চট্টগ্রাম ৮ (চাঁদগাও-বোয়ালখালী) আসনের তিনবারের সাংসদ বাদল ভারতের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বৃহস্পতিবার ভোরে মারা যান। ৬৭ বছর বয়সী এই মুক্তিযোদ্ধা বর্তমান একাদশ জাতীয় সংসদের ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা এবং মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সদস্য ছিলেন। বর্ষীয়ান এই রাজনীতিকের মৃত্যুতে বিকালে জাতীয় সংসদে শোক প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দুর্ভাগ্য, তার সেই বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর আমরা সংসদে শুনতে পারব না। তার মৃত্যু রাজনৈতিক অঙ্গনে বিরাট শূন্যতা সৃষ্টি করল। সময়ের সাথে সাথে সবাইকে চলেই যেতে হবে। মৃত্যু সত্য। এই সত্য মেনে
নেওয়া কঠিন। কিন্তু মেনে নিতেই হয়।’ খবর বিডিনিউজের।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘মঈন উদ্দীন খান বাদল ছাত্র রাজনীতিতে সক্রিয় অংশগ্রহণ করেছেন। মুক্তিযুদ্ধে তার অবদান রয়েছে। তিনি অসামপ্রদায়িক চেতনা ও শান্তি সমপ্রীতির রাজনীতিতে বিশ্বাসী ছিলেন। সংসদে তিনি বলিষ্ঠ কণ্ঠে কথা বলতেন। তার ভাষণ সকলের মনে দাগ কেটে যেত। ছাত্রজীবনে তিনি ছাত্রলীগের কর্মী ছিলেন। তবে স্বাধীনতার পর তিনি জাসদে যোগ দেন। তিনি আমাদের ঐক্যজোটের সঙ্গে সক্রিয় ছিলেন। রাজনৈতিক অঙ্গনে আন্দোলন- সংগ্রামে রাজপথে ও সংসদে তার সাথে একসাথে কাজ করার সুযোগ হয়েছে। আমি সব সময় তার অসুস্থতার খবর নিতাম। তার স্ত্রীর কাছ থেকে আমি মেসেজ পেতাম। আজকে যখন মৃত্যুর সংবাদটা পেলাম বড় ধাক্কা লাগে। ভাবতেই পারিনি তিনি এভাবে চলে যাবেন। সংসদ শুরু হবে। তিনি দ্রুত সুস্থ হয়ে সংসদে আসবেন, কথা বলবেন। কিন্তু দুর্ভাগ্য তার সেই বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর আমরা সংসদে শুনতে পারব না।’ প্রধানমন্ত্রী জানান, মঈন উদ্দীন খান বাদলের লাশ নিয়ে আসার জন্য ইতোমধ্যে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। দিল্লিস্থ বাংলাদেশ হাই কমিশন থেকে একজন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
বাদলের আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ বলেন, ‘তার বক্তব্য আমরা মন দিয়ে শুনতাম। তার থেকে অনেক কিছু শেখার ছিল, অনেক কিছু জানার ছিল। তার মৃত্যুতে যে শূন্যতা হয়েছে মনে হয় না ওই আসন থেকে পরবর্তীতে যিনি বিজয়ী হয়ে আসবেন তিনি পূরণ করতে পারবেন।’ জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, ‘তিনি সংসদ সদস্য হিসেবে নিয়মিত অংশগ্রহণ করে সংসদ কার্যক্রম পরিচালনাসহ আইন প্রণয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। তিনি বয়সে আমার ছোট হলেও দীর্ঘদিনের পুরনো কর্মী ও সহযোগী। জন্মলগ্ন থেকেই তিনি জাসদের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। আমার সহকর্মী হিসেবে দীর্ঘদিন কাজ করেন। সামপ্রদায়িকতা ও জঙ্গিবিরোধী সংগ্রামে তার ভূমিকা রয়েছে।’ ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘পাকিস্তান বাহিনীর কাছে তিনি আতঙ্ক ছিলেন। সংসদে তার বাচনভঙ্গি ও দৃঢ়তা আমাদের মুগ্ধ করত।’

Share Now
January 2025
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031