রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে নৃশংসতার জন্য দায়ী সেনা কর্মকর্তাদের শাস্তি দেবে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী । রাখাইনে নতুন করে তদন্ত করার পর জড়িত সেনা সদস্যদের বিরুদ্ধে কোর্ট মার্শাল বা সামরিক আদালতে বিচার করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইং। শনিবার তার নিজস্ব ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, সামরিক আদালতের কর্মকর্তারা ওই রাজ্যের উত্তরাঞ্চল সফরে গিয়েছিলেন। তারা দেখতে পেয়েছেন, সেনাদেরকে যে নির্দেশনা দেয়া হয়েছিল তারা একটি গ্রামে সেই নির্দেশনার প্রতি দুর্বলতা দেখিয়েছে। ওই গ্রামে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে গণহত্যা হয়েছিল বলে বলা হয়। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

২০১৮ সালে বার্তা সংস্থা এপি খবর প্রকাশ করে যে, বুথিডাং শহরের গুতারপিন গ্রামে রোহিঙ্গাদের কমপক্ষে ৫টি গণকবরের অস্তিত্ব আছে। কিন্তু তখন সরকারি কর্মকর্তারা বলেন যে, সেখানে ১৯ জন ‘জঙ্গি’ নিহত হয়েছে। তাদের মৃতদেহ সতর্কতার সঙ্গে সেখানে কবর দেয়া হয়েছে।

তবে সর্বশেষ তদন্তের বিষয়ে রোববার সামরিক মুখপাত্র তুন তুন নাইই বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, তদন্তে যা পাওয়া গেছে তা গোপনীয়। এ বিষয়টি তার জানার অধিকার নেই বলে জানান তিনি। যখন তদন্ত প্রক্রিয়া শেষ হয়ে যাবে তখন এ সংক্রান্ত আরেকটি বিবৃতি দেয়া হবে।

নিরাপত্তা রক্ষাকারীদের হাতে ব্যাপকহারে গণহত্যা, ধর্ষণ ও অগ্নিসংযোগের বিষয়ে গত মার্চে মিয়ানমার একটি সামরিক আদালত গঠন করে। এতে রয়েছেন একজন মেজর জেনারেল ও দু’জন কর্নেল। এই আদালত জুলাই ও আগস্টে দু’বার রাখাইন সফর করেছে। বাংলাদেশ সীমান্তের কাছে নিরাপত্তা চৌকিতে রোহিঙ্গা উগ্রপন্থিদের হামলার পর সেনাবাহিনী রাখাইনে নৃশংসতা শুরু করে। ২০১৭ সালের আগস্ট থেকে সেখানে ভয়াবহ এক তা-বলীলা চালায় সেনারা। এর ফলে কমপক্ষে ৭ লাখ ৪০ হাজার রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়। সেনাবাহিনীর ওই অভিযানকে জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন গণহত্যার উদ্দেশে অভিযান বলে আখ্যায়িত করে এবং মিয়ানমারের সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইয় ও শীর্ষ স্থানীয় অন্য ৫ জন জেনারেলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে ভয়াবহ অপরাধের অভিযোগ আনার সুপারিশ করে।

তবে মিয়ানমার এসব অভিযোগকে বরাবরই অস্বীকার করে এসেছে। যদিও সেনা প্রধান মিন অং হ্লাইং গত মাসে বলেছেন, নিরাপত্তা রক্ষাকারীদের কিছু সংখ্যক ওইসব ঘটনায় জড়িত থাকতে পারে। এর আগে ২০১৭ সালে সেনাবাহিনী তদন্ত করে। সেই তদন্তে বলা হয়, সেনাবাহিনী কোনো অপরাধই করেনি। কিন্তু রাখাইনে নৃশংসতার জন্য স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার জন্য মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক চাপ বাড়তেই থাকে। এর মধ্যে সহিংসতার প্রাথমিক যাচাই বাছাই অনুমোদন করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)।

Share Now
January 2025
M T W T F S S
 12345
6789101112
13141516171819
20212223242526
2728293031