সামাজিক, অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত ঝুঁকি আছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্ন্তজাতিক সর্ম্পক বিভাগের অধ্যাপক ড. দেলোয়ার হোসেন বলেছেন, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া বিলম্বিত হওয়ায় বাংলাদেশে বহুমাত্রিক ঝুঁকি বাড়ছে।
তিনি বলেন, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, রোহিঙ্গারা দীর্ঘ সময় ধরে থাকার ফলে এখানে কোন অস্থিতিশীল পরিবেশের তৈরি হয় কি-না। বিশেষ করে এখন রোহিঙ্গাদের বিভিন্ন ধরণের অপরাধ এবং জঙ্গীবাদি তৎপরতার সঙ্গে যুক্ত করার সম্ভাবনা থেকে যায়। সে কারণে পুরো অঞ্চলটাই নিরাপত্তা ঝুঁকির মধ্যে পড়ে যাবে। এখানে শুধু বাংলাদেশ নয় ভারত, চীন ও মিয়ানমার পুরো অঞ্চলটাই ঝুঁকির মধ্যে পড়বে বলে মনে করেন তিনি।
এই অধ্যাপক বলেন, বাংলাদেশে এখন ১২ লক্ষ রোহিঙ্গা রয়েছে। প্রতিবছর প্রায় ১ লক্ষ নতুন রোহিঙ্গা যোগ হচ্ছে। কয়েক বছরের মধ্যে এদেশে রোহিঙ্গাদের সংখ্যা বিশ লাখ ছাড়িয়ে যাব
এই বিপুল জনগোষ্ঠীর কার্যক্রম অবশ্যই ঝুঁকির মধ্যে ফেলবে। স্থানীয় জনগণ যেমন ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে, তেমন পুরো দেশে চাপের মধ্যে পড়ছে। রোহিঙ্গাদের বিষয়ে এতদিন মানবিক বিষয়টিকে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। এখনও মানবিক বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু ঝুঁকিগুলোও বাস্তব।
নিরাপত্তা ঝুঁকি নিয়ে
শঙ্কা রয়েছে জানিয়ে অধ্যাপক ড. দেলোয়ার হোসেন বলেন, রোহিঙ্গারা নাগরিকত্ব
ছাড়া মিয়ানমারে ফিরে যেতে চাইছে না। মিয়ারনমার তো রোহিঙ্গাদের এমনিতেই ফেরত
নিতে ইচ্ছুক না। আর মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্বের চাপতো নিবেই
না। এই পরিস্থিতিটা পুরো অঞ্চলের জন্যই বিপদজনক। বাংলাদেশের অসহযোগীতায়
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া ব্যর্থ হয়েছে- মিয়ানমারের এমন বক্তব্যকে
প্রপাগান্ডার অংশ বলে উল্লেখ করেন অধ্যাপক দেলোয়ার।
ড. দেলোয়ার
হোসেন বলেন, এটি মিয়ানমারের একটি পুরোন কৌশল। মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের ওপর যে
ধরনের অত্যাচার ও হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে, তারপর যদি বলে বাংলদেশের অসহযোগীতায়
তারা রোহিঙ্গাদের নিতে পারছে না- এটা খুবই হাস্যকর অভিযোগ। মিয়ানমার
বিশ্বকে দেখাতে চায় যে, রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে তারা আন্তরিক। কিন্তু বিশ্ব
ভালোভাবেই জানে, তারা আসলে কতটা আন্তরিক। এটা মিয়ানমারের একটা কূটনৈতিক
চাল। বাংলাদেশের এখন রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠাতে বহুমাত্রিক কূটনৈতিক প্রয়াস
চালাতে হবে। পশ্চিমাদের সর্মথন আদায় এবং ভারত ও চীনকে সঙ্গে নিয়ে
মিয়ানমারকে আরও চাপের মধ্যে রাখতে হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।