আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের পরাজয়ের ভয়ে বিএনপি ঢাকার দুই সিটি নির্বাচন থেকে সরে যেতে অজুহাত খুঁজছে বলে মন্তব্য করেছেন।

শনিবার বেলা সোয়া একটায় রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে ব্র্যাক ড্রাইভিং স্কুলে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ১১ জন নারী গাড়ি চালকের মধ্যে সনদপত্র বিতরণ শেষে সাংবাদিকদের সামনে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

৩০ জানুয়ারি ভোটের দিন রেখে গত ২২ ডিসেম্বর ঢাকার দুই সিটির নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করেছিল ইসি।

ওই দিন সরস্বতী পূজা বলে তফসিল ঘোষণার পরপরই তার বিরোধিতা করেছিল পূজা উদযাপন পরিষদ ও হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদও ভোটের দিন পরিবর্তনের দাবি জানায়। কিন্তু তা আমলে নেয়নি ইসি। এর মধ্যে ভোটের তারিখ পরিবর্তনে হাইকোর্টে রিট আবেদন হলে তা খারিজ হয়ে যাওয়ার পর ইসি ৩০ জানুয়ারি ভোট করার বিষয়ে আরও শক্ত অবস্থান নেয়।

কিন্তু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী অনশন শুরু করলে এবং হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ কর্মসূচি ঘোষণা করলে ভোটের দিন বদলের দাবি জোরাল হয়ে ওঠে।

আওয়ামী লীগসহ অপরাপর রাজনৈতিক দলগুলো জানায়, ভোটের তারিখ পরিবর্তনে তাদের আপত্তি নেই। প্রধান প্রধান প্রার্থীরাও ভোটের তারিখ পরিবর্তনের বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করতে ইসিকে আহ্বান জানায়।

ভোটের তারিখ পেছানোর জনমত জোরাল হয়ে ওঠার প্রেক্ষাপটে গত শনিবার জরুরি বৈঠকে বসে ১ ফেব্রুয়ারি ভোটের তারিখ পুননির্ধারণ করে নির্বাচন কমিশন। ভোটের নতুন তারিখ নির্ধারণ করা হলেও ইভিএমে আপত্তি জানায় বিএনপি। বিএনপির দাবি নির্বাচন কমিশন তাদের অযোগ্যতা ঢাকার জন্য ইভিএম নিয়ে আসছে। সরকারি দলকে সাহায্য করার জন্যই কমিশন ইভিএম নিয়ে আসছে। সেজন্য প্রয়োজনে নির্বাচন পিছিয়ে দিয়ে ব্যালটের মাধ্যমে নির্বাচন পরিচালনা করার দাবি জানায় তারা।

ওবায়দুল কাদের বলেন, সিটি নির্বাচনে হেরে যাওয়ার আশঙ্কায় বিএনপি নানামুখী অজুহাত খুঁজছে। পরাজয়ের ভয়ে বিএনপি ঢাকার দুই সিটি নির্বাচন থেকে সরে যেতে চাচ্ছে।

সেতুমন্ত্রী বলেন, ‘অন্ধকারে ঢিল ছোঁড়ার মতো বক্তব্য দিলে তো হবে না। বিএনপি তথ্যপ্রমাণ নিয়ে আসুক। কোথায় সরকার আচরণবিধি লঙ্ঘন করছে। নির্বাচনকে প্রভাবিত করছে। এ পর্যন্ত যতগুলো নির্বাচন ইভিএম পদ্ধতিতে হয়েছে কোথায় তারা কারচুপির তথ্যপ্রমাণ পেয়েছে। তারা শুধু বলেই যাচ্ছে। বলার জন্যই এবং বিরোধীতার জন্যই তারা বিরোধীতা করছেন।

এর আগে সনদপত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে ওবায়দুল কাদের বলেন, গাড়ি চালকদের মতো রাজনীতিবিদরাও বেপরোয়া। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, রাজনীতিবিদদের কথামালা ফরমালিনের বিষের চেয়েও ভয়ঙ্কর। তাদের কথার কারণে সংঘাত সৃষ্টি হচ্ছে। জানি না কবে ধৈর্যের কাছে, শৃঙ্খলার কাছে ফিরবো।

সেতুমন্ত্রী বলেন, রাজনীতিতে বেপরোয়া চালক, সড়কেও বেপরোয়া, পথচারীও তেমন বেপরোয়া। কে কার কথা শোনে। আইন না মানার যে প্রবণতা এ দেশে, এটা কবে যে শেষ হবে। আমরা সবাই সড়ক নিরাপত্তা নিয়ে কথা বলছি, কিন্তু সড়কেতো শৃঙ্খলা নেই। মানুষ হামাগুড়ি দিয়ে আইল্যান্ড পার হচ্ছে। মা সন্তানকে নিয়ে সড়ক পার হচ্ছে। অথচ পাশেই ফুটওভার ব্রিজ। কে কাকে বোঝাবে।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, রাজধানীর সিটিং সার্ভিস হচ্ছে চিটিং সার্ভিস। গণপরিবহন নিয়ে এতো কাজ হচ্ছে, তারপরও ফলাফল আসছে না। বিআরটিসিতে শক্তিশালী সিন্ডিকেট রয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, সিন্ডিকেটের কারণে বিআরটিসি লাভের মুখ দেখে না। এ সিন্ডিকেট ভেঙে ফেলা কঠিন। তবুও চেষ্টা করছি বাধার প্রাচীর ভেঙে ফেলার জন্য। আমি হতাশ হবো না, যদিও হতাশ হওয়ার মতো অনেক কারণ রয়েছে। সড়কে প্রতিনিয়ত মানুষ মরছে। মন্ত্রী হিসেবে আমি দায় এড়াতে পারি না। অনেক পরিবার সড়কে প্রাণ হারাচ্ছে।

Share Now
January 2025
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031