মহানগরীতে দিনভর দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা পূর্ব ঘোষণা ছাড়াই পরিবহন মালিকদের ধর্মঘটে । গতকাল সোমবার সকাল থেকে নগরীতে বাস-মিনিবাস না চালানোর কারণে নগরীর বিভিন্ন রুটে চলাচলকারী যাত্রীরা বিপাকে পড়ে। তবে পরিবহন মালিকদের সংগঠন থেকে বলা হচ্ছে, সাংগঠনিকভাবে তারা এ ধর্মঘট ডাকেননি। পরিবহন সংশ্লিষ্ট মালিকরা গাড়ি চালানো বন্ধ রেখেছেন। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, এ ধরনের ধর্মঘট অনাকাঙ্ক্ষিত। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের ধর্মঘট থেকে সরে আসার আহবানও জানানো হয়েছে। এদিকে গতকাল সোমবার রাত ১০টায় চট্টগ্রাম জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপের মহাসচিব গোলাম রসুল বাবুল বলেন, আমরা সন্ধ্যার পর মোটেল সৈকতে নগরীর পরিবহন মালিক নেতাদের নিয়ে বৈঠক করেছি। আমরা মালিকদের শান্ত থাকার পরামর্শ দিয়েছি। সভায় সর্বসম্মতিক্রমে আগামীকাল (আজ মঙ্গলবার) দণ্ডপ্রাপ্ত বাস মালিকের জামিন হওয়ার পর ধর্মঘট প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। জামিন না হলে ধর্মঘট চলমান থাকবে বলে তিনি জানান।
এদিকে অঘোষিত ধর্মঘটের কারণে সকাল থেকে রাস্তায় বাস-মিনিবাস না থাকলেও সিএনজি অটোরিকশা, টেম্পু ও অ্যাপসভিত্তিক বাইকে চড়ে গন্তব্যে গেছেন যাত্রীরা। তবে বয়ষ্ক, শিশু ও নারীদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে বেশি। অনেকে পায়ে হেঁটে গন্তব্যে গিয়েছেন। কোনো পূর্বঘোষণা ছাড়াই গণপরিবহন বন্ধ থাকায় সোমবার সকালে ঘর থেকে বের হয়েই লোকজন বিপত্তিতে পড়েন। বিশেষ করে অফিসগামী মানুষ এবং শিক্ষার্থীরা ভোগান্তিতে পড়েন সবচেয়ে বেশি। সকালের ন্যায় বিকেলে অফিস ছুটির সময়েও লোকজন ভোগান্তিতে পড়ে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ছোট যানবাহন হিসেবে টেম্পুগুলোতে ধস্তাধস্তি করে চড়তে হয়েছে যাত্রীদের।
পরিবহন ধর্মঘটের পাশাপাশি দুপুরে আগ্রাবাদ মোড়ে ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা আগ্রাবাদ মোড়ে হঠাৎ সমাবেশ পালন করার কারণে প্রায় দেড় থেকে দুই ঘন্টা তীব্র যানজট তৈরি হয় আগ্রাবাদ বারিক বিল্ডিং, চৌমুহনী হয়ে দেওয়ান হাট পর্যন্ত।
সিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) মোস্তাক আহমেদ বলেছেন, ‘ধর্মঘট প্রত্যাহারের বিষয়ে আমরা পুলিশের পক্ষ থেকে পরিবহন মালিক-শ্রমিক নেতাদের সাথে কথা বলেছি। আমাদের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষও এ বিষয়ে কথা বলেছেন। মালিক-শ্রমিকরা আমাদের এ বিষয়ে রাতেই(গতকাল) জানাবেন বলেছেন। তবে আমরা চাই দ্রুত এ ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হোক।’
প্রসঙ্গত, গত রবিবার দুপুরে চান্দগাঁও থানার সামনে মাঝপথে যাত্রী নামিয়ে দিয়ে ঘুরিয়ে দেয় ১০নং রুটের একটি বাস। পরে বাসটি আটক করে বিআরটিএর ভ্রাম্যমান আদালত। এসময় আদালত দেখতে পান বাসটির পেছনে গ্লাসটি ভাঙা। এসময় যাত্রীরা ফিটনেসবিহীন বাস রাস্তায় নামার বিষয়ে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এসময় ভ্রাম্যমান আদালত বাসটির মালিককে ডেকে আনে। পরে চালক হেলপার ও মালিককে কারাদণ্ড দেন ভ্রাম্যমান আদালত।
চালক-মালিককে কারাদণ্ড দেওয়া অযৌক্তিক : বাসের মালিক ও চালককে কারাদণ্ড দেওয়া অযৌক্তিক দাবি করেছেন চট্টগ্রাম জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপ। গতকাল সোমবার দুপুরে সংগঠনের আন্দরকিল্লাস্থ প্রধান কার্যালয়ে মালিক গ্রুপের সভাপতি মঞ্জুরুল আলম মনজুর সভাপতিত্বে ও মহাসচিব গোলাম রসুল বাবুলের সঞ্চালনায় আয়োজিত সভায় বক্তব্য রাখেন, কার্যকরী সভাপতি জহুর আহমেদ, সহ-সভাপতি আহসান উল্লাহ চৌধুরী, মাহবুবুল হক মিয়া, মো. ইসলাম, মো. জাফর চৌধুরী, ওহিদুর নুর কাদেরী, হাবিবুর রহমান, সহিদুল ইসলাম, সিরাজদৌল্লাহ নিপু, শহীদ নাইম সুমন, মোবারক হোসেন, আবদুর রহমান, পারভেজ প্রমুখ।
সভায় বক্তারা বলেন, চট্টগ্রাম বিভাগে গণ ও পণ্য পরিবহনকে মামলার নামে হয়রানি করা হচ্ছে। তার উপর অতি সম্প্রতি বিআরটিএর ম্যাজিস্ট্রেট সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে মোটর ভেহিক্যাল অধ্যাদেশ অনুসরণ না করে চালক-মালিকদের গণহারে কারাদণ্ড দিয়ে চলেছেন। গণপরিবহনে শৃংখলা ফেরাতে সিএমপির ট্রাফিক বিভাগের সাথে একাত্ম হয়ে কাজ করছে জেলা সড়ক পরিবহন মালিক গ্রুপ। কিন্তু চট্টগ্রামের শান্ত পরিস্থিতিকে অস্থির করার জন্য ২০ অক্টোবর দুপুরে একজন গাড়ির মালিককে ডেকে এনে কারাদণ্ড দেওয়ার বিষয়টি কোনভাবেই কাম্য নয়। যে কারণে মহানগরীর বাস মালিকরা নিজেরাই তাদের বাস চালানো বন্ধ রেখেছেন।’
M | T | W | T | F | S | S |
---|---|---|---|---|---|---|
1 | 2 | 3 | 4 | 5 | ||
6 | 7 | 8 | 9 | 10 | 11 | 12 |
13 | 14 | 15 | 16 | 17 | 18 | 19 |
20 | 21 | 22 | 23 | 24 | 25 | 26 |
27 | 28 | 29 | 30 | 31 |