নির্বাচন কমিশন (ইসি) নির্বাচনী প্রচারণায় পোস্টার ও মাইকের ব্যবহার চায় না। এসবের বাইরে প্রার্থীদের নির্বাচনী প্রচারণার জন্য কী ধরনের সুযোগ দেয়া যায় সে বিষয়ে চিন্তা ভাবনা করছে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি।
আগারগাঁওস্থ নির্বাচন ভবনে মঙ্গলবার বিকালে ঢাকার দুই সিটি নির্বাচন পর্যালোচনা করতে জরুরি বৈঠকে বসে ইসি। সেখানে এ বিষয়ে প্রাথমিক আলোচনা হয় বলে জানা গেছে।
জানা যায়, বৈঠকে একটি লিখিত প্রস্তাব করেন নির্বাচন কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম। তার মতে নির্বাচনে বর্তমানে যে প্লাস্টিকের লেমিনেটিং করা পোস্টার ব্যবহার করা হচ্ছে এতে পরিবেশের মারাত্মক বিপর্যয় হচ্ছে। এছাড়া কেবল কাগজের তৈরি পোস্টারও যদি ড্রেনে যায়, তাহলে জলাবদ্ধতা ব্যাপক আকার ধারণ করবে। ঢাকা সিটি নির্বাচনে প্লাস্টিকে মোড়ানোর পোস্টারগুলো সরিয়ে নেওয়া হলেও পরিবেশ বিপর্যয় ঠেকানো যাবে না। কেননা, এগুলো পোড়ালে পরিবেশ দূষণ হবে। মাটিতে ফেললেও পরিবেশ দূষণ হবে। তাই পোস্টার ছাড়া নির্বাচনী প্রচারণা নিয়ে ভাবা প্রয়োজন।
এছাড়া নির্বাচনে মাইক ব্যবহারের আইনি অনুমতি থাকলেও বাস্তবে যেভাবে লাউড স্পিকার ব্যবহার করা হয়, তাতে দুপুর ২টা থেকে ৮টার সময়সীমা কেউ মানে না। এছাড়া একাধিক স্পিকার ব্যবহার করা হয় উচ্চমাত্রায়। ফলে ব্যাপক শব্দ দূষণের সৃষ্টি হয়।
অন্যদিকে নির্বাচনী প্রচারের নামে মিছিল, শোডাউন করে ফেলেন অনেকে। যদিও এটা আইন বৈধতা নেই। এতে যানজটের সৃষ্টি হয়ে দুর্ভোগের সীমা থাকে না।
আর এজন্য পরিবেশবান্ধব, শব্দ দূষণমুক্ত এবং যানজটহীন নির্বাচনী প্রচার ব্যবস্থা গড়ে তোলার পক্ষে অবস্থান এই নির্বাচন কমিশনারের।
বৈঠক সূত্র জানিয়েছেন, রফিকুল ইসলামের প্রস্তাবে একমত প্রকাশ করেছেন অন্যান্য কমিশনাররা। এক্ষেত্রে নির্বাচনী আচরণবিধি সংশোধনের উদ্যোগ নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে এজন্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনার কথাও ওঠে আসেন বৈঠকে।
এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, আমরা তিনটি বিষয়কে মাথায় রেখেছি। আর তা হলো- পরিবেশ দূষণ, শব্দ দূষণ ও যানজটমুক্ত নির্বাচনী প্রচার। এটার জন্য যা যা করা দরকার আমরা সবাই করবো। রাজনৈতিক দলের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলা হবে বলেও জানান তিনি।
রফিকুল বলেন, এ বিষয়ে আমাদের কোনো আইন নেই। আইন সংস্কার করতে হবে। তাছাড়া সেটি না হলেও আপাতত নির্বাচন কমিশনের যে ক্ষমতা আছে, সেই বলে আমরা এগুলো বন্ধ রাখবো।