ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকারের পক্ষ থেকে ভারতের আসাম রাজ্যে জাতীয় নাগরিকপঞ্জি তালিকা বা এনআরসি নিয়ে দেশে-বিদেশে যখন তোলপাড়, চারদিকে যখন উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা তখন তা বাতিল হওয়ার ইঙ্গিত এসেছে । বৃহস্পতিবার রাজ্যসভায় সেই ইঙ্গিত দিয়ে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জানান, গোটা দেশের সঙ্গেই আসামে নতুন করে এনআরসি হবে।
সুপ্রিম কোর্টের নজরদারিতে আসামে হওয়া এনআরসিরর চূড়ান্ত তালিকায় বাদ যায় ১৯ লাখ মানুষ। যাদের মধ্যে অন্তত ১৩-১৪ লাখই হিন্দু। তালিকা প্রকাশ হতেই অস্বস্তিতে পড়ে যায় শাসক দল বিজেপি। ওই এনআরসি সঠিক নয় সেই যুক্তিতে সরব হন বিজেপি নেতারা। এনআরসিতে বেশির ভাগ হিন্দুদের নাম বাদ পড়ায় ভোট ব্যাংকে বিরূপ প্রভাব পড়ছে বলে শীর্ষ নেতৃত্বকে জানান তারা। চাপ বাড়াচ্ছিল সঙ্ঘ পরিবারও। এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার আসামে নতুন করে এনআরসি হবে বলে বিতর্ক তৈরি করেন অমিত।
সরকারের ওই সিদ্ধান্তকে অবশ্য স্বাগত জানিয়েছে, এনআরসি মামলার মূল আবেদনকারী আসাম পাবলিক ওয়ার্কসও। তাদের দাবি ছিল সব তথ্য ফের যাচাই করা হোক। এই মামলার পরের শুনানি ২৬ নভেম্বর। সংগঠনের সভাপতি অভিজিৎ শর্মা বলেন, ‘১৬০০ কোটি টাকা খরচের সম্পূর্ণ অডিটও হোক।’
ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যুক্তি, আসামে এনআরসি হয়েছে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে। আসাম চুক্তি অনুযায়ী ১৯৭১ সালের ২৪ মার্চকে এনআরসি তৈরির ভিত্তিবর্ষ বলে ধরা হয়েছিল। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ভবিষ্যতে দেশের সব রাজ্যে যখন এনআরসি-র কাজ শুরু হবে তখন অতীতের একটি নির্দিষ্ট দিনকে ধরে তার ভিত্তিতে তালিকা তৈরি হবে। কোন বছরের কোন তারিখের ভিত্তিতে ওই কাজ শুরু হবে তা এখনো ঠিক হয়নি। তবে ১৯৭১ সালের ২৪ মার্চ ভিত্তিবর্ষ হচ্ছে না। তাই মন্ত্রণালয়ের যুক্তি, এক দেশে দুটি ভিত্তিবর্ষ হতে পারে না। তাই গোটা দেশে যে ভিত্তিবর্ষ ধরা হবে, সেটির হিসাবে আসামেও নতুন তালিকা তৈরি করা হবে।