স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বিবৃতি দিয়েছে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গত ১লা  ফেব্রুয়ারি কিছু সংখ্যক বাংলাদেশি এবং চীনা যাত্রী বিমান বন্দরের ইমিগ্রেশন ও আশপাশের এলাকায় অনেকক্ষণ অপেক্ষমান থাকা নিয়ে সামাজিক ও গণমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন আলোচনার প্রেক্ষিতে প্রকৃত পরিস্থিতি সম্পর্কে।

আজ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের  রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) থেকে পাঠানো প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ঘটনাটি ১লা  ফেব্রুয়ারি ২০২০-এর। ঐদিন চীনের উহান থেকে ৩১২জন বাংলাদেশি যাত্রী নিয়ে বাংলাদেশ বিমানের একটি বিশেষ বিমান ঢাকায় আসে। এদের অধিকাংশকেই কোয়ারেন্টাইনের জন্য আশকোনার হজ ক্যাম্পে রাখা হয়। কয়েকজনকে সিএমএইচ ও কুর্মিটোলা হাসপাতালে রাখা হয়। ইতিমধ্যে চীন থেকে আসা সকল ফ্লাইটের যাত্রীদেরও কোয়ারেন্টাইনে রাখা হবে কিনা এই মর্মে বিমান বন্দরে কর্মরত বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের মধ্যে বিভ্রান্তি দেখা দেয়।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার পরামর্শ মোতাবেক স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের মতামত ছিল কেবল মাত্র উহান ফেরত যাত্রীদেরই কোয়ারেন্টাইনে রাখা এবং চীনের অন্য অঞ্চল থেকে আসা যাত্রীদের লক্ষণ থাকা সাপেক্ষে কোয়ারেন্টাইনের সিদ্ধান্ত  নেয়া। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও বিশেষজ্ঞগণের সমন্বয়ে বিমান বন্দরে দীর্ঘ আলোচনার পর স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের মতানুযায়ীই সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত হয়। কিন্তু, এতে যথেষ্ট বিলম্ব হয়।

যাত্রীরা যথারীতি থার্মাল স্ক্যানার মেশিন পার হয়ে ইমিগ্রেশন এলাকায় আসে। কিন্তু, ইমিগ্রেশন এলাকা থেকে প্রক্রিয়া শেষ করে বিমান বন্দর ত্যাগ করতে না দেয়ায় সেখানে বেশ ভীড় হয়। কিছু সংখ্যক যাত্রী উত্তেজিত হয়ে পড়েন এবং থার্মাল স্ক্যানার এলাকায়ও ভীড় চলে আসে। কয়েকজন যাত্রীকে মার মুখীও দেখা যায়। নিজেকে রক্ষা করতে স্বাস্থ্য সহায়তা ডেস্কে কর্মরত স্বাস্থ্যকর্মীরা কিছুক্ষণের জন্য একটু দূরে অবস্থান করতে বাধ্যহন এবং সেখান থেকে থার্মাল স্ক্যানারের দিকে নজর রাখতে চেষ্টা করেন।

একজন স্বাস্থ্যকর্মী মোবাইল ফোনে ধারনকৃত উত্তেজনাকর পরিস্থিতির ভিডিও চিত্রও দেখিয়েছে। থার্মাল স্ক্যানারে লক্ষণ ধরা না পড়া যাত্রীদের স্বাস্থ্য কার্ডেই ok লিখে দেয়া হয়েছে যাতে সহজে ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে পারে। যাত্রীদের প্রয়োজনীয় সতর্কতা পরামর্শও দেয়া হয়েছে। পরিস্থিতির উপর স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের তাৎক্ষণিক কোন নিয়ন্ত্রণ ছিল না। তবে যাত্রীদের বিড়ম্বনা হয়। সেজন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তর  আন্তরিকভাবে দুঃখিত। ঘটনার পরপরই স্বাস্থ্য অধিদপ্তর হযরত শাহজালাল বিমান বন্দরে ১০জন অতিরিক্ত চিকিৎসক পদায়ন করেছে। পর্যাপ্ত সংখ্যক চিকিৎসক, নার্স ও সেনিটারি ইন্সúেক্টর যথা নিয়মে দায়িত্ব পালন করছেন। সকল কর্তৃপক্ষের সাথে সমন্বয় বৃদ্ধি করা হয়েছে। এই অভিজ্ঞতার আলোকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর দেশের সকল বিমান, নৌ ও স্থলবন্দরের স্বাস্থ্য সহায়তা ডেস্কের সার্বিক কার্যক্রমের জন্য পরামর্শ ও নজরদারি বৃদ্ধি করেছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বলতে চায় যে, এধরণের আন্তর্জাতিক জরুরি জনস্বাস্থ্য পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য সর্বসাধারণের সহযোগিতা একান্ত প্রয়োজন। আমরা বিশ্বাস করি সংশ্লিষ্ট সকল সরকারি কর্তৃপক্ষ, মহল ও জনসাধারণের সম্মিলিত প্রয়াসে এ জরুরি পরিস্থিতিকেও মোকাবেলা করা যাবে।

Share Now
December 2024
M T W T F S S
 1
2345678
9101112131415
16171819202122
23242526272829
3031