ঢাকা : ঐতিহাসিক পলাশী ট্র্যাজেডি দিবস আজ ২৩ জুন। ১৭৫৭ সালের এই দিনে ইতিহাসের প্রাসাদ ষড়যন্ত্রে যুদ্ধের প্রহসন হয়েছিল পলাশীর আমবাগানে। সেদিন বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার শেষ স্বাধীন নবাব তরুণ সিরাজউদ্দৌলাকে পরাজিত করার মাধ্যমে স্বাধীনতা সূর্য অস্তমিত হয়। বেদনাবহ স্মৃতিকে স্মরণ করে এ দিনটিকে পালন করে এ অঞ্চলের মানুষ। দিবসটি উপলক্ষে আজ বিভিন্ন সংগঠন আলোচনা সভা, শোভাযাত্রা ও সেমিনারের আয়োজন করেছে।
ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, ষোল শতকের শেষের দিকে ওলন্দাজ, পর্তুগিজ ও ইংরেজদের প্রাচ্যে ব্যাপক বাণিজ্যের প্রসার ঘটে। একপর্যায়ে ইংরেজরা হয়ে যায় অগ্রগামী। বাংলার সুবেদার-দেওয়ানরাও ইংরেজদের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলে। ১৭১৯ ঈসায়ী সালে মুর্শিদ কুলি খাঁ বাংলার সুবেদার নিযুক্ত হন। তার মৃত্যুর পর ওই বছরেই সুজাউদ্দিন খাঁ বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার সিংহাসন লাভ করেন। এ ধারাবাহিকতায় আলীবর্দী খাঁর পর ১৭৫৬ সালের ১০ এপ্রিল সিরাজউদ্দৌলা বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার সিংহাসনে আসীন হন। তখন তার বয়স মাত্র ২২ বছর। তরুণ নবাবের সঙ্গে ইংরেজদের বিভিন্ন কারণে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়। এছাড়া রাজসিংহাসনের জন্য লালায়িত ছিলেন সিরাজের পিতামহ আলীবর্দী খাঁ’র বিশ্বস্ত অনুচর মীর জাফর ও খালা ঘষেটি বেগম। ইংরেজদের সঙ্গে তারা যোগাযোগ স্থাপন করে। এরপর নবাবের বিরুদ্ধে নীলনকশা পাকাপোক্ত করে তারা।
১৭৫৭ সালের ২৩ এপ্রিল কলকাতা পরিষদ নবাবকে সিংহাসনচ্যুত করার পক্ষে প্রস্তাব পাস করে। এই প্রস্তাব কার্যকর করতে ইংরেজ সেনাপতি লর্ড ক্লাইভ রাজদরবারের অভিজাত সদস্য উমিচাঁদকে ‘এজেন্ট’ নিযুক্ত করে। ২৩ জুন ভাগীরথী নদীর তীরে পলাশীর আমবাগানে সকাল সাড়ে ১০টায় ইংরেজ ও নবাবের মধ্যে যুদ্ধ সংঘটিত হয়। মীর মদন ও মোহন লালের বীরত্ব সত্ত্বেও জগত্ শেঠ, রায়দুর্লভ, উমিচাঁদ, ইয়ার লতিফ প্রমুখ কুচক্রী প্রাসাদ ষড়যন্ত্রকারীর বিশ্বাসঘাতকতায় নবাবের পরাজয় ঘটে। সেই সঙ্গে বাংলার স্বাধীনতার লাল সূর্য পৌনে দুইশ’ বছরের জন্য অস্তমিত হয়।