গণধর্ষণের শিকার হয়েছে জামালপুরের এক নারী পোশাকশ্রমিক সাভারের আশুলিয়া থেকে বাড়ি ফেরার পথে । গত শুক্রবার সকালে টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার সাগরদিঘী এলাকায় রাস্তার পাশে অচেতন অবস্থায় গুরুতর অসুস্থ ওই নারীকে উদ্ধার করে স্থানীয়রা। খবর পেয়ে পরিবারের লোকজন তাকে সেখান থেকে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে।
গত বৃহস্পতিবার রাতে গাজীপুরের চাঁনধরা এলাকায় পিকআপে উঠার পর বর্বরোচিত এ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন নির্যাতনের শিকার ওই নারী। তার বাড়ি জামালপুর সদর উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নের মির্জাপুর গ্রামে।
হাসপাতালের চিকিৎসাধীন ওই গার্মেন্টসকর্মী জানান, গত বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে গার্মেন্টস ছুটি হলে তিনি আশুলিয়া থেকে বাসে গাজীপুরের চানধরা এলাকায় নামেন। সেখান থেকে জামালপুরে আসার উদ্দেশ্যে তিনি একটি পিকআপ গাড়িতে উঠেন। এ সময় ওই পিকআপে আগে থেকেই বসে থাকা মাঝবয়সী অজ্ঞাত একজন লোক কোথায় যাবে বলে তাকে জিজ্ঞেস করে। ওই লোক নিজেকে আগে সেনাবাহিনীতে চাকরি করেছেন বলে ওই নারীকে অভয় দেখিয়ে কোনো সমস্যা হবে না বলে জানায়। ওই নারী জামালপুরে যাবে শুনে পিকআপের চালকও বলে তারাও জামালপুরে যাবে। পিকআপ গাড়িটি চানধরা থেকে ছাড়ার পর কিছুদূর গিয়ে অন্যযাত্রীরা নেমে গেলেও তার পাশে থাকা যাত্রীটি একটি ফলের জুসের প্যাকেট কিনে ফের সেই পিকআপে উঠেন। জুসের প্যাকেটটি ওই নারীকে খেতে দেন। প্রথমে না করলেও সরল বিশ^াসে জুস খাওয়ার পরই অজ্ঞান হয়ে যান তিনি। ফলে কে কোথায় তাকে ধর্ষণ করে সাগরদিঘীতে রাস্তার পাশে ফেলে রেখে গেছে তার কিছুই বলতে পারছেন না তিনি।
নির্যাতনের শিকার ওই নারীর মা ও অন্যান্য নারী স্বজনরা ধারণা করছেন- তাকে একাধিক ব্যক্তি ধর্ষণ করেছেন।
তার মা জানান, তার শরীরে আঘাতের কোনো চিহ্ন নেই। দেখে মনে হচ্ছিল আধামরা হয়ে গেছে। তার গোপনাঙ্গে বেশ ক্ষত তলপেটে প্রচ- ব্যথা রয়েছে। নির্যাতনকারীরা তার ব্যাগে থাকা একজোড়া রূপার নূপুর, একসেট জামা, নগদ প্রায় পাঁচ হাজার টাকা ও একটি মোবাইল ফোন সেট নিয়ে ব্যাগটি তার পাশে ফেলে রেখে যায়।
সদর হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. মো. হাবিবুর রহমান ফকির ওই নারীর চিকিৎসা প্রসঙ্গে বলেন, ‘ওই নারীর নেশার ঘোর এখনও কাটেনি। তাকে সুস্থ করে তুলতে প্রয়োজনীয় জরুরি চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তার পরিবারের পক্ষ থেকে ধর্ষণের অভিযোগ করা হলেও এ সংক্রান্ত ডাক্তারি পরীক্ষা না করে আগেই কিছু বলা যাচ্ছে না। ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় আলামত সংগ্রহ করেছে কর্তব্যরত নার্সরা। ওই নারীর ডাক্তারি পরীক্ষার বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। চিকিৎসাধীন ওই নারীর জ্ঞান ফিরলেও বিছানা থেকে উঠে দাঁড়ানোর শক্তিটুকু নেই তার। স্মরণশক্তি একেবারেই লোপ পেয়ে গেছে।’
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সালেমুজ্জামান বলেন, ‘একজন এসআইকে হাসপাতালে পাঠিয়ে ওই নারীর পরিচয় ও ঘটনার যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করেছি। ওই নারীর দেওয়া তথ্য মতে ঘটনাস্থল ঘাটাইলের সাগরদিঘী হওয়ায় ঘাটাইল থানাতেই মামলাটি দায়ের করার জন্য তার স্বজনদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।’