চট্টগ্রাম ৫ জুন :এসপির স্ত্রীকে ৪০ সেকেন্ডেরও কম সময়ে খুন করা হয় পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতুকে। ঘটনাস্থল থেকে সংগ্রহ করা সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ দেখে চট্টগ্রাম নগর পুলিশের উপকমিশনার (উত্তর) পরিতোষ ঘোষ এমনটাই জানালেন।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে পেশাদার খুনীরাই মিতুকে হত্যা করেছে। কারণ ভিডিও ফুটেজে দেখা যাচ্ছে খুব অল্প সময়ে এ হত্যাকাণ্ড হয়েছে। পেশাদার লোক না হলে এতো কম সময়ে অপারেশন শেষ করা সম্ভব হতো না। তাই এটাকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে ঘটনা তদন্ত করা হচ্ছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আজ রবিবার সকাল সাড়ে ৭ টা। চট্টগ্রাম নগরের পাঁচলাইশ থানার ব্যস্ততম জিইসি মোড় সংলগ্ন ওয়েল ফুড নামে মিষ্টির দোকানের সামনের রাস্তা। সড়কের গোল পাহাড়ের দিক থেকে ছেলেকে স্কুল গাড়িতে তুলে দিতে জিইসি মোড় আসছিলেন পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম। আর মোটরসাইকেল করে তিন যুবক জিইসি মোড় থেকে গিয়ে তাঁর সামনে হাজির। মোটরসাইকেলে থাকা তিন যুবকের মধ্যে এক যুবক তাঁকে প্রথমে ছুরিকাঘাত করে আরেক যুবক গুলি করে চলে যায়। সময় নেয় ৪০ সেকেন্ডের মতো।
পরিতোষ ঘোষ আজ দুপুরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গের সামনে ঢাকাটাইমসকে বলেন, হত্যার ধরন দেখে প্রাথমিকভাবে নিশ্চিত হওয়া গেছে এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। তারা আগে থেকেই ঘটনাস্থল রেকি করেছিলেন। ঘটনাস্থল থেকে ১০০ গজ দূরে বাসা থেকে বের হয়ে ছেলেকে স্কুল বাসে তুলে দিতে কখন আসবে নিশ্চয় দুর্বৃত্তরা আগে থেকে খোঁজখবর রাখছিলেন। পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের স্ত্রী তার ছেলে মাহমুদ আকতার মাহিরকে নিয়ে জিইসি মোড় পৌঁছার আগেই ওয়েল ফুড নামক দোকানের সামনে মোটরসাইকেলে করে তিন আরোহী আসেন। যিনি গাড়ি চালাচ্ছিলেন তার মাথায় হেলমেট ছিল। বয়স আনুমানিক ৩০-৩৫। তার পেছনে দুজন বসা ছিল। মাঝখানে বসা যুবকের হাতে ছুরি ছিল। পেছনে বসা তৃতীয় জনের হাতে একটি পিস্তল ছিল।
পরিতোষ ঘোষ আরও বলেন, মোটরসাইকেলে থাকা তিন যুবক প্রথমে মাহমুদা খানমকে মোটরসাইকেল দিয়ে ধাক্কা দেয়। কিছু বুঝে ওঠার আগেই মাঝখানে থাকা যুবক প্রথমে তাঁর বুকে, হাতে ও পিঠে উপর্যুপরি ছুরিকাঘাত করে। তৃতীয়জন তার হাতে থাকা পিস্তল দিয়ে খুব কাছ থেকে গুলি করে। প্রথম ফায়ারটি মিস হয়। দ্বিতীয় ফায়ারে বাবুল আক্তারের স্ত্রীর কপালের বা পাশে গিয়ে লাগে। সবকিছু করতে ৪০-৪৫ সেকেন্ড সময় লাগে।
পরিতোষ ঘোষ জানান, ভিডিও ফুটেজ থেকে পাওয়া তিন যুবকের চেহারা স্পষ্টভাবে বোঝা যাচ্ছে না। প্রথমজনের মাথায় হেলমেট থাকায় চেহারা বোঝা যাচ্ছে না। তারপরও তাদের খোঁজা হচ্ছে।