কারা অধিদপ্তর হলি আর্টিজান হামলা মামলার ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের মাথায় আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন আইএস-এর পতাকার প্রতীক সম্বলিত টুপি নিয়ে তিন সদস্যদের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে । এডিশনাল আইজি প্রিজন্স কর্ণেল আবরারের নেতৃত্বে কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন, ডিআইজি প্রিজন্স টিপু সুলতান ও এআইজি প্রিজন্স আমিরুল ইসলাম। আগামী পাঁচ দিনের মধ্যে তদন্ত কমিটিকে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। আইজি প্রিজন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোস্তফা কামাল পাশা বলেন, আইএস রিলেটেড টুপির বিষয়টি আমার নজরে আসার পরই তিন সদস্যের একটি কমিটি তৈরি করে দিয়েছি। আমাদের দায়িত্ব শুধু কারাগারের গেট পর্যন্ত। এর বাইরে আমাদের কোনো দায়িত্ব থাকে না। গেট পর্যন্ত কোনো অনিয়ম বা কারো সংশ্লিষ্টতা আছে কিনা সেটি খতিয়ে দেখার জন্য এই কমিটি করা হয়েছে। কমিটির সদস্যরা তদন্ত করে দেখবেন কারাগারের কেউ জড়িত আছে কিনা।
আগামী পাঁচ দিনের মধ্যে কমিটির সদস্যরা তদন্ত রিপোর্ট দিবে। তদন্তে কারো বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ পাওয়া গেলে যথাযথ আইনগত ব্যবস্থা নিব।
তিনি বলেন, মামলার রায়কে ঘিরে সারাদেশের কারাগারে নিরাপত্তা বাড়াতে চিঠি দেয়া হয়েছে। হলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গি হামলা মামলার রায়কে ঘিরে গতকাল আদালতপাড়াসহ রাজধানীতে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়। পুলিশ, র্যাবের পাশপাশি সাদা পোশাকের আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের দিয়ে কয়েক স্থরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে এই মামলার আসামিদের আদালতে হাজির করা হয়। মামলায় সাত আসামির মৃত্যদণ্ড ও এক আসামিকে বেকসুর খালাস দেন আদালত। পরে আসামিদের প্রিজন ভ্যানে তোলার সময় মৃত্যদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি রাকিবুল হাসান রিগান ও আরও এক আসামির মাথায় কালো কাপড়ের ওপর আইএসের পতাকার প্রতীক সম্বলিত টুপি দেখা যায়। টুপি পরা রিগানের ছবি তাৎক্ষণিকভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
এত কড়া নিরাপত্তার মধ্য কিভাবে এই টুপি তাদের কাছে গেল এ নিয়ে প্রশ্ন দেখা উঠে। অনেকেই বলছেন টুপি কি তারা কারাগার থেকে সঙ্গে নিয়ে এসেছিলেন নাকি রাস্তায় অথবা আদালত প্রাঙ্গণে তাদের কেউ দিয়েছেন। এদিকে গতকাল ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে কাউন্টার টেররিজম এন্ড ট্র্যান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) প্রধান মনিরুল ইসলাম বলেন, আমার জানামতে আইএসের কোনো টুপি নেই। পৃথিবীর কোথাও আইএস কোনো টুপি তৈরি করেছে কিনা সেটি আমার জানা নেই। কালো কাপড় ব্যবহার করা জঙ্গি সংগঠনের রেওয়াজ। আল-কায়েদার জঙ্গিরাও কালো কাপড়ে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু লেখে। তাই টুপিতে এটি লিখলেই কিছু বোঝা যায় না। এছাড়া টুপি বানানোর ধারণা আইএস প্রধান আবু বকর আল বাগদাদির মাথায়ও আসেনি। এই ক্ষেত্রে আমরা বিশ্লেষণ করে দেখবো এটি আইএসের টুপি কিনা।
এছাড়া কিভাবে এই টুপি তাদের কাছে এলো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে। কারো কোনো গাফিলতির কারণে এটি হয়েছে কিনা। কারণ কারাগার থেকে আদালতে আনার সময় তাদের তল্লাশি করে দেখা হয় তাদের সঙ্গে কিছু আছে কিনা। আর আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, বিষয়টি আমার জানার কথা নয়। তবে তদন্ত হওয়া দরকার। আমি তদন্তের নির্দেশ দিব।