আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করা হয়েছে বরগুনার আলোচিত রিফাত শরীফ হত্যা মামলায় । রোববার বিকালে বরগুনার জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির। চার্জশিটে এক নম্বর আসামি করা হয়েছে রিফাত ফরাজি ও ৭ নম্বর আসামী হলো আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নি। বরগুনা জেলা পুলিশের বিশেষ শাখা থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, রিফাত শরীফ হত্যাকাণ্ডের পর পুলিশ নিরবচ্ছিন্নভাবে গভীর তদন্ত শেষে ২৪ জনের বিরুদ্ধে পেনাল কোডের ৩০২/৩৪/২১২/১০৯/১১৪/১২০-বি (১) ধারায় বরগুনা সদর থানার অভিযোগপত্র ২৮০ (১) আদালতে দাখিল করা হয়েছে। মামলার ১ নম্বর আসামি নয়ন বন্ড বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ায় তাকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
তবে চার্জশিট ও আসামিদের বিষয়ে আর কোনো তথ্য দিতে রাজি হয়নি পুলিশ। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবিরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি চার্জশিটের ব্যাপারে মন্তব্য করতে রাজি হননি।
গত ২৬শে জুন বেলা সাড়ে ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে রিফাত শরীফকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। হত্যাকাণ্ডের ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হলে দেশে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়।
এ ঘটনায় ২৭শে জুন রিফাতের বাবা আবদুল হালিম শরীফ বাদী হয়ে ১২ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন। তাতে প্রধান সাক্ষী করা হয় রিফাত শরীফের স্ত্রী আয়েশা সিদ্দিকা মিন্নিকে।
কিন্তু মিন্নির শ্বশুর মামলার ১৮ দিন পর গত ১৩ই জুলাই সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন, এ হত্যাকাণ্ডে মিন্নি জড়িত। এরপর মামলাটির তদন্ত নাটকীয় মোড় নেয়। পরে এ মামলায় গ্রেপ্তার করা হয় মিন্নিকে। এ মামলায় এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার হওয়া সবাই আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। গত ২রা জুলাই এ মামলার প্রধান আসামি সাব্বির আহম্মেদ ওরফে নয়ন বন্ড পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন।
উল্লেখ্য, ২৬শে জুন সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরগুনা সরকারি কলেজের সামনে সন্ত্রাসীরা প্রকাশ্যে রামদা দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে রিফাত শরীফকে। তার স্ত্রী আয়েশা আক্তার মিন্নি হামলাকারীদের সঙ্গে লড়াই করেও তাদের দমাতে পারেননি। একাধারে রিফাতকে কুপিয়ে বীরদর্পে অস্ত্র উঁচিয়ে এলাকা ত্যাগ করে হামলাকারীরা। তারা চেহারা লুকানোরও কোনো চেষ্টা করেনি। গুরুতর আহত রিফাতকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে বিকালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।