জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস আজ । এ বছরও বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে দেশে দিবসটি পালন করা হবে। আজ থেকে ২৫ বছর আগের এই দিনে বান্দরবানে শুটিংয়ে থাকা স্বামী ইলিয়াস কাঞ্চনের কাছে যাওয়ার পথে চট্টগ্রামের অদূরে চন্দনাইশে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হন জাহানারা কাঞ্চন। সেই থেকে নিরাপদ সড়কের জন্য আন্দোলন করে আসছেন চিত্রনায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন। ‘পথ যেন হয় শান্তি, মৃত্যুর নয়’ এই স্লোগান নিয়ে গড়ে তুলেন সামাজিক সংগঠন-নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা)।
গত ২০১৭ সালের ৫ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে ২২ অক্টোবর দিনটিকে জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস ঘোষণা করা হয়। বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে দিবসটি পালিত হবে। এর মধ্যে রয়েছে ক্রোড়পত্র প্রকাশ, আলোচনা সভা, র্যালি ও সড়ক সচেতনতা কার্যক্রম। ‘জীবনের আগে জীবিকা নয়, সড়ক দুর্ঘটনা আর নয়’-এ প্রতিপাদ্য নিয়ে তৃতীয় বারের মতো দিবসটি পালিত হতে যাচ্ছে। এ উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাণী দিয়েছেন। গণসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে বিটিভিসহ বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ে আলোচনা ও বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচারের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। চট্টগ্রামেও দিবসটি উপলক্ষে কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। সরকারি কর্মসূচির পাশাপাশি নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) চট্টগ্রাম মহানগর কমিটি নানা কর্মসূচি পালন করছে।
আজ বেলা ১১টায় চট্টগ্রাম ওয়াসা মোড়ে রোটারি ক্লাব অব চিটাগাংয়ের সহযোগিতায় মোটর সাইকেল চালক ও আরোহীদের হেলমেট প্রদান করা হবে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন সিএমপি কমিশনার মো. মাহাবুবর রহমান। দুপুর ১২টায় আগ্রাবাদ সিডিএ আবাসিক এলাকার আগ্রাবাদ বালিকা বিদ্যালয় মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হবে শিক্ষার্থী সমাবেশ। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন সংসদ সদস্য এম এ লতিফ। অনুষ্ঠানে নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) মহানগর কমিটির সদস্যসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে যথাসময়ে উপস্থিত থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন সভাপতি এস এম আবু তৈয়ব ও সাধারণ সম্পাদক শফিক আহমেদ সাজীব।
বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির তথ্যমতে, গত ২০১৫ সাল থেকে সংবাদপত্রে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী এই ৪ বছরে ২১ হাজার ৩৮৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় ২৯ হাজার ৩১৫ জন নিহত এবং ৬৯ হাজার ৪২৮ জন আহত হয়েছেন। তবে সংঘটিত দুর্ঘটনার সিংহভাগই সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয় না। এরমধ্যে ২০১৫ সালে ৬ হাজার ৫৮১টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৮ হাজার ৬৪২ জন নিহত এবং ২১ হাজার ৮৫৫ জন আহত হন। এছাড়া ২০১৬ সালে ৪ হাজার ৩১২টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৬ হাজার ৫৫ জন নিহত এবং ১৫ হাজার ৯১৪ জন আহত হন। ২০১৭ সালে ৪ হাজার ৯৭৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৭ হাজার ৩৯৭ জন নিহত এবং ১৬ হাজার ১৯৩ জন আহত হয়েছেন। ২০১৮ সালে ৫ হাজার ৫১৪টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৭ হাজার ২২১ জন নিহত এবং ১৫ হাজার ৪৬৬ জন আহত হয়েছেন। বিগত ৪ বছরে সংঘটিত সড়ক দুর্ঘটনায় সর্বমোট ৩১ হাজার ৯৪টি যানবাহন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এরমধ্যে ২১ দশমিক ৩৩ শতাংশ বাস, ২১ দশমিক ১৮ শতাংশ ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান, ৬ দশমিক ৮৭ শতাংশ কার-জিপ-মাইক্রোবাস, ১৪ দশমিক ২৫ শতাংশ অটোরিঙা, ১৮ দশমিক ৩৩ শতাংশ মোটরসাইকেল, ৯ দশমিক ১৮ শতাংশ ব্যাটারি চালিত রিঙা, ৮ দশমিক ৮৩ শতাংশ নছিমন করিমন ও ট্রাক্টর সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়ে।