Senseless

ঢাকা  ৯ জুন: আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে সারাদেশে সক্রিয় অজ্ঞান ও মলম পার্টি এবং জাল টাকা তৈরি ও বিক্রির সঙ্গে জড়িত প্রায় শতাধিক অপরাধীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ও র‌্যাব ।উৎসব কেন্দ্রিক অপরাধ দমনে কঠোর অবস্থানে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী।

এছাড়া গত দুদিনে রাজধানীতে র‌্যাবের সঙ্গে বন্দুক যুদ্ধে অজ্ঞান ও ছিনতাইকারী চক্রের দুই হোতা নিহত হয়েছে।

বেপরোয়া অজ্ঞান পার্টির খপ্পর থেকে রেহাই মিলছে না আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদেরও। সাধারণ মানুষের পাশাপাশি আক্রান্ত হচ্ছেন র‌্যাব ও পুলিশ সদস্যরাও।

আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সূত্রে জানা যায়, ঈদ,পূজাসহ উৎসবকে সামনে রেখে সারাদেশে সক্রিয় হয়ে ওঠে উৎসব কেন্দ্রিক বিভিন্ন অপরাধী চক্র। অজ্ঞান পার্টি, মলম পার্টি ও জাল টাকার কারবারিদের তৎপরতা অনেকটাই বেড়ে যায় এ সময় । আর এদের প্রতারণায় নিঃস্ব হয় সাধারণ মানুষ।

সূত্র জানায়, রাজধানীসহ সারাদেশে এসব অপরাধের সঙ্গে প্রায় অর্ধশতাধিক চক্র সক্রিয় রয়েছে। যারা সারা বছর অন্য পেশায় থাকলেও ঈদ এলেই এসব অপরাধী চক্রের সঙ্গে যোগ দেয়। ঠিক এমনই দু’টি চক্রের সন্ধান পেয়ে তুরাগ ও রামপুরা এলাকায় অভিযান চালায় র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ান (র‌্যাব)। এ সময় র‌্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয় অজ্ঞান পার্টি চক্রের হোতা নজরুল ইসলাম ও ছিনতাইকারী চক্রের হোতা কামাল পারভেজ। ঘটনাস্থল থেকে বেশকিছু আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলি উদ্ধার হয় বলে দাবি করে র‌্যাব।

৭ জুন (মঙ্গলবার) সকালে রাজধানীর সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল এলাকা থেকে অজ্ঞান পার্টির ১০ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গত ৩১ মে রাজধানী থেকে অজ্ঞান ও মলম পার্টির আরো ৮ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। এর ঠিক দু’দিন আগে রাজধানীর কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে অজ্ঞান পার্টির এক সদস্যকে আটক করে রেলওয়ে থানা পুলিশ। এছাড়া র‌্যাবের অভিযানেও বেশ কয়েক জন অজ্ঞান ও মলম পার্টির সদস্য আটক হয়।

এদিকে, ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গত ১৫ দিনে অন্তত ২০ জন অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পরে ঢামেকের জরুরি বিভাগে চিকিৎসা নিয়েছেন।

র‌্যাবের মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান বলেন, ঈদ, পূজাসহ বড় কোন উৎসব এলেই অজ্ঞান ও মলম পার্টির চক্র সক্রিয় হয়ে উঠে। এদের খপ্পরে পড়ে টাকা পয়সাসহ অনেক মূল্যবান জিনিস খোয়ায় সাধারণ মানুষ। অনেক সময় মৃত্যু পর্যন্ত হয়।

এছাড়া ঈদে কেনাকাটা বেড়ে যাওয়ায় জাল টাকা কারবারিরাও সক্রিয় হয়ে উঠে। এসব অপরাধীদের ধরতে কঠোর অবস্থানে রয়েছে র‌্যাব, যোগ করেন তিনি।

ডিবির যুগ্ম কমিশনার আব্দুল বাতেন বলেন,‘অজ্ঞান ও মলমপার্টির সদস্যরা সু-কৌশলে বিভিন্ন গণপরিবহনের যাত্রী ও রাস্তার পাশের টং দোকানের ক্রেতাদের টার্গেট করে। এরপর খাবারের সঙ্গে চেতনাশক ওষুধ দিয়ে অজ্ঞান করে টাকা ও মূল্যবান জিনিস লুটে নেয়।

তিনি বলেন, বিভিন্ন উৎসবে এসব চক্রের সদস্যরা ঢাকায় এসে এসব অপরাধ করে। শিশু থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সের মানুষ এসব অপরাধ চক্রের সঙ্গে জড়িত বলেও জানান তিনি।

তিনি আরো বলেন,‘এ ধরনের চক্রকে ধরতে রাজধানীজুড়ে ব্যাপক অভিযান চালানো হচ্ছে। পুলিশের পাশপাশি সাদা পোশাকে গোয়েন্দারা গণপরিবহন ও টং দোকানে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছেন।’

জানা যায়,  গত ১৯ মে (রোববার) সকালে রাজধানীর কল্যাণপুর থেকে বাসে উঠে মিরপুরে যাওয়ার পথে অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়েন পুলিশের সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) বদিউজ্জামান (৩৫)।  এর আগে রমনা এলাকায় অজ্ঞান পার্টির খপ্পরে পড়েন র‌্যাব সদস্য এসআই হালিম।

Share Now
January 2025
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031