দশম শ্রেণির মেধাবী ছাত্রী তাহমিনা আক্তার চিরকুট লিখে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে মানিকগঞ্জের দরগ্রাম ইউনিয়নের মধ্য রৌহা গ্রামে। এদিকে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মানিকগঞ্জ হাসপাতালে পাঠিয়েছে।
স্থানীয় ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, সাটুরিয়ার মধ্যেরৌহা গ্রামের মৃত খোরশেদ মিয়ার মেয়ে গোপালপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে লেখাপড়া করে। স্কুলের পাশেই ৯ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ মাসুদ মিয়ার ছেলে মোঃ রেদুয়ানের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। রেদুয়ান হোসেন সরকারি দরগ্রাম ভিকু মেমোরিয়াল ডিগ্রি কলেজের এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র।
দুজনার গোপন মুহুর্তের ভিডিও করে রেদুয়ান। ওই ভিডিও ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে তাহমিনাকে একাধিকবার দৈহিক মিলনে বাধ্য করে। তাহমিনা কাউকে না বলে শুক্রবার রাতে মায়ের সঙ্গে রাতের খাবার খেয়ে নিজ ঘরের বারান্দার কোঠায় ঘুমাতে যায়। শনিবার রাত দুইটার সময় মা মেয়েকে ডাকলে সে সাড়া দেয় না।
পরে ঘরের দরজা ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করে দেখে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
তবে মৃত্যুর আগে সে একটি চিঠি লিখে গেছে। ওই চিঠিতে লেখা রয়েছে, আমাকে ক্ষমা কর মা। আমি আর সইতে পারছি না। আমি জানি অনেকের সাথে আমি খারাপ ব্যবহার করেছি। পারলে আমাকে ক্ষমা করে দিও। বন্ধু বান্ধবীদের বলেছে, তোরা ভালো থাকিস। আমি ওপারে চলে গেলাম।
তাহমিনার মামা আব্দুস সোবহান মিয়া জানান, তাহমিনার মোবাইল থেকে পুলিশ একটি ভিডিও উদ্ধার করেছে। এছাড়া তাহমিনার বান্ধবীরাও পুলিশকে জানিয়েছে, কিভাবে ওই বখাটে রেদুয়ান রাস্তাঘাটে মানসিক নির্যাতন করত। এক পর্যায়ে রেদুয়ানকে তাহমিনা বিয়ের চাপ দিলে সে অপত্তিকর ছবি মোবাইলে ছড়িয়ে দেয়ার হুমকি দিত বলে পরিবার সূত্রে জানা গেছে। এ ঘটনায় বখাটে রেদুয়ানের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করার কথা জানায় তারা।
সাটুরিয়া থানার ওসি মোঃ মতিয়ার রহমান মিঞা বলেন, এব্যাপারে থানায় একটি ইউডি মামলা করা হয়েছে। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। মেয়েটির মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়েছে। তার ওই মোবাইলে কি প্রমাণ আছে তা তদন্তের করে অভিযুক্তর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান।