টঙ্গীর তুরাগ নদীর তীরে শুরু হয়েছে তাবলিগ জামাতের বৃহত্তম জমায়েত বিশ্ব ইজতেমা আম বয়ানের মধ্য দিয়ে । শুক্রবার বাদ ফজর বয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী এবারের বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব।
বাদ ফজর পাকিস্তানের মাওলানা খোরশেদের বয়ানের মধ্য দিয়ে শুরু হয় ইজতেমার প্রথম পর্বের আনুষ্ঠানিকতা। ৫৫তম বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্বের আজ প্রথম দিন। এই পর্ব শেষ হবে আগামী রবিবার।
এরপর ১৭, ১৮ ও ১৯ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে দ্বিতীয় পর্ব। প্রথম পর্বে মাওলানা জুবায়েরের অনুসারী ও দ্বিতীয় পর্বে সাদ কান্ধলভীর অনুসারীরা ইজতেমায় অংশ নেবেন।
ইজতেমায় অংশ নিতে গতকাল থেকেই ময়দানে আসতে থাকে মুসল্লিরা। আসেন বিদেশি মুসল্লিরাও। আজও তা অব্যাহত রয়েছে। মুসল্লিদের পদচারণায় মুখরিত টঙ্গীর ইজতেমা ময়দান।
উত্তরের হিমেল হাওয়া আর কনকনে শীত উপেক্ষা করে লাখো মুসল্লি বয়ান, তাশকিল, তাসবিহ-তাহলিলে সময় কাটাচ্ছেন। তবে শীতের কারণে বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া মুসল্লিদের প্যান্ডেলের বাইরে যেতে দেখা যায়নি।
এবারের ইজতেমা গতকাল বৃহস্পতিবার বাদ মাগরিব থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়। বিশ্ব মুসলিমের অন্যতম বৃহৎ এ ধর্মীয় জমায়েত দেশ বিদেশের লাখ লাখ মুসল্লি অংশ নিয়েছেন। বিশ্ব ইজতেমায় এবারও পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। রবিবার দুপুরের আগেই আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে ইজতেমার প্রথম পর্ব।
শুক্রবার ছুটির দিন থাকায় গাজীপুরসহ আশপাশের অঞ্চলগুলো থেকেও বিপুল মুসল্লি জুমার নামাজ আদায় করতে ইজতেমা ময়দানে আসবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
দেশ-বিদেশের কয়েক লাখ মুসল্লির আসায় ইতোমধ্যে টঙ্গী স্টেশন রোড ও কামারপাড়াসহ বিশ্ব ইজতেমা ময়দানের আশপাশের এলাকায় মুসল্লিদের পদভারে মুখরিত হয়ে উঠেছে। তিল ধারণের ঠাঁই নেই কোথাও। এত বিপুল সংখক মুসল্লির নিরাপত্তায় হিমশিম খেতে হচ্ছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে।
গাজীপুর জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, এবার পুরো ইজতেমায় কাজ করবেন জেলা প্রশাসনের ৩০টি ভ্রাম্যমাণ আদালত। মুসল্লিদের পারাপারের জন্য ইতিমধ্যে সেনাবাহিনীর ৭টি ভাসমান সেতু প্রস্তুত করা হয়েছে। মুসল্লিদের যাতায়াতের সুবিধার্থে ১০টি বিশেষ ট্রেন চালু করা হবে এবং সব ট্রেনের টঙ্গী রেলস্টেশনে যাত্রাবিরতির কথা রয়েছে। এবার পুরো ইজতেমাকে ৯১টি খিত্তায় ভাগ করা হয়েছে। এর মধ্যে ৬৪ জেলার লোকজন খিত্তা অনুসারে বসবেন।
গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মো. আনোয়ার হোসেন জানান, বিশ্ব ইজতেমার চারপাশ এবং বাহির সিসি টিভির আওতায় আনা হয়েছে। খিত্তায় খিত্তায় পুলিশের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। বিশ্ব ইজতেমায় আগত মুসল্লিদের সার্বিক নিরাপত্তার জন্য সাড়ে আট হাজার পুলিশ, নিরাপত্তা কর্মী কাজ করবে। এর মধ্যে রয়েছে জেলা পুলিশ, আর্ম পুলিশ ব্যাটালিয়ন, শিল্প পুলিশ, হাইওয়ে পুলিশ, মেট্রো পুলিশ ও সাদা পোশাকের পুলিশ রয়েছে। যেকোনো প্রকার নাশকতা প্রতিরোধ পুলিশ সব সময় তৎপর রয়েছে।