ঢাকা :আদালত লোহিত সাগরে মিশরের অধীনে থাকা দুটি দ্বীপ সৌদি আরবকে হস্তান্তরে মিশরীয় সরকারের সিদ্ধান্ত বাতিল করেছে দেশটির একটি আদালত। এর আগে চলতি বছরের এপ্রিলে সৌদি বাদশা সালমানের মিশর সফরের সময় লোহিত সাগরের দ্বীপ তিরান এবং সানাফির সৌদি আরবকে প্রদান করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদুল ফাত্তাহ আল সিসি।
সরকারের ওই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে তখন রাস্তায় নেমেছিল মিশরের জনগণ। বিক্ষোভকালে ১৫০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। পরে অবশ্য তাদের মুক্তি দেয়া হয়। তবে মঙ্গলবার দেয়া মিশরীয় আদালতের ওই রায়ই চূড়ান্ত রায় নয়। উচ্চ আদালত চাইলে তা বাতিল করতে পারে।
উল্লেখ্য, লোহিত সাগরের আকাবা উপসাগরে অবস্থিত তিরান এবং সানাফির মূলত জনমাবনহীন দুটি দ্বীপ। দ্বীপ দুটির নিয়ন্ত্রণ ছেড়ে দিতে সিসির সিদ্ধান্ত শুধু দেশেই নয়, বিদেশেও সমালোচিত হয়েছে। শেষ পর্যন্ত সিসি যুক্তি দেখিয়েছেন, আগেও ওই দ্বীপগুলোর মালিক ছিল সৌদি আরব।
১৯৫০ সালে সৌদি আরবের অনুরোধের প্রেক্ষিতে তিরান ও সানাফিরে সেনা মোতায়েন করে মিশর সরকার। তবে তা সত্ত্বেও দ্বীপ দুটি ফেরত দেয়ার প্রক্রিয়াকে অসাংবিধানিক বলে আখ্যা দিয়েছেন সমালোচকরা।
এরই প্রেক্ষিতে মিশরের প্রশাসনিক আদালত সিসির সিদ্ধান্ত বাতিল করে রায় দেয়। মূলত সরকারের বিরুদ্ধে করা মামলাগুলো দেখাশোনার দায়িত্বে থাকে প্রশাসনিক আদালত। তাদের রায়ে বলা হয়েছে, দ্বীপ দুটি মিশরীয় সার্বভৌমত্বের অধীনেই থাকবে।
প্রশাসনিক উচ্চ আদালত যদি এই রায় অনুমোদন দেয় তবে তা আইনে পরিণত হবে। সিসির এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালতে মামলাটি দায়ের করেছিলেন মিশরের আইনজীবী ও মানবাধিকার কর্মী খালেদ আলি।
প্রসঙ্গত, মিশরের প্রথম গণতান্ত্রিক সরকারের প্রধান মোহাম্মদ মুরসিকে অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত করে ২০১৩ সালে ক্ষমতা দখল করে মিশরের সামরিক শাসক সিসি। অভিযোগ আছে, ক্ষমতা দখলের পর থেকে ১ হাজার লোককে হত্যা এবং ৪০ হাজার লোককে কারাবন্দী করেছে সিসি সরকার, যাদের বেশিরভাগই মুসলিম ব্রাদারহুডের সদস্য।