সুনামগঞ্জ-১ আসনের এমপি মোয়াজ্জেম হোসেন রতনকে তলব করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) অনিয়মের মাধ্যমে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করে শত শত কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে । আজ সোমবার দুপুরে তার ন্যাম ভবনের ঠিকানায় সংস্থাটি থেকে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি পাঠানো হয়।
দুদকের পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেনের স্বাক্ষর করা ওই চিঠিতে বলা হয়, গোলাম কিবরিয়া শামীম ওরফে জি কে শামীম ঠিকাদারসহ বিভিন্ন ব্যক্তিদের সাথে অবৈধ প্রক্রিয়ায় পরস্পর যোগ সাজশে ঘুষ দেয়া নেয়ার মাধ্যমে বড় বড় ঠিকাদারি কাজ নিয়ে বিভিন্ন অনিয়মের মাধ্যমে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ, ক্যাসিনো ব্যবসা ও অন্যান্য অবৈধ কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে শত শত কোটি টাকা অবৈধ প্রক্রিয়ায় অর্জন পুর্বক বিদেশে পাচার ও জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন সংক্রান্ত অভিযোগ রয়েছে এমপি রতনের বিরুদ্ধে।
এসব অভিযোগ অনুসন্ধানের স্বার্থে আগামী ১৮ই ফেব্রুয়ারি দুদকের প্রধান কার্যালয়ে এসে বক্তব্য প্রদানের জন্য এমপিকে অনুরোধ করা হয় ওই চিঠিতে।
গত বছর ১৮ই সেপ্টেম্বর দেশব্যাপি শুদ্ধি অভিযানের পর থেকেই এমপি রতনের নাম উঠে আসে। দুদক, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এমনকি স্বারষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে একাধিক অভিযোগপত্র জমা পড়ে তার বিরুদ্ধে। গত ১৪ই নভেম্বর শিরোনামে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। এরপরই এমপি রতনের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে দুদক।
তারই ধারাবাহিকতায় এবার সংস্থাটি তাকে তলব করেছে।
সূত্র মতে, এমপি রতন ঘুষ লেনদেন, সরকারি অর্থ আত্মসাতসহ নানা অবৈধ কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ সম্পদের মালিক হয়েছেন। রাজধানী ঢাকা, সুনামগঞ্জ, ধর্মপাশা, নেত্রকোনা ও মোহনগঞ্জে ১৩টি বাড়ির মালিক। এর মধ্যে ধর্মপাশায় নিজ গ্রামে ১০ কোটি টাকায় ‘হাওর বাংলা’ নামে বিলাসবহুল বাড়ি নির্মাণ করেছেন। বাড়িটির অধিকাংশ জমি সংখ্যালঘু সমপ্রদায়ের এক ব্যক্তির কাছ থেকে দখল করা। সুনামগঞ্জ শহরের মল্লিকপুরে জেলা পুলিশ লাইনসের বিপরীতে ৭ কোটি টাকায় বাড়ি কেনেন রতন। যার নাম দেয়া হয়েছে ‘পায়েল পিউ’। বাড়িটি এক লন্ডন প্রবাসীর কাছ থেকে কিনে নেন তিনি। ধর্মপাশা উপজেলা সদরে তার আরও সাতটি বাড়ি রয়েছে। মোহনগঞ্জ উপজেলা সদরেও রয়েছে দুটি বাড়ি। নেত্রকোনা জেলা শহরেও একটি বাড়ি রয়েছে। নেত্রকোনা শহরে তার মা-বাবার নামে মেডিকেল কলেজ করার জন্য প্রায় ৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে জমি ক্রয় করেছেন তিনি। এছাড়া ঢাকার গুলশানের নিকেতনের কয়েকটি ফ্ল্যাটের মালিক রতন। অভিযোগ মতে, গত কয়েক বছরে তার সহোদর যতন মিয়ার নামে ৫০০ একর জমি কেনা হয়েছে।