প্রতি বছর প্রায় ৮৭ হাজার টন একবার ব্যবহার উপযোগী প্লাস্টিক বর্জ্য হিসেবে জমা হয় বাংলাদেশে । এসডোর এক গবেষণা থেকে তথ্য ওঠে এসেছে। সোমবার  এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড সোস্যাল ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন-এসডো এক প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে সংস্থাটির প্রধান কার্যালয়ে এই গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করা হয়। মূলত একক ব্যবহার উপযোগী প্লাস্টিকের উপর ভিত্তি করে এই বছর এসডো বাংলাদেশে প্লাস্টিক ব্যবহারের দ্বিতীয় বার্ষিক সমীক্ষা সম্পন্ন করেছে। সংস্থাটি বাংলাদেশের শহর ও গ্রাম মিলিয়ে মোট ৮০০ জনেরও বেশি মানুষের উপর সমীক্ষাটি চালিয়েছে। শহরে ৭৮ শতাংশ এবং গ্রামে ২২ শতাংশ প্লাস্টিক বর্জ্য জমা হয়। এই সমীক্ষায় প্রশ্নসমূহের মধ্যে ছিল তারা কী ধরনের প্লাষ্টিক ব্যবহার করে, এইসব প্লাষ্টিক কোথা থেকে আসে এবং কিভাবে এগুলো নিষ্পত্তি হয়। এছাড়াও এই সমীক্ষাটি এসডোর ২০১৮ সালের ১২০০ জন মানুষের উপর করা সমীক্ষার সঙ্গে একীভূত করা হয়েছে।

যা গতবছর প্রধান চারটি বিভাগের (ঢাকা, চট্ট্রগাম, রাজশাহী এবং সিলেট) পরিস্থিতির উপর ভিত্তি করে করা হয়েছিল। এই সমীক্ষা থেকে উঠে এসেছে, একবার ব্যবহার উপযোগী প্লাষ্টিক ফেলে দেয়ার প্রায় ৯৬ শতাংশ খাদ্য ও প্রসাধনী সামগ্রীর মোড়ক থেকে আসে। এই মোট বর্জ্যরে ৩৫ শতাংশ হচ্ছে স্যাশে যা রিসাইকেল করা যায় না। বাংলাদেশে বেশির ভাগ একবার ব্যবহার উপযোগী প্লাষ্টিকের সঠিকভাবে নিষ্কাশন হয় না, এর ফলে এইসব প্লাষ্টিক বর্জ্য নদী, হ্রদ অথবা সমুদ্রে পতিত হয়। জাতিসংঘের পরিবেশ অধিদপ্তর অনুমান করেছে বাংলাদেশের প্রধান নদীগুলো যেমন ব্রহ্মপুত্র, মেঘনা এবং গঙ্গা, এইসব নদীর মাধ্যেমে প্রতি বছর প্রায় ৭৩ হাজার টন প্লাস্টিক সমুদ্রে পতিত হয়। একবার ব্যবহার উপযোগী প্লাস্টিক হল সেই সব প্লাস্টিক যা ফলে দেয়া বা পুনরায় ব্যবহারের আগে কেবল একবার ব্যবহার করা যেতে পারে। এর মধ্যে রয়েছে প্লাস্টিকের ব্যাগ, পানীয়ের স্ট্র, বোতল, কটন-বাড, স্যাশে, খাদ্য পণ্যেও মোড়ক, কফি স্ট্রেসার এবং আরো অনেক কিছু। প্লাস্টিক ব্যবহারের সবচেয়ে বড় সমস্যা হল তা পরিবেশে সহজে বিনষ্ট হয় না। খাদ্যজালসহ পরিবেশের অন্যান্য উপাদানের সঙ্গে রাসায়নিক ক্রিয়ার মাধ্যমে বিষ-ক্রিয়ার সৃষ্টি করে। সম্প্রতি বিভিন্ন গবেষণায় উঠে এসেছে এটি মানবদেহের রক্তের সঙ্গে মিশে ক্যানসার, কিডনি, বিকলাঙ্গতা, বন্ধ্যাত্ব, অকালেগর্ভপাতসহ নানা মরণব্যধির কারণ হতে পারে। অনুষ্ঠানে এসডোর চেয়ারপার্সন এবং সাবেক সচিব সৈয়দ মার্গুব মোর্শেদ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ^বিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের সাবেক চেয়ারপার্সন ও অধ্যাপক ড. মো. আবুল হাসেম, এসডোর মহাসচিব ড. শাহারিয়ার হোসেন, সাবেক অতিরিক্ত আইজি মোখলেসুর রহমান, এসডোর গবেষণা টিমের অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

Share Now
January 2025
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031