প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় বাংলাদেশ থেকে বিদেশ গমনেচ্ছু কর্মীদের অর্থনৈতিক চাপ কমাতে বিমানে বিশেষ ভাড়ার ব্যবস্থা করতে চাইছে । এ লক্ষ্যে প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রী ইমরান আহমদের দপ্তর থেকে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, সচিব ও বাংলাদেশ বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালককে (এমডি) চিঠি পাঠানো হয়েছে।
সদ্য সমাপ্ত বছরের শেষ দিনে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রীর দপ্তর থেকে চিঠিটি পাঠানো হয়। তবে গত পাঁচ দিনে কোনো ধরনের সাড়া দেয়নি বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়।
শিগগির চিঠির সাড়া পাবেন বলে আশাবাদী প্রবাসী কল্যাণমন্ত্রী ইমরান আহমেদ। তিনি ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘আমরা এখনো কোনো সাড়া পাইনি। আশা করি ইতিবাচক কিছু হবে। দেখা যাক কী হয়।’
বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের উচ্চপর্যায়ে যোগাযোগ করা হলে তারা এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘এখনই এ বিষয়ে কিছু বলতে পারছি না। বিদেশগামী কর্মীদের জন্য বিশেষ ভাড়ার ব্যবস্থা কতটা যৌক্তিক, আগে সেটা দেখা হবে।’
প্রতি বছর বাংলাদেশ থেকে লাখ লাখ কর্মী বিদেশে কাজের উদ্দেশে যান। তাদের বেশির ভাগই প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষ তথা অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল। বিদেশে কর্মী হিসেবে যেতে তাদের অনেকে বাড়িঘর-জায়গাজমি বন্ধক রাখেন বা বড় অঙ্কের ঋণ করেন। তাদের জন্য বিমান ভাড়া কমানো হলে কিছুটা হলেও আর্থিক চাপ কমবে বিদেশ গমনেচ্ছু শ্রমিকদের।
প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তাদের ভাষ্য, শ্রমবাজারের উদ্দেশে যারা দেশের বাইরে যাচ্ছেন তাদের একটু ছাড় দিলে কর্মীরা প্রণোদিত হবেন। তাতে শ্রমবাজার ধরে রাখার পাশাপাশি এই খাত থেকে রেমিট্যান্স বাড়বে। বিভিন্ন দেশে শ্রমিকদের জন্য বিমানে বিশেষ ভাড়া প্রথা চালু আছে বলে জানান বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা।
কর্মী হিসেবে যারা দেশের বাইরে যান তাদের জন্য বিশেষ ভাড়ার ব্যবস্থা করা হলে সেটা এই খাতের জন্য ইতিবাচক হবে বলে মনে করেন শ্রম অভিবাসন বিশ্লেষকরা। তবে শ্রম অভিবাসন নিয়ে ওই দুই মন্ত্রণালয়ের সমন্বয়ের অভাব দেখছেন তারা।
অভিবাসন বিশেষজ্ঞ আসিফ মুনির ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে শ্রমিকদের বিমানে স্পেশাল ভাড়া নির্ধারণ হলে তা অবশ্যই একটি ভালো উদ্যোগ হিসেবে গণ্য হবে। তার জন্য শ্রম অভিবাসন নিয়ে এই দুই মন্ত্রণালয়ের সমন্বয় নিশ্চিত করতে হবে। বিমান ভাড়া কমানোর জন্য বাংলাদেশ বিমানের পাশাপাশি বেসরকারি বিমান কোম্পানিগুলোকে এর আওতায় আনতে হবে।’
প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, গত বছর ৭ লাখ ১ হাজার কর্মীর বিদেশে কর্মসংস্থান হয়েছিল। চলতি বছর বিভিন্ন দেশে সাড়ে ৭ লাখ কর্মী পাঠাতে চায় মন্ত্রণালয়।