তাবলিগ জামাতের ৫৫তম বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে আজ শেষ হচ্ছে। মোনাজাতে অংশ নিতে শীতকে উপেক্ষা করেই তুরাগ নদীর তীরে ছুটছেন লাখ লাখ মানুষ।
রবিবার ভোর থেকেই স্রোতের মতো মানুষ আসছে তুরাগ তীরে। যেন আজ সব মানুষের গন্তব্য তুরাগ তীর। লাখো লাখো মুসল্লির পদচারণায় তুরাগ তীরে অন্যরকম এক ধর্মীয় আবহের সৃষ্টি হয়েছে।
বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টার মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে আখেরি মোনাজাত। মোনাজাতে শরিক হতে আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে রাখেন অনেকে। সেজন্য বাসে-ট্রেনে কিংবা গাড়িভাড়া করে লাখ লাখ মানুষ পাড়ি জমাচ্ছেন টঙ্গীর তুরাগতীরে।
সকাল আটটার আগেই বিশ্ব ইজতেমা ময়দানের ১৬০ একর জমির ওপর টাঙানো শামিয়ানা ছাড়িয়ে মানুষের ঢল আশপাশের জায়গায় ছড়িয়ে যায়। এসেছেন বিদেশি মুসল্লিরাও। এখনও আসছে জনস্রোত। কেউ বাসে, কেউ ট্রেনে; আবার কেউ বা হেঁটেই শামিল হচ্ছেন লাখো মানুষের জমায়েতে।
এদিকে প্রচণ্ড শীতে কাবু হয়ে পড়েছেন ইজতেমায় আসা অনেক মুসল্লি। বিশেষ করে বয়স্কদের অবস্থা খুবই করুণ। ঠাণ্ডা বাতাসে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। মুসল্লিরা ভিড় করছেন ফ্রি চিকিৎসাসেবা কেন্দ্রগুলোতে। সেখানে দেখা গেছে দীর্ঘ লাইন।
এখন মূল মঞ্চে চলছে বয়ান। অন্যদিকে ইজতেমার তাঁবুগুলোতে জড়োসড়ো হয়ে শুয়ে বা বসে আছেন অনেক মুসল্লি। প্রয়োজনীয় কাজ ছাড়া কেউ বাইরে বের হচ্ছেন না।
গত শুক্রবার ঠাণ্ডার প্রকোপ অনেকটা কম থাকলেও শনিবার থেকে ঠাণ্ডা বাতাস বইতে শুরু করেছে। এই বাতাস নাজেহাল করে তুলছে মুসল্লিদের। তারপরেও বন্যার পানিতে মতো মানুষ ছুটছেন তুরাগ তীরের দিকে।
ঢাকার পল্টন এলাকা থেকে আসা জহির ঢাকাটাইমসকে জানান, লাখো মানুষের অংশগ্রহণকে মোনাজাত কবুল হতে পারে এমনটা ভেবে সকাল সকাল টঙ্গী অভিমুখে রওনা হয়েছি। কয়েকবার আখেরি মোনাজাতে অংশ নিয়েছে। কিন্তু এবারের মতো এতো মানুষ চোখে পড়েনি।
আগামী ১৭ জানুয়ারি থেকে শুরু হবে ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব। এই পর্বে মাওলানা সাদ কান্ধলভির অনুসারীরা অংশ নেবেন। আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে ১৯ জানুয়ারি শেষ হবে এ পর্ব।
বাংলাদেশে ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে ১৯৬৩ সাল থেকে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে মুসল্লিরা এই ইজতেমায় অংশ নেন বলে এটি বিশ্ব ইজতেমা হিসেবে পরিচিতি পায়। ২০০৯ সাল পর্যন্ত ইজতেমা তিন দিন ধরে অনুষ্ঠিত হতো।
মুসল্লির সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় ২০১০ সাল থেকে দুই দফায় তিন দিন করে ইজতেমার আয়োজন করা হতো। তাবলিগের আমির মাওলানা সা’দ কান্ধলভি ও মাওলানা জুবায়েরের অনুসারীদের বিরোধের কারণে গত বছর থেকে দুই পক্ষ আলাদাভাবে ইজতেমার আয়োজন শুরু করে।