ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন গঙ্গাফড়িংরা দেশের মূল জায়গাগুলোতে বসে উন্নয়নের রস চুষে খাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন । গতকাল রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটে পার্টির দশম কংগ্রেসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ মন্তব্য করেন তিনি। মেনন বলেন, আমাদের দেশ এখন সবদিক দিয়ে স্বয়ংসম্পূর্ণ। দেশে শিশু মৃত্যুর হার কমেছে। এগুলো আমাদের অগ্রগতি। কোন সন্দেহ নাই এতে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আমি উন্নয়ন করি আর উইপোকারা উন্নয়ন খেয়ে যায়। আমি বলি উইপোকা না, এরা অন্য এগুলো গঙ্গাফড়িং। যেগুলো লাফ দিয়ে লাফ দিয়ে চলে। আজকে দেশের মূল জায়গাগুলোতে গঙ্গাফড়িংরা বসে আছে। গত এগারো বছরে কতো টাকা পাচার হয়েছে। কত ব্যাংক খালি হয়েছে। কত ফ্রিল্যান্স কোম্পানি ধ্বংস হয়েছে। এসব গঙ্গাফড়িংয়ের দল দেশের উন্নয়নের রস চুষে নিচ্ছে। তিনি বলেন, আমরা দারিদ্র্য দূর করেছি। কিন্তু দেশে এখনও চারজনের একজন দরিদ্র। আমরা কর্মসংস্থানের কথা বলছি। কিন্তু আমাদের দেশে এক কোটি বিশ লাখ মানুষ আজ কর্মহীন। এটা আমার কথা না। এটা সরকারের কথা। আমাদের দেশের তরুণ যুবকরা কাজ পায় না। হতাশ হয়ে মাদকাসক্ত হয়ে পড়ছে। সন্ত্রাসের পথে চলে যাচ্ছে। মেনন বলেন, দেশে কাজ না পেয়ে যুবকরা বাপের ভিটা বিক্রি করে বিদেশে পাড়ি দেয়। আর সেখান থেকে লাশ হয়ে ফেরে। গত এক বছরে বিদেশের মাটি থেকে কত লাশ ফিরেছে সেটা আপনারা জানেন। কত সংগ্রাম করছে দেশের যুবকরা। আমরা তার রেমিট্যান্স নিয়ে গর্ব করে বলছি যে, ৩৩ বিলিয়ন ডলার আমাদের রিজার্ভ। এই রিজার্ভের মূল জোগানদাতাই আমাদের দেশের ওই অসহায় মানুষ। আর এই টাকা বাংলাদেশে থাকে না। এই টাকা বিদেশে চলে যায়। ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি বলেন, আমি প্রধানমন্ত্রীকে আহবান জানাবো, যারা এই কাজ করছে তাদের খোঁজ নিন। তালিকা তৈরি করুন। কারা কানাডায় বাড়ি বানিয়েছেন। কারা সেকেন্ড হোম কিনেছেন। এগুলোর কোন আইনী বৈধতা ছিল কি-না। আমরা বলেছি, এই অর্থনৈতিক দুর্বৃত্তপনা রাজনৈতিক দুর্বৃত্তপনায় রূপ নেবে। এটা দেশের রাজনীতিকে জিম্মি করে ফেলবে। তার প্রমাণ আজকের শুদ্ধি অভিযান। তার প্রমাণ প্রধানমন্ত্রী আজ অনুভব করছেন। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, কারও ‘ছায়ার নিচে থেকে’ আমাদের দল রাজনীতি করবে না। আমরা কারও ঘাড়ে হাত রেখে রাজনীতি করবো না। আমরা নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে নিজস্ব সংগ্রাম ও দৃষ্টিভঙ্গির ভিত্তিতে রাজনীতি করবো। দুঃশাসনে মানুষের অনাস্থায় সাম্প্রদায়িক শক্তি অজগরের মতো বিকশিত হয়েছে। দক্ষিণপন্থি শক্তি প্রতিক্রিয়াশীল হয়ে উঠছে। আজকে আরব বিশ্ব বাংলাদেশকে পাকিস্তানি ধারায় ফিরিয়ে নিতে নানা ষড়যন্ত্র করেছে। নিজেদের সাম্রাজ্যবাদের স্বার্থে তারা বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক শক্তিকে মদত দিচ্ছে। সুশাসনের অভাবে লুটেরাদের হাতে জনগণ জিম্মি হয়ে গেছে। অনেক উন্নয়ন হয়েছে, কিন্তু অর্থনৈতিক বৈষম্য বেড়েছে, দুর্নীতি বেড়েছে। এবারের কংগ্রেসে ৫৮টি জেলা থেকে সাড়ে ৭০০ প্রতিনিধি অংশ নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন ওয়ার্কার্স পার্টির নেতারা।
২০০৮ সালের ৭ই আগস্ট ওয়ার্কার্স পার্টির নবম কংগ্রেস অনুষ্ঠিত হয়েছিলো।

Share Now
January 2025
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031