স্বস্তি ফিরতে শুরু করেছে পিয়াজের বাজারে। কমতে শুরু করেছে দাম। বাজারে এখন দেখা মিলছে নতুন পিয়াজের। সেই সঙ্গে বিদেশ থেকে আমদানি করা পিয়াজের কদর কমছে ক্রেতাদের কাছে। ফলে গত কয়েকদিনের ব্যবধানে আমদানি করা এসব পিয়াজের দাম কমে অর্ধেকে নেমে এসেছে। বাজারে এখন জায়গা করে নিচ্ছে দেশি পিয়াজ। তবে এসব দেশি পিয়াজ পুরোপুরি বাজারে আসতে আরো ১ থেকে ২ সপ্তাহ সময় লাগবে। তখন পিয়াজের দাম আরো কমে যাবে বলে জানান ব্যবসায়ীরা।
গতকাল রাজধানীর কাওরানবাজারসহ কয়েকটি খুচরা বাজার ও টিসিবির পিয়াজ বিক্রয় কেন্দ্র ঘুরে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। কাওরানবাজারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সপ্তাহের ব্যবধানে প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে আমদানি করা পিয়াজের দাম। তবে দেশি নতুন পিয়াজ তুলনামূলক কম দামে পাওয়া গেলেও পুরান পিয়াজ আগের মতোই চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। দেশি জাতের নতুন পিয়াজ বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১৩০ টাকায়। প্রতিকেজি দেশি পুরাতন পিয়াজ ২২০ থেকে ২৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেশি জাতের পাশাপাশি বাজারে এখন প্রচুর চীনা, মিশর, থাইল্যান্ড, মিয়ানমার ও তুরস্ক থেকে আমদানি করা পিয়াজ পাওয়া যাচ্ছে। ফলে আমদানি করা পিয়াজের দাম ক্রমেই কমের দিকে যাচ্ছে। সবচেয়ে বেশি কমেছে চীনা পিয়াজের দাম।
সপ্তাহখানেক আগেও প্রতিকেজি চীনা পিয়াজ ১৩০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। দুই দিনে আগেও বিক্রি হয়েছে ৮০ টাকায়। এখন ২০ টাকা কমে চীনা বড় সাইজের প্রতিকেজি সাদা পিয়াজ ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া চীনা লাল পিয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকায়। যা দুইদিন আগেও বিক্রি হয়েছে ১০০ টাকায়। মিয়ানমার থেকে আমদানি করা পিয়াজ কমে গিয়ে ১৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা কয়েকদিন আগেও ২০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। মিয়ানমার থেকে আসছে সে দেশের নতুন উৎপাদিত পিয়াজও। মিয়ানমারের নতুন বড় সাইজের পিয়াজগুলো বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়। যা দুই দিন আগে বিক্রি হয়েছে ১৩০ টাকায়। মিশরের কালো পিয়াজ ৭০ থেকে ৮০ টাকা। এছাড়া পাতাসহ দেশি পিয়াজ এক আটি ৫০ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা দুই দিন আগে বিক্রি হয়েছে ৮০ টাকায়।
কাওরান বাজারের পিয়াজ ব্যবসায়ী বাবু মানবজমিনকে বলেন, আমদানিকৃত পিয়াজের দাম কমে যাচ্ছে. আরও কমবে যখন দেশি নতুন পিয়াজ বাজারে পুরোপুরি আসবে। আগামী ১ থেকে ২ সপ্তাহের মধ্যে নতুন উঠা দেশি পিয়াজ বাজারে পুরোদমে সরবরাহ শুরু হবে। তখন সব ধরনের পিয়াজের দাম আরও কমবে।
পিয়াজ ব্যবসায়ী আবুল কালাম জানান, বাজারে আমদানিকৃত ও নতুন দেশি পিয়াজের সরবরাহ বৃদ্ধিতে দাম কমে গেছে। ধীরে ধীরে আরও কমবে বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, দেশে আসলে দেশি পিয়াজে বিকল্প কিছু নেই। যতই আমদানি করা হোক দেশের মানুষ দেশি খেয়েই অভ্যস্ত। তাই বাজারে দেশি পিয়াজ আসতে শুরু করায় আমদানি করা পিয়াজ থেকে ক্রেতারা মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন।
এদিকে পিয়াজের দাম কমতে শুরু করায় টিসিবির ট্রাকসেলের ৪৫ টাকার পিয়াজ কিনতে ক্রেতাদের ভিড়ও কমে গেছে। সাধারণ ভোক্তারা লাইন ছাড়াই চাহিদা মতো সহজেই পিয়াজ কিনতে পারছেন ট্রাক থেকে। খামারবাড়ি মোড়ে টিসিবির ট্রাকসেলে পিয়াজ বিক্রি করছিলেন আমিনুল ইসলাম। তিনি বলেন, সপ্তাহখানেক আগেও টিসিবির পিয়াজ কিনতে ক্রেতাদের দীর্ঘলাইন ধরতে হতো। এখন আর লাইনের দরকার হয় না। একজন দুজন করে পথচারীদের কাছে পিয়াজ বিক্রি করতে হচ্ছে। তিনি বলেন, ভিড় না থাকা ও খুচরা বাজারের চেয়ে কিছুটা দাম কম হওয়ায় ট্রাক থেকে মধ্যবিত্তরাও পিয়াজ কিনছেন।