ঢাকা : রেজাউল করিম হিল্লোল সহকারী কমিশনার (এসি) ঢাকা কাস্টমস হাউজের এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এর আগে কখনো খেলনা সাইকেল থেকে স্বর্ণ জব্দ করা হয়নি। সোমবার (২০ জুন) সকালে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মালয়েশিয়া থেকে আসা মিজানুর রহমানের খেলনা সাইকেল থেকে এভাবেই এক কেজি স্বর্ণ জব্দ করেছেন ঢাকা কাস্টমস হাউজের কর্মকর্তারা।
স্যার, ছেলের শখ সাইকেল কিনেছি। দেশ থেকে না কিনে সুদূর মালয়েশিয়া থেকে আনতেছি’। ‘নিজের কাছে কেন, স্বর্ণ কই?’- প্রশ্ন ছুড়তেই জবাব, ‘আমায় দেখে কি স্বর্ণ চোরাচালানি মনে হয়?’
‘নিশ্চিত তথ্য জেনেই তো আপনাকে জিজ্ঞাসা করা হল’। তল্লাশি শেষে কুমিল্লার সাদাসিধে চল্লিশোর্ধ্ব মিজানুর রহমানের আবারও উত্তর- ‘সাইকেল ছাড়া তো আমার কাছে কিছুই নেই’।
‘তাহলে স্বর্ণ গেল কই?’ কাস্টমস কর্মকর্তারা হতবাক। সিদ্ধান্ত হল, সাইকেল তল্লাশি করা হবে। এতোটুকু সাইকেলের কোথায় স্বর্ণ থাকবে? এবার সিদ্ধান্ত স্ক্যানিংয়ের। স্ক্যানিংয়ে ধরা পড়ল, সাইকেলের রডের ভেতরেই আছে স্বর্ণ।
সকাল ৭টা ৩৯ মিনিটে আরএক্স ৭৮৩ ফ্লাইটযোগে মালয়েশিয়া থেকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আসেন মিজানুর রহমান।
ফ্লাইটটি বিমানবন্দরে অবতরণের পর থেকেই সর্তক ছিলেন কাস্টমস কর্মকর্তারা। গ্রিন চ্যানেলে চলে বাড়তি নজরদারি। খেলনা সাইকেল নিয়ে গ্রিন চ্যানেলে আসার পরপরই যাত্রী মিজানুরকে টার্গেট করেন কর্মকর্তারা।
জিজ্ঞাসাবাদে ছেলের জন্য সাইকেল আনার কথা বললে সন্দেহ আরো বাড়ে। শরীরে স্বর্ণ না পেয়ে সাইকেল স্ক্যানিং করা হয়। স্ক্যানিংয়ে সাইকেলের নিচের রড়ের মধ্যে স্বর্ণ জাতীয় কিছু দেখতে পান কাস্টমস কর্মকর্তারা।
আবার মিজানুরকে জিজ্ঞাসাবাদ। কিভাবে স্বর্ণ সেখানে রাখা হল? অবস্থা বেগতিক দেখে মিজানুর সরল উত্তর, ‘আমাকে একজন ট্রাভেল এজেন্সির মালিক দিয়েছেন। বলেছেন, সাইকেলটি বিমানবন্দর থেকে একজন তার ছেলের জন্য নিয়ে যাবেন’।
ভয়ে আবারো বলতে থাকেন, ‘স্যার, আমি কখনো স্বর্ণ আনি না। সাইকেলের মধ্যে স্বর্ণ ছিল, সেটাও জানতাম না। মালয়েশিয়ায় কাজ করে খাই। আমাকে মাফ করে দেন’।
সাইকেলের রড়ের মধ্য থেকে স্বর্ণ বের করতে পরে রড কাটার মিস্ত্রি আনা হয়। কেটে বের করা হয় প্রায় এক কেজি স্বর্ণ। যার মূল্য প্রায় ৫০ লাখ টাকা।
‘মিজানুর রহমানকে আরো জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এর সঙ্গে অন্য কেউ জড়িত কি-না তা খতিয়ে দেখা ও মিজানুরের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে’ বলেও জানান সহকারী কমিশনার রেজাউল করিম হিল্লোল।