কংগ্রেস নেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী আসামে নাগরিকপঞ্জীর চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ ও দিল্লিতে নাগরিকপঞ্জী করার ঘোষণায় ক্ষিপ্ত । ৩১শে আগস্ট আসামে নাগরিকপঞ্জী বা এনআরসি প্রকাশের পর এক প্রতিক্রিয়ায় দিল্লি বিজেপির প্রধান মনোজ তিওয়ারি দিল্লিতেও নাগরিকপঞ্জী করার আহ্বান জানান। এর জবাবে ক্ষিপ্ত হয়ে অধীর রঞ্জন চৌধুরী বলেছেন, আমার পিতা বাংলাদেশে বসবাস করতেন। তাহলে তো আমিও বহিরাগত। তারা যদি এভাবে নাগরিকপঞ্জী করতে চান তাহলে তো পার্লামেন্টেও তা করা উচিত। এ খবর দিয়েছে অনলাইন ডিএনএ।
দিল্লিতে কংগ্রেস নেতা অধীর রঞ্জন বলেছেন, কোনো পক্ষপাতিত্ব ছাড়া এনআরসি বা নাগরিকপঞ্জী করা উচিত সরকারের। এক্ষেত্রে খেয়াল রাখা উচিত, কোনো খাঁটি নাগরিক যেন ওই তালিকা থেকে বাদ না পড়েন। ৩১শে আগস্ট প্রকাশিত আসামের চূড়ান্ত নাগরিকপঞ্জীতে মোট বৈধ নাগরিক দেখানো হয়েছে ৩ কোটি ১১ লাখ ২১ হাজার ৪ জনকে। আর এর বাইরে রয়েছেন ১৯ লাখ ৬ হাজার ৬৫৭ জনকে।
এদের এখন ‘বিদেশি’ হিসেবে দেখা হচ্ছে। শনিবার এ তালিকা প্রকাশের পর দিল্লিতে ১০ জনপথে কংগ্রেসের সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন অধীর রঞ্জন চৌধুরী। এরপর তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি বলেন, আসামে এনআরসি যথাযথভাবে সম্পন্ন করতে ব্যর্থ হয়েছে সরকার। এ সময় তিনি বিজেপির এমপি মনোজ তিওয়ারির করা মন্তব্যেরও জবাব দেন। শনিবার মনোজ তিওয়ারি বলেন, দিল্লিতেও এনআরসি বা নাগরিকপঞ্জি করা উচিত। কারণ, সেখানে অবৈধ অভিবাসীরা ভয়ানক হয়ে উঠেছে। দিল্লিতে নির্বাচনকে সামনে রেখে মনোজ তিওয়ারি বলেন, দিল্লিতে এনআরসির মতো ঘটনা হবে দলের নির্বাচনী মেনিফেস্টো।
তার এসব
বক্তব্যের জবাব দিয়েছেন অধীর রঞ্জন চৌধুরী। তিনি লোকসভায় কংগ্রেস দলের
নেতাও। মনোজ তিওয়ারিকে লক্ষ্য করে তিনি বলেছেন, দেশের মালিক তারা। তারা
যেখানে চাইবেন সেখানেই নাগরিকপঞ্জী বা এনআরসি করতে পারেন। তারা তো আসামেই
এনআরসি ঠিকমতো করতে সক্ষম হননি। আর তারা অন্য রাজ্যগুলোতে যেতে চাইছেন।
পার্লামেন্টেও তাদের এনআরসি করা উচিত। তিনি আরো বলেন, আমার পিতা তো
বাংলাদেশে বসবাস করেছেন। তাহলে আমিও বহিরাগত। আমাকেও বের করে দিন।
এর
আগে এনআরসি ইস্যুতে কংগ্রেসের অন্তর্বর্তী সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীর সঙ্গে
তার বাসভবনে বৈঠক করেন কংগ্রেসের সিনিয়র নেতারা। এতে উপস্থিত ছিলেন একে
অ্যান্থনি, গৌরব গগৈ, গুলাম নবী আজাদ ও সিনিয়র নেতারা। বৈঠকের পরে অধীর
রঞ্জন চৌধুরী বলেছেন, যেকোনো অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে কোনোও প্রকৃত নাগরিককে
তালিকার বাইরে রাখা উচিত হবে না। সব প্রকৃত নাগরিককে সুরক্ষা দিতেই হবে।