এই যে স্বাধীনতার ৫০ বছর হতে চলেছে গণফোরাম সভাপতি ও ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন বলেছেন। এতো বছর পরে এসেও আমাদের সুষ্ঠু নির্বাচনের কথা বলতে হয়। আর আমরা সেই ধরণের নির্বাচনও পাইনা। আগের রাতেই ভোট হয়ে যায়। আর এইভাবে নির্বাচিত হয়ে তারা যদি ভাব করে তারা ক্ষমতার মালিক। তাহলে তাদেরকেও থাকতে দেয়া হবে না। বৃহস্পতিবার জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জেএসডি) ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সুপ্রিমকোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশন মিলনায়তনে আয়োজিত এক আলোজনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। ড. কামাল হোসেন বলেন, আমি যেখানেই যাই সেখানেই খবর নেই শহীদের কোন কবর আছে কি-না।
সবাই হাত তুলে বলে আপনারা কত দেখতে চান। প্রত্যেক গ্রামে শহীদের সংখ্যা কম নয়। এরা কেন জীবন দিয়েছিল। সবাই যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছিল কি এ জন্য?
আজকের দেশের এই অবস্থার জন্য? আমরা সব সময় চেষ্টা করেছি। সংবিধানের কথাগুলো জনগণের সামনে তুলে ধরতে। যে জনগণই দেশের মালিক। এই মালিকানার জন্যই আমরা স্বাধীনতা যুদ্ধে মূল্য দিয়েছে। একটা ভাল নির্বাচনের পরে যখন একটা রায় দেয়া হয়, মানুষ তখন বলে হ্যাঁ এটাতো আমার রায়। সে রায়টা যদি সত্যিকার অর্থে কার্যকর করা যেত আমাদের আর কোন দুঃখ থাকতো না। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, এই সরকার ভোটের অধিকার কেড়ে নিয়েছে। গণতন্ত্র কেড়ে নিয়েছে। ১৯৭৫ সালে যে বাকশাল গঠন করা হয়েছিল এই সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য সেই লক্ষ্যে সব কাজ করছে। এবং অনেক দূর এগিয়ে গেছে। এবার বাকশাল গঠন করার কৌশলটা ভিন্ন। তাদের সামনে গণতন্ত্রের একটি মুখোশ রেখে দিয়েছে। সেই লক্ষ্যে তারা ভিন্নমতকে ধ্বংস করে দিয়েছে।
তিনি বলেন, আজ শুধু বিএনপি নয়, ২০ দল নয়। আজ সমগ্র বাংলাদেশের মানুষ যারা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করে, যারা একটা মুক্ত সমাজে বসবাস করতে চায়, সমৃদ্ধশালী অর্থনীতির সমাজে বাস করতে চায় তারা সবাই আজ হতবাক হয়ে গেছে। তাদের সমস্ত স্বাধীনতা হরণ করে নেয়া হয়েছে। এখন সবচেয়ে বড় প্রয়োজন এই সরকারকে সরাতে হবে। সরকারকে সরাতে হলে আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া প্রসঙ্গে ফখরুল বলেন, যে নেত্রী সারাটা জীবন গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করেছেন। স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে নয় বছরের সংগ্রাম করেছেন। এখনো তাকে কারাগারে বন্দি করে রাখা হয়েছে। শুধুমাত্র গণতন্ত্রের সংগ্রামের কারণে, একটা মিথ্যা মামলায় তাকে কারাগারে বন্দি করে রাখা হয়েছে।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, বিএনপির নেতাকর্মীদের নামে ২৬ লক্ষ মামলা হয়েছে। ৫০০ মানুষকে গুম করা হয়েছে। হাজার হাজার নেতাকর্মীকে হামলা করা হয়েছে, আহত করা হয়েছে। গণতন্ত্র ফিরে পাওয়ার জন্য দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে যে ঐক্য সৃষ্টি করেছিলাম, সেই ঐক্য অটুট রেখে, মানুষকে একত্রিত করে সামনের দিকে যেতে হবে।
জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রবের সভাপতিত্বে সভায় নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক ড. রেজা কিবরিয়া, বিকল্পধারার সভাপতি অধ্যাপক ড. নুরুল আমিন ব্যাপারী, জেএসডির সহ-সভাপতি তানিয়া রব প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।