তির মাধ্যমে মধু উৎপাদন করছে। পাশাপাশি প্রক্রিয়াকরণেও প্রযুক্তির ব্যবহার করা হচ্ছে। মৌ চাষ পরাগায়নের মাধ্যমে ফল ও ফসলের উৎপাদন বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ফসলের মাঠে মৌ চাষ কৃষকের জন্য বাড়তি আয়েরও সংস্থান করে।
পুষ্টিকর ও নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করা বর্তমান সরকারের নির্বাচনী অঙ্গীকার ছিল জানিয়ে তিনি বলেন, ‘এ ক্ষেত্রে পুষ্টিচাহিদা নিশ্চিত করতে মধু একটি অনন্য খাদ্য। কৃষিপ্রধান আমাদের দেশে মৌমাছি পালন, উন্নয়ন ও সম্প্রসারণের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে।’
কৃষির চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে ও রপ্তানি বহুমুখীকরণের মাধ্যমে মুজিববর্ষ সমৃদ্ধির বছর হবে মন্তব্য করে আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘মূল্যবান মৌ সম্পদ এবং মধু উৎপাদন ও বিপণনের মাধ্যমে স্থানীয় চাহিদা পূরণের পাশাপাশি মধু রপ্তানির মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন সম্ভব।’
বাংলাদেশ কৃষিক্ষেত্রে অসাধারণ সাফল্য অর্জন করেছে মন্তব্য করে কৃষিমন্ত্রী বলেন, ‘দানাদার খাদ্যে এখন আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ। আলুতে আমরা উদ্বৃত্ত রয়েছি। এ রকম আমরা অনেক ফসলে সারপ্লাস রয়েছি। কৃষি পণ্যগুলোর ক্ষেত্রে প্রক্রিয়াজাত ও মূল্য সংযোজন করে এমন পণ্য উৎপাদন করতে হবে যেসবের বাজারমূল্য অনেক বেশি।’
সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। অন্যদের মধ্যে কৃষি সচিব মো. নাসিরুজ্জামান, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবদুল মুঈদ, বিএআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মোহাম্মদ বখতিয়ার প্রমুখ এসময় উপস্থিত ছিলেন।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে চতুর্থবারের মতো তিনদিনব্যাপী এই মেলায় ছয়টি সরকারি ও ৬৮টি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত সর্বসাধারণের জন্য মেলা উন্মুক্ত থাকবে।