ভারত ও পাকিস্তান উভয়েই পারমাণবিক শক্তিধর রাষ্ট্র। ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করবে না পাকিস্তান। এই দুই দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা বিশ্বশান্তিকে হুমকিতে ফেলতে পারে। এসব সতর্কবাণী উচ্চারণ করেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। গভর্নর হাউজে তিন দিনের ইন্টারন্যাশনাল শিখ কনভেনশনের সমাপনী অনুষ্ঠানে সোমবার তিনি বক্তব্য রাখছিলেন। এ সময় ইমরান খান বলেন, ভারত ও পাকিস্তান বসে আছে একটি ‘টিকিং’ বোমার উপর। যুদ্ধ নিয়ে কথা বলার চেয়ে দারিদ্র্য, কর্মহীনতা ও জলবায়ু পরিবর্তনের অত্যাসন্ন ঝুঁকির মতো ভয়াবহ সব ইস্যুতে অভিন্ন কৌশল বের করা নিয়ে আলোচনার করা উচিত। এ খবর দিয়েছে অনলাইন ডন।

ইমরান খান বলেন, প্রধানমন্ত্রী পদে আসার পর পরই আমি ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এক্ষেত্রে ভারত যদি এক পা সামনে আগায় তাহলে আমরা দুই পা সামনে এগুনোর কথা বলেছি। কথা বলেছি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে এবং তাকে পরামর্শ দিয়েছি ৭২ বছর ধরে চলমান কাশ্মীর সঙ্কট সমাধান করা যেতে পারে আলোচনার মাধ্যমে। কিন্তু কোনো সাড়া পাওয়া যায় নি। ইমরান খান তার বক্তব্যে বলেন, গত এক বছরে যেসব ঘটনা ঘটেছে তাতে দেখা যায় বিভিন্ন অবস্থায় ভারত এমন ভাব দেখাচ্ছে যে, তারা একটি সুপার পাওয়ার এবং তারা কথা বলছে একটি দরিদ্র দেশের সঙ্গে। ইমরান খান বলেন, যুদ্ধ কোনো সমস্যারই সমাধান দিতে পারে না। যারা এটা মনে করেন তারা বোকা। যুদ্ধ আরো সঙ্কট ও সমস্যার সৃষ্টি করে বলে তিনি সতর্ক করেন। যারা সুযোগ হিসেবে যুদ্ধকে বেছে নেয় তারা সামনের অনেক বছর অনুতপ্ত হবে।

ভারতে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) মুসলিমদের হত্যা ও তাদের প্রতি অমানবিক আচরণের নিন্দা জানান পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, বিশ্বে এমন কোনো ধর্ম নেই, যা নারী ও শিশু সহ নিরপরাধ মানুষের বিরুদ্ধে অন্যায় ও বর্বরতা অনুমোদন করে। সর্বগ্রাসী ও সাম্প্রদায়িক আদর্শের মাধ্যমে ভারতকে আরএসএস এমন একটি অবস্থানে নিয়ে যাচ্ছে, যেখান থেকে ফিরে আসার কোনো পথ থাকবে না। দখলীকৃত জম্মু ও কাশ্মীরে ২৮ দিনব্যাপী কারফিউয়ের কড়া নিন্দা জানান ইমরান খান। কারণ, এর ফলে সেখানকার ৮০ লাখ মানুষ তাদের ঘরে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন। তাদের কাছে খাদ্য, ওষুধ নেই। তাই দখলীকৃত কাশ্মীর ও ভারতে মুসলিমদের বিরুদ্ধে নিষ্পেষণ বন্ধের জন্য ভারতকে আয়ত্তে আনার জন্য চেষ্টা করছে পাকিস্তান। তিনি এ সময় ভারতে ও কাশ্মীরে মুসলিম সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে যে নিষ্পেষণ ও নির্যাতন চলছে তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে শিখ সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান। কর্তারপুর করিডোর ও নানক শাহিবের মতো পবিত্র স্থান সফর করতে শিখদের প্রতি স্বাগত জানান পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, শিখ সম্প্রদায়কে পূর্ণাঙ্গ সহযোগিতা দেবে পাকিস্তান সরকার। এ ছাড়া তাদেরকে দেয়া হবে মাল্টিপল ভিসা।

এ সময় বক্তব্য রাখেন পাঞ্জাবের গভর্নর চৌধুরী সারওয়ার। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী এক পাকিস্তান সৃষ্টির প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, যেখানে সংখ্যালঘুরাও পাবেন সমান অধিকার। তিনি জানান, কর্তারপুর করিডোর প্রকল্পের কাজের শতকরা ৯০ ভাগ শেষ হয়েছে। নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে তা খুলে দেয়া হতে পারে।

Share Now
January 2025
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031