ড. আশরাফ সারু এবার রামগতি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দিয়েছেন নিজেকে এক সময়ের লক্ষ্মীপুর জেলা বিএনপি নেতা । কথায় কথায় নিজের ব্যবহৃত বন্দুক বের করে নেতাকর্মীদের হুমকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ সহযোগি সংগঠনের তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। এতে নেতাকর্মীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। সারুর এসব ঘটনার পর সমালোচনার ঝড় ওঠেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে।

তৃণমূল আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগসহ অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের অভিযোগ ড. আশরাফ সারু দীর্ঘদিন ধরে বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। কখনও তিনি আওয়ামী লীগ করেননি। বরং বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে  জড়িত থাকার সময় ড. আশরাফ সারুর নির্দেশে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিভিন্নভাবে হয়রানি করা হয়েছে।

জানা যায়, গত ১১ই নভেম্বর আলেকজান্ডারের ভাই ভাই কমিউনিটি সেন্টারে পৌরসভা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা শেষে বাইরে বের হয়ে রামগতি উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক মেজবাহ উদ্দিন ভিপি হেলালকে বন্দুক বের করে হুমকি দেন সারু।

এ নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে দেখা দেয় উত্তেজনা। পরে জেলা আওয়ামী লীগ ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাদের হস্তক্ষেপে উত্তোজনা বন্ধ হয়। এর কয়েকদিন আগে চরলরেন্সের ডেকোরেটর ব্যবসায়ী আবুল কাশেম তার পাওনা টাকা চাইতে গেলে তাকেও বন্দুক বের করে হুমকি দেন সারু।

সূত্র জানায়, ১৯৯৭ সালে জেলা বিএনপির সভাপতি এডভোকেট সৈয়দ মোহাম্মদ সামছুল আলম ও আনোয়ার হোসেনকে সাধারণ সম্পাদক করে একটি কমিটি গঠন করা হয়। ওই কমিটির ৫৯তম সদস্য ছিলেন ড. আশরাফ সারু।

চরলরেন্স এলাকার ডেকোরেটর ব্যবসায়ী আবুল কাশেম জানান, সমাবেশের স্টেজের পাওনা টাকা চাইতে গেলে ড. আশরাফ সারু বন্দুক বের গুলি করার হুমকি দেয়। এতে আতংকিত হয়ে পড়ি। বিষয়টি অনেক নেতাকর্মীদের জানিয়েছি। কিন্তু কোন লাভ হয়নি।

চরগাজী ইউপি চেয়ারম্যান ও যুবলীগ নেতা তাওহিদুল ইসলাম ও জেলা পরিষদের সদস্য ও রামগতি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী রুপেনা বেগম জানান, ড. আশরাফ সারু কখনও আওয়ামী লীগ করেননি। তিনি বিএনপির রাজনীতি করতেন। এসব বিষয় নিয়ে কথা বললে আশরাফ সারু নিজের গাড়ি থেকে একটি বন্দুক বের করে নেতাকর্মীদের গুলি করার হুমকি দেয়।  প্রায়ই গুলি নিয়ে মানুষকে দৌঁড়ায়। এ ধরনের ঘটনায় আমরা বিব্রত।

রামগতি উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক মেজবাহ উদ্দিন ভিপি হেলাল জানান, পৌর আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা শেষে সারু আমাকে বন্দুক বের করে গুলির হুমকি দেন। এছাড়া তিনি কখনও আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। এখন কিভাবে নিজেকে আওয়ামী লীগের নেতা পরিচয় দেন? অনতিবিলম্ভে বিষয়টি তদন্ত করে তার ব্যবহৃত বন্দুকটি জব্দেরও দাবি জানান তিনি।

এ বিষয়ে জানতে ড. আশরাফ সারুকে বারবার মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি।

রামগতি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল ওয়াহেদ জানান, সারু কখনও আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। এখন কিভাবে তিনি আওয়ামী লীগের বিভিন্ন সভা সমাবেশে স্টেজে উঠে বসেন, সেটা আমার জানা নেই। ইতিমধ্যে তিনি বেশ কয়েকজনকে বন্দুক বের করে হুমকি-ধামকি দেয়ার অভিযোগ আছে। কিভাবে তার এত ক্ষমতা সেটা আমার জানা নেই।

এসব বিষয়ে জানতে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট নুর উদ্দিন চৌধুরী নয়ন বলেন, ড. আশরাফ সারু বিএনপি করেছেন কিনা, সেটা আমার জানা নেই এবং তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রার্থী এ ধরনের তথ্যও আমার জানা নেই। তবে সে আওয়ামী লীগের সমর্থক বলে দাবি করেন তিনি।

Share Now
January 2025
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031