নারী যোগ্যতা দিয়ে নিজেদের প্রমাণ করেছে, তারা ভোগ্যপণ্য নয় মানবাধিকার আইনজীবী এডভোকেট সালমা আলী বলেছেন। তারপরও কিছুসংখ্যক পুরুষ এখনও নারীকে মানুষ হিসেবে না দেখে ভোগ্যপণ্য হিসেবে দেখে। পুরুষের এই ধরনের মানসিকতার কারণেই সমাজে ধর্ষণের ঘটনা বেড়ে গেছে।
তিনি বলেন, ধর্ষণ প্রতিরোধের জন্য সরকারের যে ধরণের নজরদারি দরকার তার অভাব রয়েছে। বিশেষ করে ধর্ষণ মামলাগুলোর তদন্তের পদ্ধতি পুরানো আমলের, ফরেনসিক থেকে শুরু করে কোনকিছুই যুগোপযোগী করা হয়নি। আমাদের আইনে বলে দেয়া আছে যদি আসামী ধরা পড়ে, পনের দিনের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট দিয়ে দেবে। আমাদের অনেক কড়া আইন আছে। কিন্তু সবচেয়ে বড় ব্যাপার হলো আদালতে যাওয়ার জন্য যে সার্পোট, মানসিকতা, জবাবদিহিতা থাকার কথা সেই জিনিসগুলো নেই।
সেজন্য সব মিলিয়ে আমরা রেজাল্ট দেখি না।
সালমা আলী বলেন, ভুক্তভোগী পরিবারগুলো সাহস করে এগিয়ে আসে না। যারা আসে একটা পর্যায়ে তারা আপোষ করে ফেলে। তিনি বলেন, হাইকোর্ট একটি ভালো আদেশ দিয়েছেন, যেখানে বলা হয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, আইন মন্ত্রণালয় এবং সুপ্রিম কোর্ট তিনজনের সমন্বয়ে একটি নজরদারি কমিটি হবে- যারা পুলিশকে জবাবদিহির ভেতরে রাখবে এবং সেখানে ধর্ষণের মামলাগুলোর মাসে মাসে রির্পোট আসবে। কোন মামলা দেরি হলে কেনো দেরি হলো তার জন্য পুলিশ জবাবদিহি করবে।
এই মানবাধিকার আইনজীবী আরও বলেন, আদালতে নারীবান্ধব একটা পরিবেশ থাকবে, যেখানে ক্যামেরা ট্রায়াল থাকবে। একজন ভুক্তোভোগীকে ঘিরে সবধরণের সুরক্ষা বলয় থাকবে। তাহলে ভুক্তভোগী শেষ পর্যন্ত মামলাটি চালিয়ে যেতে পারে।
সালমা আলী বলেন, ফার্স্ট ট্র্যাক কোর্ট শুধু জেলা শহরগুলোতে দিলে হবে না, সবখানে দিতে হবে। তিনি আরও বলেন, যতদ্রুত সম্ভব সাক্ষ্য আইনের পরিবর্তন করা প্রয়োজন। আমাদের আইন আছে প্রয়োগ নেই। অপরাধ যা-ই হোক তার বিচার আইনের মাধ্যমেই হতে হবে।
বাংলাদেশ মহিলা আইনজীবী সমিতির সাবেক এই নির্বাহী পরিচালক বলেন, বিচার না করে বিনা বিচারে গুলি করে মেরে ফেলবো- এই কথা যদি জাতীয় সংসদে বলা হয়, তাহলে তো ভয়াবহ। এগুলো বলার অর্থ হচ্ছে, ঘটনা থেকে দৃষ্টি অন্য দিকে সরিয়ে দেয়া।