জাতীয় পার্টির সাবেক এমপি প্রকৌশলী এম তালহা প্রতারক চক্রের খপ্পরে পড়ে ৯০ লাখ টাকা খুইয়েছেন । ম্যাগনেটিক রাইস কয়েনের মাধ্যমে ব্যবসার প্রলোভন দেখিয়ে প্রতারক চক্রটি তার কাছ থেকে ৯০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এ ঘটনায় গতকাল রবিবার রাজধানীর বনানী এলাকা থেকে প্রতারক চক্রের তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।  

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- জসিম উদ্দিন, সুজন মিয়া ও লাল মিয়া। এসময় তাদের কাছ থেকে ২০ লাখ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।

সোমবার দুপুরে রাজধানীর মালিবাগে সিআইডি সদর দপ্তরে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার মোস্তফা কামাল।

বনানী থানায় সাবেক সাংসদ তালহার করা মামলার তদন্ত করতে গিয়ে প্রতারক চক্রটির তিন সদস্যকে ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করে সিআইডি।

সিআইডি কর্মকর্তা মোস্তফা জানান, “প্রতারক চক্রটি ২০১৯ সালের জুলাইয়ে জাতীয় পার্টির সাবেক সংসদ সদস্য শিল্পপতি প্রকৌশলী এম তালহাকে জানায়, তাদের কাছে বহু মূল্যবান ম্যাগনেটিক রাইস কয়েন আছে। ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ আমলের এ ম্যাগনেটিক কয়েনের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে আন্তর্জাতিক বাজারে। আমেরিকার স্পেস রিসার্চ সেন্টার নাসার কাছে কোটি টাকায় বিক্রি করা যাবে এই কয়েন।”

মোস্তফা কামাল বলেন, কৌতূহলী হয়ে কথিত কয়েনটি দেখার ইচ্ছা প্রকাশ করেন ওই নেতা। এরপর তাদের মধ্যে চলে কয়েনের দরদাম। ওই নেতাকে বলা হয়, তাদের পূর্বপরিচিত ভারতীয় খ্যাতনামা কোম্পানির একজন প্রতিনিধি বর্তমানে বাংলাদেশে অবস্থান করছেন। তিনি কয়েনগুলো কেনায় ব্যাপক আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে সিআইডির এই কর্মকর্তা বলেন, সাবেক সাংসদ তালহা রাজি হলে তাকে গুলশানের ওয়েস্টিন হোটেলে নিয়ে যায় প্রতারক চক্রটি। সেখানে চক্রের আরেক সদস্য আমিনুল ইসলাম নিজেকে ইউরেনিয়াম এনার্জি লিমিটেডের সিনিয়র টেকনিশিয়ান হিসেবে দাবি করেন। তিনি দাবি করেন, বাংলাদেশের অনেক নামি প্রতিষ্ঠান, ব্যক্তি তার মাধ্যমে ম্যাগনেটিক কয়েনের ব্যবসা করেই সুপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

মোস্তফা কামাল বলেন, জাতীয় পার্টির ওই নেতা আগ্রহ দেখালে প্রতারক চক্রের একাধিক সদস্য বিভিন্ন সময়ে তার বাসায় আসেন। নানান ধরনের কথা বলে তাদের সঙ্গে ম্যাগনেটিক কয়েন ব্যবসায় বিনিয়োগে প্রলুব্ধ করেন। কথিত কয়েনের মালিকের কাছ থেকে কয়েনের ইউনিট ক্রয়, আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করে রিপোর্ট সংগ্রহ, প্যাকিং প্রক্রিয়া, বিদেশি ক্রেতা প্রতিষ্ঠান প্রতিনিধির বিভিন্ন ব্যয়ভার বহন, বিক্রয় মধ্যস্থতাকারী এজেন্টের পাওনা অগ্রিম দেওয়াসহ বিভিন্ন কথা বলে ওই নেতার কাছ থেকে ৯০ লাখ ৪ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়।

মোস্তফা কামাল বলেন, এক পর্যায়ে ভিকটিম তালহা বুঝতে পারেন তিনি প্রতারিত হয়েছেন। এরপর গতবছরের সেপ্টেম্বরে ডিএমপির বনানী থানায় এ বিষয়ে একটি মামলা করেন। পরে মামলাটির তদন্ত শুরু করে সিআইডি। রবিবার সিআইডি জানতে পারে প্রতারক চক্রটি আবারও ভিকটিম তালহাকে রাইস কয়েনের প্রলোভন দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। এমন তথ্যের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে প্রতারক চক্রের তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়।

Share Now
January 2025
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031